বাঙালী আর কতকাল হিন্দী সাম্রাজ্যবাদের দলদাস হয়ে রক্ত ঝরাবে?

লেখক
এইচ.এন.মাহাতো

সম্প্রতি কোচবিহার শীতলখুচিতে ভোট পর্ব চলাকালিন  শান্ত পরিবেশের মধ্যে এমনকি ঘটলো বিজেপির কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে তাজা ৪টি প্রাণ বাঙালীর মায়ের কোল খালি করে চলে গেল৷ রাজনৈতিক তর্জা অনেক কিছুই বলতে পারে৷ বর্তমান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক ডজনের উপর বাঙালীর মৃত্যু হয়েছে৷ কেউ বলছে বিজেপি মারা গেছে৷ কেউ বলছে তৃণমূল আপনারা কী কখনো ভেবে দেখেছেন মৃতদেহটি জন্মসূত্রে কোনো পার্টির নয়৷ বাঙলায় জন্মেছে মানেই বাঙালী৷ বলুনতো বাঙালীরা আর কতকাল হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী পার্টির দলদাস হয়ে প্রাণ বিসর্জন করে চলবে? অন্যদিকে  বিজেপির বঙ্গেশ্বর বলছেন দরকার হলে আরো শীতলখুচি তৈরী করা হবে৷ নিকৃষ্ট রাজনীতির জারজ সন্তান বাঙালীর  মৃত্যুকে ন্যুনতম সহানুভূতি না দেখিয়ে বলছেন দরকার হলে আরো মায়ের কোল খালি করবো৷ এক সময় হাজার হাজার বাঙালীর মৃত্যু মিছিল দেখেছি কংগ্রেস সিপিএমের আমলে৷ আমরা দেখেছি লাস নিয়ে টানাটানি কাদের লাস? অথচ দেখুন সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত সেই ট্র্যাডিশন একইভাবে  চলছে৷ রাজনৈতিক নেতারা লাসের হিসাব কষে, কেউই ভাবে না বাঙালী মায়ের সন্তান হারাবার অবস্থাটা কত কষ্টের, সন্তান পিতৃহীন বা ভাতৃহীন হবার কষ্টটা কোথায়!

হে বাঙালী আর কত কাল হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের  দলদাস হয়ে মৃত্যুর মিছিল দেখবে৷ একবার নিজেকে বাঙালী জাতি সত্তার জন্য বরণ করে নিজেকে গর্ববোধ কর৷ প্রমাণিত কর মরতেই যদি হয় বাঙলা মায়ের জন্যেই আত্মোৎসর্গ করবো৷ তবেই কবির মর্মর বাণীর সার্থকতা৷

ভারত বাঙালীদের জন্যে স্বাধীনতা পেয়েছে, তার ঐতিহ্য সারা বিশ্বের কাছে সমাদৃত৷ সেই বাঙালী জাতিসত্তা আজ হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা ভুলুন্ঠিত৷ বিভিন্ন পার্টির দলদাস বা ক্রীতদাসে  পরিণত হয়ে হীনমন্যতা, মেরুদণ্ডহীণ হয়ে পড়েছে৷

বাঙালী জাতি সত্বাকে এই অভাবনীয় পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে প্রাকৃতিক নিয়মেই সৃষ্টি হয়েছে আমরা বাঙালীর৷ আমরা বাঙালী দল কয়েক দশক ধরে বাঙালীর ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক আন্দোলন করে বাঙলার জাতিসত্তাকে রক্ষা করে চলেছে৷ ভারতের বাঙালী জাতিসত্তাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে এগিয়ে এসেছেন মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শন প্রাউটের আলোকে শোষণমুক্ত বাঙালীস্তান গড়ার মাধ্যমে৷ প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা বলেছেন ‘‘আঞ্চলিকতার শ্রীবৃদ্ধির পথ ধরে বিশ্বৈকতাবাদে প্রতিষ্ঠা৷ আজ সময় এসেছে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসের স্বপ্ণকে সার্থক করতে--- রাজনৈতিক গণতন্ত্রের তাঁবেদারি করার, ধোঁকাবাজের  স্বাধীনতা নয়, আমরা চাই শোষণমুক্ত বাঙালীস্তান গড়তে অর্থনৈতিক গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠা করা৷ আমরা বাঙালী দলের উদ্দেশ্য-প্রগতিশীল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণ, ভারসাম্য অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠা, সকলের জন্য ন্যুনতম গ্যারান্টি ও প্রত্যেকের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্লক ভিত্তিক পরিকল্পনায় কৃষি ও শিল্পের সমন্বয়ে করে অর্থ ও সম্পদের বর্হীস্রোত বন্ধ করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা৷

বাঙলা ও বাঙালীকে দুর্বৃত্ত মুক্ত করতে আপামর বাঙালীর প্রতি ‘‘আমরা বাঙালী’’র দলমত নির্বিশেষে আবেদন, আসুন আমরা সকলে মিলে আওয়াজ তুলি আর হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীর দলদাস হয়ে আর রক্ত নয়৷ রক্ত ঝরাতে হলে বাঙলার নোতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আন্দোলনে আওয়াজ তুলি বলি--- আমি বাঙলার, বাঙলা আমার৷ আমরাই গড়বো শোষণমুক্ত বাঙালীস্তান৷ যেখানে থাকবে না কোন ভেদাভেদ থাকবে শুধু একটাই আওয়াজ আমরা বাঙালী বাস করি  সেই তীর্থ বরদ বঙ্গে৷