ভয়াবহ জল সংকট আসছে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

ভারতের ‘কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগ’ কমিটি থেকে দেশের ভয়াবহ জলসংকটের ওপর একটি রিপোর্টে বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশের ৬০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল পাচ্ছে না৷ পরিশ্রুত জল না পেয়ে প্রতি বছর ২ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে৷ আর ২০৩০ সালে দেশের এই জলসংকট ভয়াবহ রূপ নেবে৷

এই রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে, দেশের ২১টি বড় শহরে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর খুব কমে আসছে৷ ২০৩০ সালে তা মারাত্মক পর্যায়ে এসে পৌঁছবে৷

যেভাবে গভীর নলকূপ খনন করে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হচ্ছে, চাষের জন্যেও যেভাবে ব্যাপকভাবে মাটির নীচের জল তুলে নেওয়া হচ্ছে, তাতে জলাভাবে মানুষ, গাছপালা সবকিছুই ধবংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷

এর একমাত্র সমাধান, ব্যাপক বনাঞ্চল সৃষ্টি করা, বেশি করে গাছ লাগানো৷ তাছাড়া, সেচের জন্যে মাটির নীচে জলের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৷ এছাড়া উপায় নেই৷

যে কোনও কারণে ব্যাপকভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলা বন্ধ করতেই হবে৷ শহরে পানীয় জলের জন্যে গভীর নলকূপ বসিয়ে জল ওঠানোও বন্ধ করতে হবে, অন্ততঃ ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনতে হবে৷

প্রকৃতি বর্ষাকালে যে বৃষ্টির জল ঢেলে দেয়, ওই জলের সংরক্ষণ করা হয় না৷ ওই জল প্রায় সবটাই সমুদ্রে বয়ে যায়৷

এই অগাধ জলরাশিতে ঠিকভাবে ধরে রাখার উপযুক্ত ব্যবস্থাই করা হচ্ছে না৷  এজন্যে ছোট-বড় নদী, খাল-বিলগুলিকে ব্যাপকভাবে সংস্কার করতে হবে৷ ছোট-বড় নদীগুলির ওপর বিভিন্নস্থানে জলাধার তৈরী করে, দেশে ব্যাপকভাবে পুকুর, সায়র,বাঁধ গড়ে তুলে বর্ষার জলের একটা বড় অংশকে সারা বছরের জন্যে ধরে রেখে সেই জলে চাষের কাজ করা ও সেই জলকে পরিশ্রুত করে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা উচিত৷

এ ব্যাপারে প্রাউট-প্রবক্তা মহান দার্শনিক পরমশ্রদ্ধেয় শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার বলেছেন,এই ব্যাপক জলসংকটের ‘‘একমাত্র সমাধান হল বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভর করা৷ অমাদের বৃষ্টির জলধারা সঞ্চয় করে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে জলভরা মেঘ যা সমুদ্রে বৃষ্টিপাত ঘটায় তা স্থলভূমির দিকে টেনে আনতে হবে৷

অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যায় গভীর নলকূপ খনন করে চলা কোনো সমাধানই নয়৷ বরং বৃষ্টি যেখানে হচ্ছে, ঠিক সেই জায়গায় জলকে সংগ্রহ করে রাখবার চেষ্টা করতে হবে৷ এই জন্যে অবিলম্বে ওইসব জায়গায় অনেক পুকুর, খাল,ছোট বাঁধ, জলাধার, হ্রদ তৈরী করে বৃষ্টির জলকে পানীয় জল হিসাবে ব্যবহারের জন্যে সঞ্চয় করে রাখতে হবে৷ অদূর ভবিষ্যতে মানবতা যে জল-সংকটের-সম্মুখীন হবে তা থেকে বাঁচবার এই হচ্ছে একমাত্র উপায়৷