দেশ বিক্রি হয়ে যাবে নাতো?

লেখক
এইচ.এন. মাহাত

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে নাগরিকদের সুস্থ শারীরিক,মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ও বিকাশের কোনো নীতিমালা নেই৷ তাই তারা দেশকে দেশীয় ও বিদেশী পুঁজিবাদের কাছে বিক্রয় করে দিচ্ছে৷ কিন্তু কেন? একটি পরিবার চালাতে হলে দুটি জিনিস পাশাপাশি রাখতে হয়৷ বাংলায় একটি প্রবাদ আছে---‘‘যেমন আয় তেমন ব্যয়’’৷ রাষ্ট্রের চৌহদ্দিকে সামলে রেখে সকল নাগরিকদের সুখ সাচ্ছন্দ্য রাখতে হলে প্রথমেই দেখা প্রয়োজন দেশের আয়ের উৎস গুলো কি কি৷ পাশাপাশি কি কি খাতে ব্যয় করা আবশ্যিক৷ স্থানীয় মুদ্রার মানকে বৃদ্ধি করতে হলে অর্থের ও সম্পদের বর্হীস্রোত বন্ধ করে স্থানীয় জায়গাতেই সেই সম্পদের পূর্ণ উপযোগ গ্রহণ করলে জিনিসপত্রের দাম যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে ও তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে৷ ভারতের রাজনৈতিক নেতারা নিজের স্থানীয় জায়গাকে উন্নত করতে শিল্প কারখানার নামে কাঁচামালকে কয়েকশত মাইল দূরে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় সম্পদ তৈরী করে৷ এর পরিণতি যাতায়াতের ব্যয় ও প্রস্তুতি সম্পদকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিতে আরা অতিরিক্ত খরচ, যা সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হয়৷ যেমন কংগ্রেস আমলে ডিগবয়ের পেট্রোলিয়াম জাত কাঁচামালকে নিয়ে যাওয়া হয় বিহারের বারুনিতে, ওখান থেকে পেট্রোলকে আবার আপার অসমে ফিরিয়ে আনতে হয় স্থানীয়দের প্রয়োজনে৷ তদরুপভাবে বাঙালীস্তানের কাঁচামাল স্টীলকে ও অন্যান্য দ্রব্যকে পাঠাতে হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্টীল প্ল্যান্টগুলো বাঁচানোর জন্য৷ একই পরিস্থিতি কয়লার ক্ষেত্রেও৷ এরফলে কাঁচামালের কারখানায় আনা ও প্রস্তুত সম্পদকে ফেরত আনার জন্যে নাগরিককে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়৷ ভারতের অর্থনীতির এই অবস্থার জন্য রাজনৈতিক নেতারা ও তাদের অনুগত অর্থনীতিবিদরা কমবেশি দায়ী৷ কারণ পার্টির সার্থ রাখতে গিয়ে কোন প্রকারের প্রতিবাদ না করে দলদাসে পরিণত হয়েছে নেতা ও অর্থনীতিবিদরা৷

আজ বিজেপি সরকার দেশটাকে বিক্রয় করছে দেশভক্তির আড়ালে লুটপাট করে খাওয়ার নেশাতে৷

আজ পর্যন্ত এক একটি কেন্দ্রীয় সরকার তৈরী হয়েছে ভারতের  নাগরিকদের সুখ সাচ্ছন্দ্য না রাখতে পেরে এমন একটা সমস্যা সামনে  এনেছে যার কোনো প্রয়োজন ছিলো না৷ বর্তমান বিজেপি সরকার প্রায় আট বছর আগে সরকারে আসার আগে ভারতীয়দের আসার আলো দেখিয়ে বলেছিলেন---সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের কয়েক কোটি টাকা ফিরে আনবেন, বছরে দুই কোটি চাকরি দেবে,মিসকল করলেই চাকরি পেয়ে যাবে, শূন্য টাকায় ব্যাঙ্ক একাউন্ট করলে ১৫ লাখ পৌঁছে যাবে, ২০২২ এর মধ্যে সবাইকে পাকা বাড়ি, সুসাস্থ, পানিয় জল, শিক্ষার মৌলিক অধিকার,কর্মসংস্থান ইত্যাদি ইত্যাদি৷ ২০১৮ সালের মধ্যে ১০০ স্মার্ট সিটি, এছাড়াও আরো কত কী! বলেছিলেন--- না খুয়াঙ্গা, না খানে দুঙ্গা,কেনানা তিনি চৌকিদার---আজ তার উল্টো৷

স্থানীয় পুঁজিপতিদের কালো টাকা উদ্ধার মানেই কালো টাকা, আবার ব্যাঙ্কে রাখলে বন্ধ হলে সরকার দায়ী নয়৷ এলো জিএসটি (ব্যবসায়ীক ট্যাক্স) নামে আইনের আওতায় এনে সারা ভারতের  ছোট ও মাঝারি শিল্প ও কারখানায় লালবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো৷ এখন রেল এয়ারলাইন্স সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুঁজিপতিদের হাতে বিক্রি করার ব্যবস্থা করছেন৷ দেশের মানুষ কবে চিনবে এই ধুরন্ধর পুঁজিবাদের দাসদের৷ যারা ক্ষমতায় বসে মধ্যবিত্তের গলা টিপে মারতে চাইছে৷

এইভাবে চলতে চলতে দেশটাকে বিক্রি করে দেবে না তো দেশের দেশপ্রেমিক সরকার৷