সাংস্কৃতিক জগৎ যখন অবক্ষয় আর অশ্লীলতায় তমসাচ্ছন্ন তখন প্রভাত সঙ্গীত এলো সংস্কৃতির জগতে তমসাবৃত নিশীথে আলোর আমেজ নিয়ে৷ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার (আধ্যাত্মিক জগতে যিনি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী নামে পরিচিত) ১৯৮২ সালের ১৪ই সেপ্ঢেম্বর দেওঘরের শান্ত স্নিগ্দ পরিবেশে মনোরম সন্ধ্যায় নোতুন প্রভাতকে আহ্বান জানিয়ে রচনা করলেন---
‘‘বন্ধু হে নিয়ে চলো৷
আলোর ওই ঝর্ণাধারার পাণে৷’’
সেই ধারা প্রবাহিত হলো ১৯৯০ সালের ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত৷ ক্ষয়িষ্ণু তমসাবৃত সংস্কৃতির জগতে নিয়ে এলো বৈপ্লবিক চেতনার বার্তা৷ ভাব - ভাষা - সুর-ছন্দের বৈচিত্র্য নিয়ে সঙ্গীত সম্ভার --- যা পরিচিত হলো প্রভাত সঙ্গীত নামে৷ না, এই সঙ্গীত সম্ভার শ্রীপ্রভাতরঞ্জনের রচনা বলে প্রভাত সঙ্গীত নয়৷ সংস্কৃতির জগত থেকে অন্ধকার সরিয়ে নোতুন আলোর বার্তা নিয়ে এলো যে সঙ্গীত তাই প্রভাত সঙ্গীত৷ প্রভাত সঙ্গীত শুধু সঙ্গীত নয়, আনন্দমার্গ দর্শনের কাব্যিকরূপ প্রভাত সঙ্গীত৷ আধ্যাত্মিক দর্শন, আধ্যাত্মিক অনুশীলন, সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্ব, সমাজশাস্ত্র সবই স্থান পেয়েছে প্রভাত সঙ্গীতের ভাব-ভাষায়৷
১৪ই সেপ্ঢেম্বর প্রভাত সঙ্গীতের শুভ জন্মদিন৷ প্রতিবছর এই দিনটা বিশ্বের প্রতিটি আনন্দমার্গ ইয়ূনিটে পালিত হয় প্রভাতসঙ্গীত দিবস---
এই শুভদিনে আমাদের ভাব প্রভাত সঙ্গীতের ভাষায়---
আজ ভুবন ভরিয়া দাও গানে গানে৷
প্রীতি ছড়িয়ে দাও প্রাণে প্রাণে৷৷
জগতে কেউ নহে পর, আত্মীয়ে ভরা চরাচর৷
সব স্থানে তোর আছে ঘর, সবাই সুরভি আনে৷৷
কেউ কোথা নয় অসহায়, পরমপুরুষ যে সহায়৷
মধু বায়ু বহে’ যায় ত্রিলোকের কোণে কোণে৷৷
কলিকাতা, ১৪/৫/৮৪
(সঙ্গীত সংখ্যা---১৫১২)