আমরা বাঙালীর লক্ষ্য---শোষণমুক্ত মানব সমাজ

লেখক
এইচ এন মাহাতো

আমরা বাঙালীর মৌলিক  উদ্দেশ্য হলো সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শন  প্রাউটের আলোকে বিশ্বব্যাপী শোষণমুক্ত এক মানবসমাজ ঘটন বিশ্বের শোষিত মানুষের শোষণ মুক্তি ঘটাতে হলে সারা পৃথিবীর সকল মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি পূর্ণশ্রদ্ধা ও নতুন করে মূল্যায় প্রয়োজন সার্বিক হিতের কথা চিন্তা করে প্রতিটি অঞ্চলের  অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতির সুরক্ষা ও বিকাশ ঘটানো, তৎসহ মানবিক মৌলিক অধিকারগুলিকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা

মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় প্রবর্তিত প্রাউট (প্রগতিশীল উপযোগী তত্ত্ব) আঞ্চলিকতার  শ্রীবৃদ্ধির পথ ধরে বিশ্বৈকতাবাদের প্রতিষ্ঠা করবে

একটি সুন্দর মানবসমাজ গড়তে হলে চাই মানব মনিষার পূর্ণ মর্যাদা ও মূল্যায়ন, তৎসহ স্থানীয় নাগরিকগণের শারীরিক সুস্থতা রক্ষা,মানসিক বিকাশ ও অন্ধবিশ্বাস কুসংস্কার বুজরুকি মুক্ত আধ্যাত্মিক দর্শন, সাথে সাথে চাই অন্তর নিহিত সাধনা পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষের ধর্মবোধ জাগানো ও নীতিবাদী তৈরী করার প্রয়াস যা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজন শিবোত্তর সময় থেকে মানুষের মধ্যে সমাজ তৈরী করার যে প্রবণতা তৈরী হয়েছিল তাহা মূলত নদী তীরবর্তী সমভূমিতে ও পাহাড়ের  কোলে কোলে কারণ মানুষ তখনও গৃহ নির্মাণ করতে শেখেনি সেই সময় মানব মনিষার প্রথম পদক্ষেপ ছিলো সৃষ্টজগতের  সকলের যেমন বাঁচবার  অধিকার দেওয়া, তেমনি ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক বৈষম্যগুলিকে দূর করে একটি সুসামঞ্জস্য পরিকল্পনার মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে সকল সমস্যা সমাধানের  সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী করা সারা ভারতে ৪৪টি আঞ্চলিক ভাষার ওপর ভিত্তি করে ও সমগ্র বিশ্বে ২৫০ টির বেশি আঞ্চলিক সমাজ আমরা দেখতে পাই মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার কণিকায় প্রাউট (১-১৪) ও অভিমত (১৯ খণ্ড), প্রাউটের অর্থনীতি, প্রাউটের রূপরেখা, প্রাউটের প্রবচন,মানুষের সমাজ (১-২ খণ্ড), আজকের সমস্যা, দেশপ্রেমিকের প্রতি, বুদ্ধির মুক্তি ও নব্যমানবতাবাদ, কনিকায় নব্যমানবতাবাদ ও বিভিন্ন সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শনের বইগুলো বিশ্লেষণ করলে একটাই মূলমন্ত্র পাওয়া যাবে তাহা হলো--- একটি সুস্থ মানব সমাজ গড়তে হলে প্রথমেই স্থানীয় সমস্যা গুলোর স্থায়ী সমাধান ও মানুষের ন্যুনতম প্রয়োজন মেটাবার সুব্যবস্থা করা তা না করে বড়ো কিছু সমাজের  সংশোধনের ও পরিবর্তনের চিন্তা আকাশ কুসুম কল্পনা মাত্র সে ক্ষেত্রে তিনি আরো বলেছেন নীতিবাদের স্ফুরন থেকে বিশ্বৈকতাবাদের প্রতিষ্ঠা এটাই সর্র্বঙ্গীন কল্যাণের পরিধি নচেৎ দেশের বা রাজ্যের নীতি হীনদের নিয়ে যতই পরিবর্তন আসুক না কেন কোনোটাই মানুষের উপকারে লাগবে না কারণ রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা একটাই পথ বোঝে কিভাবে সাধারণ মানুষের মাথায় কাঠাল ভেঙে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করা

দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রগতিশীল উপযোগী তত্ত্বে বলেছেন সামগ্রিকভাবে সকল অঞ্চলের একইসাথে উন্নয়ন করতে যে পরিকাঠামো দরকার তাহা এই মূহূর্তে অসম্ভব  একটি অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি,শিল্প, কৃষি,বানিজ্যিক, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সাধারণ মানুষের মিনিমাম গ্যারান্টি সহকারে কর্মসংস্থান ও ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি সুষ্ঠু পরিকল্পনার জন্য ব্লকভিত্তিক পরিকল্পনার  সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বৈকতাবাদের ভাবনাও সঞ্চারিত করা মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে কোনো একটি অঞ্চল থেকেই সুত্রপাত করতে হয় সেই অঞ্চলের উন্নয়ন বা শ্রীবৃদ্ধি হলেই অন্য অঞ্চলের জনগণ তাদের অঞ্চলের উন্নয়ন বা শ্রীবৃদ্ধি করতে এগিয়ে আসবে আর এই শ্রীবৃদ্ধি ঘটাতে নীতিবাদীদের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে সেটাই হবে সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ এই পথেই প্রতিটি মানুষ জীবনধারণের নূ্যনতম চাহিদা হাতে পাবে ও ভারতের ৪৪টি সমাজ ও বিশ্বের প্রায় ২৫০টি সমাজ একটি  ছাতার তলায় এসে বিশ্বৈকতাবাদে প্রতিষ্ঠা পাবে বিশ্বজুড়ে এক মানব সমাজ গড়ে উঠবে