১১ বছরে ২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক জালিয়াতি

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

জনসাধারণ তাদের  অর্জিত অর্থ তিল তিল করে সঞ্চয়  করে রাখেন ব্যাঙ্কে৷ আর এক শ্রেণীর  পূঁজিপতি একের পর  এক ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করে গরীব-মধ্যবিত্তের  সেই  সঞ্চিত ধন আত্মসাৎ করেন৷ লোকসভা নির্বাচনের  পূর্বেই বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, মেহুল চোক্সিদের  ব্যাঙ্ক  জালিয়াতির  খবর প্রকাশিত হয়েছিল৷ নির্বাচন পর্ব মিটে  যাওয়ার  পর ব্যাঙ্ক  জালিয়াতি নিয়ে আরও  বিস্তারিত  ও ভীষণ চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে৷

গত ১২ই জুন  রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়েছে, ২০০৮-০৯ সাল থেকে  ২০১৮-১৯ এই ১১ অর্থবর্ষে এদেশে  মোট ব্যাঙ্ক  জালিয়াতির  সংখ্যা ৫৩ হাজার ৩৩৪৷ আর এতে ব্যাঙ্ক থেকে জালিয়াতি মারফৎ উধাও হয়েছে  ২.০৫ লক্ষ কোটি  টাকা৷  খোয়া যাওয়া টাকার বিচারে সবচেয়ে বেশি  ক্ষতি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি জানা গেছে, গত আর্থিক বছরে মোট ৬,৮০১ টি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল৷ এতে বাণিজ্যিক  ব্যাঙ্ক ও আর্থিক  প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে  জালিয়াতি হয়েছে ৭১ হাজার ৫৪২ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা৷

গত ১২ই জুন  রিজার্ভ ব্যাঙ্ক  যে জালিয়াতির  তথ্য প্রকাশ  করেছে  তাতে দেখা গেছে, ২০০৮-০৯ সাল থেকে  ২০১১-১২ সাল পর্যন্ত  জালিয়াতির দরুণ উধাও হয়েছে ৪ হাজার ৫০১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা৷ ২০১৩-১৪ সালে  খোয়া গিয়েছিল ১০ হাজার ,১৭০ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা৷  কেন্দ্রে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর  ২০১৪-১৫ সালে  জালিয়াতির অংকটা এক লাফে  পৌঁছে  যায়  ১৯ হাজার ৪৫৫ কোটি ৭ লক্ষ টাকায়৷

২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ সালে জালিয়াতির পরিমাণ যথাক্রমে  ১৮ হাজার ৬৯৮ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা ও ২৩ হাজার  ৯৩৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা৷  ২০১৭-১৮ সালে  ব্যাঙ্ক  জালয়াতিতে উধাও হওয়া টাকার পরিমাণ আগের সব হিসেবকে ছাপিয়ে  পৌঁছে  যায় ৪২ হাজার ১৬৭ কোটি ৩ লক্ষ টাকায়৷

এক গরীব বা মধ্যবিত্ত চাষী ঋণের  টাকা  ঠিক সময়ে শোধ করতে না পারলে  তাকে  নানানভাবে হেনস্থার  সম্মুখীন  হতে হয়, তাদের পুরোনো ঋণ শোধ না করলে  নূতন ঋণ দেওয়াও  হয় না৷ তদুপরি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়৷  কিন্তু  এই সমস্ত  পূঁজিপতিদের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বার বার  পুরোনো  ঋণ শোধ না হলেও  নূতন করে ঋণ দিয়ে যান৷ এইভাবে  বিশাল  অংকের  টাকা ঋণ নিয়ে  আর ঋণশোধের  নামটি করেন না৷ পুরো ঋণটা গায়েব করে দেন৷ অথচ  দু’একটি  ঘটনা  ছাড়া  অধিকাংশ  ক্ষেত্রে  এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা বহাল তবিয়তে  ঘুরে বেড়ায়৷ তাদের  কোনো শাস্তিও হয় না , আবার  তাদের কে দেওয়া ঋণের  টাকা ফেরৎ  নেওয়ার  কোনো সেরকম কড়া  ব্যবস্থা  গ্রহণ করা হয় না৷