ভারত ও পাকিস্তানে গণতন্ত্রের গঙ্গা যাত্রায় ধর্মমতের গোঁড়ামির প্রাধান্য

লেখক
প্রবীর সরকার

বর্ত্তমানে  ভারতে  শুধু নয়, পৃথিবীর  অনেক দেশে যেমন  পাকিস্তানে  ধর্মমতের নামে  নোংরা দলবাজি  করতে  গিয়ে  মানবতাহীন  কাজ করে বসছে পদপদে৷ কিন্তু অত্যন্ত আশার কথা, মহামান্য বিচার  বিভাগ থাকায় বিশেষ করে সর্বোচ্চ আদালত (সুপ্রিম কোর্ট)  আছে  বলে  সাধারণ  মানুষগুলো বেঁচে আছে৷ ভারতবর্ষকে  দ্বিখণ্ডিত করে যে পাকিস্তানের  জন্ম তার মূলভিত্তি হলো  হিন্দু  বিদ্বেষ৷ এই বিদ্বেষটাই  হলো পাকিস্তানের  মূল মূলধন৷ তাকে  জনমানসে দৃঢ়মূল  করতেই  ইসলাম ধর্মমতকে  বড়ো  করে দেখায়, যেটাতে  মানবাধিকার ও গণতন্ত্র অবহেলিত হয়৷  এতে    ইসলামের মহত্বটাই খাটো হয়ে যায়৷ সেটা ওই মিথ্যাচারী রাজনৈতিক  দলগুলো  বুঝেও বোঝে  না৷ তবে এটা সত্য  কথা যে ভারতের ও পাকিস্তানের  কিছু বিশেষ বিশেষ  রাজনৈতিক  দল আছে যারা  ধর্মমতের গোঁড়ামিকে  মূলধন করে দেশ এর  শাসনব্যবস্থা কায়েমে উঠে পড়ে লেগে আছে৷ আজকের  চিন্তাশীল  সাধারণ  মানুষ যেটাকে মানতে  পারে  না৷  কারণ  তাতে  মানবতাই  অস্বীকৃত হয়৷ ধর্মমতের  কুসংস্কার  প্রসূত অন্ধত্বটা মানুষকে অত্যন্ত খাটো  করেই তোলে৷ তারই  কারণে  পাকিস্তানের  সাজা প্রাপ্ত একজন  যুক্তিবাদী মহিলা যাঁর  নাম  ‘আসিয়া’ তাঁকে  দশবছর  কারাদণ্ড  দেওয়া হয় ৷ তিনি নাকি  ঈশ্বর বিরোধিতা করেন অর্থাৎ আল্লাকে খাটো করেন ৷ কিন্তু  সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে সে দেশের  সুপ্রিমকোর্ট দীর্ঘ ৯ বছর  পর তাঁকে মুক্তি দান করেন৷  এতে পাকিস্তানে  অনেক  অশান্তি  হয়৷  মহামান্য  আদালতকেও  অনেকে  কটূক্তি করে৷ তাঁর  অপরাধ  হলো, তিনি  নাকি বলেছেন  যে তিনি মুসলমান নন৷ এতেই সে অপরাধী৷ যারা  অভিযোগ  করে তা  অনেক পরে ও তাদের  অভিযোগে  অনেক  বৈসাদৃশ্য থাকায়  মহামান্য  আদালত  মহিলাকে  মুক্তি দান করেন৷

এতে কয়েকদিনে পাকিস্তানে  অনেক  প্রাণহানি ঘটেছে৷ বর্ত্তমান প্রধানমন্ত্রী জনগণকে   শান্তিশৃঙ্খলা বজায়  রাখার  আবেদন  করেন৷  পাকিস্তানের  জনগণকে  অবশ্যই  এ সব ব্যাপারে  যুক্তিবাদী হতে হবে৷

তাই নিছক ধর্মমত  নিয়ে যে কাণ্ডটা বর্ত্তমানে  ভারত  ও পাকিস্তানে  চলছে সেটা সম্বন্ধে  জনগণকে  আত্মসমীক্ষার  পথে এগুতে  হবে৷ ভারতেও দেখা যাচ্ছে,  ধর্মমতের  গোঁড়ামিটা যেন ধীরে ধীরে  মাথা চাড়া  দিচ্ছে৷ বলতে  দ্বিধা নেই,  এ সবটা মূলতঃ রাজনৈতিক  দল এর ধর্মীয়  গোঁড়ামির  জন্য হচ্ছে ৷ সাধারণ মানুষ  সেই মধ্যযুগে  পড়ে আছে নানাকারণে৷ ভারতে  তিন তালাক ও শবরীমালা  মন্দিরে  ঢোকা  নিয়ে মহামান্য  সুপ্রিমকোর্টের  রায়  অত্যন্ত  ন্যায়সঙ্গত৷  এই  রায় নিয়ে কত  না অশান্তি৷ এসব  মধ্যযুগীয়  ধর্মমতের  অন্ধত্ব যেটা আজকে  অচল৷ এসব নিয়ে গদীর লড়াই  যারা করে বা নীরব  থাকে  সেটা দেশের  পক্ষে  ক্ষতিকারক ৷ মানুষকে যুক্তিবাদী হতে হবে৷  তা না হলে  মানব  সভ্যতাই  ধবংস হয়ে যাবে৷