অর্থনীতির নিয়মে দেশে মন্দা  মানুষ অর্থনীতির তত্ত্বকথা বোঝে না - দারিদ্র্য দূরীকরণে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা চাই

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

অর্থনীতির অধঃগতি করোনা আসার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে৷ এপ্রিল -জুন ত্রৈমাসিক হিসাবে জিডিপির সঙ্কোচ ছিল প্রায় ২৪ শতাংশ৷ জুলাই-সেপ্ঢেম্বর ত্রৈমাসিকে সঙ্কোচের হার ৭.৫ শতাংশ৷ অর্থনীতির তত্ত্ব কথায় পর পর দুটি ত্রৈমাসিকে জিডিপির হার সঙ্কোচন হলে দেশ মন্দার  কবলে  পড়ে৷ সেই অর্থে ভারত এখন মন্দার কবলে৷ ত্রৈমাসিক  আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাপ শুরু করার পর থেকে অর্থনীতির বিচারে দেশ এই প্রথম আর্থিক মন্দার কবলে পড়লো৷

তবে প্রায় ২৪ শতাংশ থেকে সঙ্কোচন সাড়ে সাত শতাংশে নেমে আসায় সরকার আশার আলো দেখছে৷ অর্থনীতিবিদ প্রণব সেন বলেন উৎসবের মরসুমে প্রতিবছরই কেনা-বেচা একটু বেশী হয়৷ তাই সঙ্কোচনের হার কম৷ অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে সঙ্কোচনের হার আবার বেশী হতে পারে৷ প্রণব সেন এক সময় সরকারের মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ ছিলেন৷ পরিসংখ্যান দপ্তর সুত্রে জানা গেছে জি.ড়িপির এই পরিমাপ সম্পূর্ণ নয়৷ লক্ডাউনের কারণে সব এখনও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি৷ তাই এই হিসেব পরিবর্তন হতে পারে সব তথ্য হাতে এলে৷

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের ধারণা ভারতের অর্থনীতিতে করোনার ঘা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশী হবে৷ মোদি সরকারের অপরিণত পরিকল্পনার ফলে অর্থনীতির অধঃগতি করোনার আগেই শুরু হয়েছে৷ এরপর দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ বাড়লে আর্থিক  অধঃগতি আশংঙ্কা ছাপিয়ে যেতে পারে৷

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের মুখপাত্র বলেন--- এসব অর্থনীতির তত্ত্ব কথার কচকচানিতে মানুষের পেট ভরবে না৷ জি.ডি.পি কি চাল, না ধান, গম না আটা মানুষ বোঝেই না, জি.ডি.পির সঙ্কোচ বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের হের-ফের হয় না৷ তাদের দুর্দশা চলতেই থাকে৷ অবহেলিত মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রাউট প্রবক্তায় ভাষায় অর্থনীতিকে অধিকতর বাস্তবমুখী করতে হবে৷ অর্থনীতি হবে একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ ও প্রয়োগ ভৌমিক  বিজ্ঞান, আর একে বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ, সর্বজীবের তথা সর্ব অস্তিত্বের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে বিকশিত করতে হবে৷’’

প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাতখাঁ বলেন---জি.ডি.পির সঙ্কোচ বৃদ্ধির সঙ্গে দরিদ্র্য মানুষের আর্থিক বিকাশের কোন সম্পর্ক নেই৷ পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রিত অর্থনীতির হিসাবের বাইরে দেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ৷ সর্বস্তরে আর্থিক বিকাশ ঘটাতে হলে প্রতিটি  গরীব মানুষকে জীবনধারণের নূন্যতম প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্রয় ক্ষমতা দিতে হবে৷ এর জন্যে প্রয়োজন একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা৷ তথাকথিত স্বাধীনতার পর থেকে দেশের  রাজনৈতিক  ও অর্থনৈতিক  ক্ষমতা পুঁজিবাদের হাতে চলে গেছে৷ ফলে সামাজিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে৷ বর্তমান সরকার তো সমস্ত  রাষ্টায়ত্ত সংস্থাগুলি পুঁজিবাদের হাতে তুলে দিচ্ছে৷ এমনকি ব্যাঙ্ক পর্যন্ত পুঁজিবাদীদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব আসছে৷ এরফলে ঋণদাতা ও গ্রহীতা একই ব্যাষ্টি হবে৷ সাধারণ মানুষের সাধারণ গচ্ছিত ধনও পুঁজিপতি আগ্রাসনের শিকার হবে৷ দেশে এক ভয়ঙ্কর আর্থিক দুরাবস্থা সৃষ্টি হবে৷ গণমাধ্যমগুলি এনিয়ে চিৎকার না করে শুধু জিডিপি জিডিপি করে যাচ্ছে৷ সাধারণ মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা না এলে জিডিপি বৃদ্ধির  আর আশা নেই৷

শ্রী খাঁ বলেন--- কৃষি  শিল্পের সমন্বয়ে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ আর্থিক পরিকল্পনা তৈরী করে প্রাউটের বাস্তবমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করতে হবে৷ তখনই সম্ভব হবে আর্থিক মন্দার কবল থেকে দেশকে রক্ষা করা৷