প্রবন্ধ

বিকেন্দ্রীত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই গণতান্ত্রিক অর্থনীতির সার্থক রূপ

প্রবীর সরকার

দেশ পরিচালনা করা যদি সহজ হতো তাহলে কথাই ছিল না৷ সুগৃহকর্তা বা কর্ত্রী যদি না হয় তাহলে সে গৃহের কল্যাণ ও উন্নতি হয় না৷ ঠিক তেমনই রাষ্ট্রের প্রধান যদি সুশাসক না হয় তা হলে সেই রাষ্ট্র কখনোই উন্নতি করতে পারে না৷ আজ মনে পড়ে সেই অতীতের সুলতানী যুগের কথা৷ ভারত সম্রাট নাসিরুদ্দীনের বেগম রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়িয়ে ফেলেন তখন সম্রাটকে বেগম একজন দাসী রাখার প্রার্থনা জানান৷ তিনি কোরাণ নকল করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তাই তাঁর পক্ষে দাসী রাখা সম্ভব নয় বলে বেগমকে জানান৷ আর রাষ্ট্রের কোষাগারের অর্থ প্রজাদের৷ সেই অর্থ অযথা ব্যয় কারর অধিকার তাঁর নেই৷ এই বোধ যদি শাসকদের না থাকে তাহলে তো তাঁরা ধার করেই শাসন পরিচা

প্রাউটের সমাজ আন্দোলন শোষণ মুক্তির নূতন দিশা

মনোজ দেব

আজ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একমাত্র পথ হিসেবে মেনে নিয়ে আপন আপন কর্মসূচী অনুসারে কাজ করে চলেছে৷ তারা দেশে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যা সমাধানের জন্যে দেশী-বিদেশী পুঁজিপতিদের শরণাগত৷ দেশী-বিদেশী পুঁজিপতিরা যাতে রাজ্যে তাদের মোটা পুঁজি বিনিয়োগ করে শিল্প গড়ে তুলতে এগিয়ে আসে, সেজন্যে ওই পুঁজিপতিদের নানান ভাবে তোষণ করে চলেছে৷ তাদের নানাভাবে প্রলোভন দিচ্ছে৷ সস্তায় জমি, বিদ্যুৎ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে করছাড়, ইত্যাদির আশ্বাস দিয়ে নানাভাবে তাদের মন ভেজানোর চেষ্টা করছে৷ কট্টর মার্কসবাদী বলে পরিচিত সিপিএম সহ অন্যান্য সঘোষিত সমাজতন্ত্রী বামপার্টিগুলিও দে

জাতীয় সম্পদ বিক্রি করাটা ক্ষমার অযোগ্য

প্রভাত খাঁ

ভারতবর্ষ যখন ভাগ হয় তখন হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান, আর  ইংরেজের অখণ্ড ভারতবর্ষতে মাত্র ১৫টি রাজ্য ছিল৷ আজ হিন্দুস্থানে এতে ২৯টি বড়ো রাজ্য আর কেন্দ্রশাসিত রাজ্য এর সংখ্যা হলো ৭টি৷ তা হলো মোট ছোট বড়ো রাজ্য এর  সংখ্যা  ৩৬টি৷ ভারত যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি ডানা কাটা পড়ে ইংরেজ আমলে৷ তাই আয়তন ছোট হয়ে যায় অনেকটা৷ কিন্তু স্বাধীন ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রাজ্যের সংখ্যা দু’গুণের চেয়ে বেশী৷ ইংরেজ  ডিভাইড এ্যাণ্ড রুল এই নীতিতে অখণ্ড ভারতবর্ষ দেশকে ১৫টি রাজ্যের  সংখ্যায় রেখেই সেই ডিভাইড এ্যাণ্ড রুল শাসন চালিয়ে গেছে৷ তাছাড়া রাজ্যগুলির যে সংখ্যক জেলার সংখ্যা, সেই জেলাগুলির সংখ্যা হয়েছে আজ বহুগুণ৷ যদিও লোক সংখ্যা বেড়ে

রাজনীতি চলুক জনস্বার্থে

হরিগোপাল দেবনাথ

অতীতকালে রাজ-রাজড়া ও নবাব-বাদশাহ সুলতানদের শাসনামলে রাজনীতির সংজ্ঞা-নির্ধারণে ‘রাজ্ঞঃ নীতি রাজনীতি’  বলা হত কি না আমার জানা নেই৷ তবে যতদূর বইপত্র পড়ে কিংবা বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখ থেকে যতদূর শুণেছি, তা  থেকেই বলতে পারি যে সুদূর অতীতকালে শূদ্র-যুগের শেষপ্রান্তে  এসে  সমাজে কিছুসংখ্যক মানুষ সমাজের দায়িত্ব পালনে নিজেরাই  এগিয়ে এসে দায়িত্বের গুরুভার কাধে নিয়ে সমাজরক্ষা ও পালকরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন৷ আর সাধারণ গণমানুষ তখন জীবনের  নিরাপত্তা লাভের কথা ভেবেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে সমাজ রক্ষার  কাজে ব্রতীদের সমর্থন জানিয়েছিলেন৷ আর, এভাবেই শূদ্রযুগকে বিদায় জানিয়ে সমাজব্যবস্থায় ক্ষত্রিয়যুগের সূচনা ঘটেছিল৷ তখন সর্

