৩রা মে

লেখক
মন্ত্র আনন্দ

লোকটা আবার সভাপতি হতে চাইছেন৷ প্রথমবার সভাপতি হয়েই কী সব আবোল-তাবোল বকছে৷ বলে কি না ‘দেশীয় পুঁজিপতিদের সাহায্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারে শক্তি অর্জন করেছে৷ মানুষকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিতে হবে৷’ এমন লোক দলে থাকলে তো ব্যবসা ছেড়ে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে৷ গত এক বছর ধরে চেষ্টা চলছে লোকটাকে দল থেকে তাড়াবার জন্যে৷ আর লোকটা আবার সভাপতি হতে চাইছে৷ এ কী পাগল নাকি!

লোকটা আর কেউ নন৷ যাঁর নামে আজও আট থেকে আশি বছরের প্রতিটি ভারতবাসী আবেগে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে, দেশের স্বাধীনতার জন্যে উৎসর্গীকৃত বীর যোদ্ধা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু৷ ১৯৩৮ সালের পর আবার ১৯৩৯ সাল৷ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর মনোনীত প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হলেন সুভাষচন্দ্র বসু৷

ব্রিটিশ তো বটেই, আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন দেশীয় পুঁজিপতি ও তাদের প্রতিনিধি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী৷ তাদের পয়লা নম্বর শত্রু সুভাষচন্দ্রকে জব্দ করার জন্যে ব্রিটিশকে কিছু করতে হয়নি৷ যা করার করলেন মোহনদাস করমদাস গান্ধী ও তার দলবল৷ সুভাষকে কংগ্রেস ছাড়া করতে শুরু হ’ল কংগ্রেসের কদর্য রাজনীতি৷ সেই কদর্যতা এতই নীচে নেমেছিল যে গান্ধীর অনুগতরা গান্ধীর ক্ষমতা বোঝাতে তাঁকে হিটলার, মুসোলিনী, স্ট্যালিনের সঙ্গে তুলনা করতে দ্বিধাবোধ করেনি৷ নিন্দায় মুখর হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ কংগ্রেসের এই বিক্রিত ব্যভিচারি আচরণ তাঁকে খুবই ব্যাথিত করেছিল৷

গান্ধী অনুগামীরা ত্যাগ করলেন সুভাষচন্দ্রকে৷ হিন্দু মহাসভা ও কংগ্রেসের পথের পথিক হ’ল৷ হওয়াটাই স্বাভাবিক৷ দু’টোই পুঁজিপতিদের দল৷ কিন্তু সোস্যালিষ্ট পাটি, কমিউনিষ্ট পার্টি এরাও সরে গেল সুভাষচন্দ্রের পাশ থেকে৷ হোক না কমিউনিষ্ট৷ তবু জলে বাস করে কুমীরের সঙ্গে লড়াই৷ দেশীয় পুঁজিপতিদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে৷ না, সুভাষ ছাড়া এ পাগলামি আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়৷ লজ্জায় ঘৃণায়, ক্ষোভে কংগ্রেস সভাপতির পদ দু’পায়ে দলে বেরিয়ে এলেন সুভাষচন্দ্র৷

৩রা মে ১৯৩৯ সাল শ্রদ্ধানন্দ পার্কের সভা থেকে সুভাষচন্দ্র ঘোষণা করলেন নতুন দল---‘ফরওয়ার্ডব্লক’৷ নেতা ও দল বিমুখ হলেও, দেশবাসী সুভাষের পাশে৷ আবেগের ঝড় বয়ে গেল কশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা---সুভাষচন্দ্র জিন্দাবাদ, ফরওয়ার্ড ব্লক জিন্দাবাদ’৷ শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে সুভাষচন্দ্র ঘোষণা করলেন---<The Forward Bloc came into existence to fulfill A Historical necessity’.

 

বারাসত কেন্দ্রে ‘আমরা বাঙালী’ প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন

নিজস্ব সংবাদদাতা রারাসত ঃ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বারাসত কেন্দ্রে ‘আমরা বাঙালী’ প্রার্থী দেবাশীষ বিশ্বাস তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিলেন৷ বেশ কিছু কর্মী সমর্থক সঙ্গে নিয়ে শ্রী বিশ্বাস মনোনয়ন পত্র পেশ করতে যান৷

মনোনয়ন পেশ করার পর শ্রী বিশ্বাস বলেন---‘আমরা বাঙালী’র প্রথম কাজ হবে সংসদীয় গণতন্ত্রকে নোতুন দিশা দেখানো৷ যেভাবে, যে ভাষায় নেতা-নেত্রীরা পরস্পকে আক্রমণ করছে তা সংসদীয় গণতন্ত্রকেই কলঙ্ক লেপন করছে৷ তিনি বলেন, ‘আমরা বাঙালী’ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্বে বিশ্বাসী৷ প্রাউট তত্ত্বের প্রয়োগে কীভাবে মানুষের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব, ‘আমরা বাঙালী’রপ্রচারে সেটাই প্রাধান্য পাবে৷