সম্পাদকীয়

নিখাদ প্রতারনা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর যে সব হিন্দু বাঙালী আশায় উৎফুল্ল হয়েছিল তাদের আশার গুড়ে যে বালি মেশান আছে সেটা টের পায়নি৷ এই সব গড়পড়তা বাঙালী আইনের খুঁটি-নাটি নিয়ে বিচারও করে না, খুঁটিয়ে দেখার মত দৃষ্টিও তাদের নেই৷ তারা শুধু নেতাদের ভাষন শুণেই আবেগে উদ্বেলিত হয়ে উঠে৷ বাস্তব নিয়ে ভাবার মত সময় ও সামর্থ্য তাদের নেই৷

নারী জাতি হোক নূতন বিপ্লবের অগ্রদূত

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সমাজে নারী ও পুরুষ পাখীর দুটি ডানার মতো৷ একটা ডানা যদি পঙ্গু হয়, তা হলে একটিমাত্র ডানা দিয়ে পাখী উড়তে পারে না৷ ঠিক তেমনি সমাজে নারী যদি অবহেলিত হয়, শোষিত হয়, নির্যাতিত হয়, যা আজকে হচ্ছেও, এ অবস্থায় সমাজের প্রকৃত প্রগতি হতে পারে না৷ নারী পুরুষের জননী৷ এই সত্য মদগর্বী কিছু পুরুষ ভুলে যায় ও নারীর ওপর নির্যাতন চালায়৷

বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে, কিছু পশুস্বভাবযুক্ত পুরুষ যেভাবে মেয়েদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাচ্ছে তা মানব সভ্যতার মুখে চরমভাবে কালি লেপন করছে৷

নিপীড়িত মানবতার মুক্তির সংগ্রামে প্রেরণা দধীচি দিবস

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পৃথিবীতে সবসময় কিছু মানুষ থাকে যারা সমাজে প্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷ তারা কখনই মানুষের সামূহিক কল্যাণ চায় না৷ বরং মানব সমাজকে অধোগতির দিকে টেনে নিয়ে যায়, কল্যাণের পথ রুদ্ধ করে দিতে চায়৷ এই ধরণের পাপশক্তির হাতে পড়ে মানবতা যখন চরম বেদনাদায়ক পরিস্থিতির শিকাব--- তখনই আর্তমানবতার পরিত্রান কর্তারূপে আবির্ভূত হলেন শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী, দিলেন এক সুসন্নিবদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার এক সর্বানুসূ্যত দর্শন---আনন্দমার্গ৷ কি ধর্ম, কি শিক্ষাব্যবস্থা, কি সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শন, সর্বক্ষেত্রে তিনি মানুষকে আজকের সমস্ত সমস্যার সমাধানের জন্যে এক সর্বপ্রকার শোষণমুক্ত সর্র্বঙ্গ সুন্দর সমাজ রচনার এক মহান আদর

অর্থনৈতিক গণতন্ত্রই উন্নয়নের পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

লোকসভার বাজেট ভাষণে অর্থমন্ত্রী দাবী করেছিলেন--- তাঁর সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন৷ এ কৃতিত্ত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের৷ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বড় গলায় বলেছিলেন দেশে এখন মূল্যবৃদ্ধি নেই৷

২১শে ফেব্রুয়ারী সমাজ আন্দোলনের প্রেরণা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২১শে ফেব্রুয়ারী বাঙলা ও বাঙালীর গৌরব৷ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ওপার বাঙলার বিশেষ করে ছাত্র, যুবসমাজ সমস্ত প্রকারের সংকীর্ণতার ঊধের্ব উঠে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি ভালবাসার টানে যেভাবে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমুদ্রের মত উত্তাল হয়ে উঠেছিল ও সমস্ত গোঁড়া ধর্মমত ও সাম্প্রদায়িকতার সমস্ত প্রাচীরকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, ইতিহাসে তার তুলনা নেই৷ যুবজাগরণ সম্পর্কে কাজী নজরুল বলেছিলেন---

‘এই যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবে কি দিয়া বালির বাঁধ

কে রোধিবে এই জোয়ারের জল গগনে যখন উঠেছে চাঁদ৷’

নীলকন্ঠ দিবসের নির্ঘোষ আনন্দমার্গ অপ্রতিরোধ্য

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১২ই ফেব্রুয়ারী ‘নীলকণ্ঠ’ দিবস৷ আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন৷ আজ থেকে ৫১ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ঘটনা৷ পটনার বাঁকিপুর সেন্ড্রাল জেলে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূত্তিজীক্ হত্যার উদ্দেশ্যে ওষুধের নামে প্রাণঘাতী মারাত্মক বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু মার্গগুরুদেব সেই বিষকে আত্মস্থ করে তাঁর প্রতিক্রিয়া নষ্ট করে দেন৷

মার্গগুরুদেব এই বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করেন৷ সরকার তাঁর দাবীতে কর্ণপাত করেনি৷ এরপর ১লা এপ্রিল (১৯৭৩) তিনি এই দাবীতে অমরণ অনশন শুরু করেন৷ এই ঐতিহাসিক অনশন চলেছিল পাঁচ বছর চার মাস দুই দিন৷

আধ্যাত্মিক চেতনার জাগরণ চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজকের সমাজের  বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁরা  নিজেদের প্রগতিশীল  বলে জাহির করেন, তাঁরা আদর্শ সমাজ সংরচনায় আধ্যাত্মিকতার যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা সাধারণতঃ স্বীকার করতে চান না৷ তাঁরা আধ্যাত্মিকতাকে মনে করেন একটা অন্ধবিশ্বাস  বা কুসংস্কার৷ আসলে ‘আধ্যাত্মিকতা’  সম্পর্কে তাঁদের ধারণাটাই পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ৷

নব্যমানবতাবাদই শেষ আশ্রয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ধর্মচেতনা অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি ব্যষ্টি মানুষের জীবনকে শুভপথে পরিচালিত করে৷ মানুষের মধ্যে সততা আনে৷ নৈতিকতার ভিত শক্ত করে, বিবেককে সদা জাগ্রত রাখে৷ তখনই সমাজের যথার্থ কল্যাণ ও শান্তি আসে৷

আর্থিক মুক্তির পথ প্রাউট

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কয়েক দিন পরেই আগামী ২৬ শে জানুয়ারী ঘটা করে কেন্দ্রীয় সরকার  ভারতের প্রজাতন্ত্র  দিবস পালন করবেন৷  ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ব্রিটিশরা  স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা  হস্তান্তরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের নিজস্ব সংবিধান কার্যকর করা হয় ও ভারতকে  গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা  হয়৷ এই সংবিধানে প্রতিটি  মানুষের জীবনধারণের অধিকার, সমানাধিকার, স্বাধীনতার অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকার  স্বীকৃত  হয়৷

শাসকের নয়, মানুষের পরিবর্তন চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গণতন্ত্র সম্পর্কে বলা হয় জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরও দেশে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷ কারণ রাজনৈতিক দলগুলি তোয়াজ করে, লোভ দেখিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় করে৷ রাষ্ট্রের পরিচালক নির্বাচন করতে যে সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক চেতনার দরকার তা ভারতে নগণ্য সংখ্যক ভোটারদের থাকে৷

গণতন্ত্র মানে তো জনগণ, কারও চাপে নয়, স্বাধীন ভাবে বিচার–বিবেচনা করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে৷ আর সেই জনপ্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে৷ তবে তাকে বলা হবে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনগণের জন্যে–জনগণের সরকার৷ একেই বলে গণতন্ত্র৷