আন্তর্জতিক নারী দিবসের প্রত্যাশা

কণিকা দেবনাথ

সমাজে নারী ও পুরুষ পাখীর  দুটি  ডানার  মতো৷ একটা ডানা  যদি  পঙ্গু হয়,  তা  হলে একটিমাত্র  ডানা  দিয়ে  পাখী  উড়তে  পারে  না৷ ঠিক তেমনি  সমাজে  নারী যদি  অবহেলিত  হয়,  শোষিত  হয়,  নির্যাতিত  হয়,  যা  আজকে  হচ্ছেও,  এ  অবস্থায় সমাজের প্রকঁত প্রগতি  হতে  পারে  না৷ নারী  পুরুষের  জননী৷  এই  সত্য  মদগর্বী  কিছু  পুরুষ  ভুলে  যায়  ও  নারীর  ওপর  নির্যাতন  চালায়৷

বর্তমানে বিভিন্ন  স্থানে,  কিছু  পশুস্বভাবযুক্ত  পুরুষ  যেভাবে  মেয়েদের ওপর  পাশবিক  নির্যাতন  চালাচ্ছে  তা  মানব  সভ্যতার  মুখে  চরমভাবে  কালি  লেপন  করছে৷

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও সমাজ

জ্যোতিবিকাশ সিন্‌হা

বিশ্ববিধাতার মানস কল্পনা সঞ্জাত এই বিশ্ব সৃষ্টির সংরচনায় সৃষ্টিচক্রের ঘূর্ণনকে সচল ও সুসমঞ্জস রাখার জন্যে সৃষ্টি হয়েছে নারী ও পুরুষ৷ আর পরমপিতার সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মানুষের ক্ষেত্রেও এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি৷ নারী ও পুরুষ যেন একটি কাগজের এপিঠ-ওপিঠ৷ দুইয়ের মধ্যে একচ্ছেদ্য সম্পর্ক বর্তমান৷ একপক্ষকে বাদ দিলে অপরপক্ষের অস্তিত্ব সংকট দেখা দেয়৷ মানুষ্য সৃষ্টির প্রথম ভাগে মানুষ যখন অরণ্যচারী ও পর্বত গুহাবাসীর জীবন যাপন করত, সে সময় মানুষের সমাজে কোনও বন্ধন ছিল না--- তাদের জীবনযাত্রা ছিল অনেকটাই বন্য প্রাণী সুলভ, ছন্নছাড়া৷ পরবর্তীকালে যখন মানুষ একটু সঙ্ঘবদ্ধ হতে শিখল ও এক-একটা পাহাড় বা গোত্রকে কেন্দ্

বসন্তোৎসব

বিশেষ প্রতিনিধি

বসন্তোৎসব সারা ভারতের উৎসব–উত্তর ভারতে ‘হোলি’, বিহার অঞ্চলে ‘ফাগুয়া’ ও বাংলায় ‘দোলযাত্রা’৷ আদিতে এই উৎসব ছিল মূলতঃ আর্যদের৷ প্রাচীন আর্যদের বাসভূমি ছিল মধ্য এশিয়ায়৷ এই অঞ্চলটা ছিল ভীষণ ঠাণ্ডা৷ সারা শীতকাল কেবল বরফ পড়তো, এটা ছিল আর্যদের দুঃসহ কষ্টের কাল৷ নিদারুণ ঠাণ্ডায় মানুষ জবু–থবু হয়ে মরার মত পড়ে থাকতো, কোন কাজকর্ম করতে পারতো না৷ এই শীতকালটা যখন বিদায় নিত, আর্যরা তখন আনন্দে উৎসবে মেতে উঠতো৷ ‘উৎ’ মানে আনন্দে লাফিয়ে ওঠা আর ‘সব’ মানে ‘জন্মগ্রহণ করা’৷ আক্ষরিক অর্থেই বসন্তের আগমনে আর্যরা প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠতো, হৈ–হুল্লোড় ও কর্মচাঞ্চল্যে মেতে উঠতো৷

মহাবিজ্ঞানী প্রভাতরঞ্জন সরকারের আবিষৃকত ‘মাইক্রোবাইটাম  ও মাইক্রোবাইটাম সাধনা

পত্রিকা প্রতিনিধি

বিজ্ঞানী শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন--- চিত্তানু ectoplasm) ও বিদ্যুতানুর electron) মাঝামাঝি অবস্থানে  এক অতিসূক্ষ্ম সত্তা আছে৷ আবিষ্কারক এই সত্তার নাম দিয়েছেন ‘মাইক্রোবাইটাম’৷ অর্র্থৎ ভাব Abstract) জড়ের matter) মধ্যবর্তীস্থানে  মাইক্রোবাইটাম অবস্থান করছে৷ এদের প্রাণীন ও ভাবসত্তার মত অস্তিত্ব রক্ষা, মৃত্যু ও সংখ্যা বৃদ্ধি হয়৷ বিশ্বসৃষ্টির মূল কারণ হ’ল এই মাইক্রোবাইটাম৷ এরাই গ্রহ, উপগ্রহে ও বিভিন্ন  নক্ষত্রে প্রাণীনতার আদি বাহক৷ এরাই বিভিন্ন জ্যোতিষ্কে অজস্র দেহ-সংরচনা ও মানস-সংরচনা করে চলেছে৷ দেহ ও মনের মধ্যে মাইক্রোবাইটামের প্রভাব  ওতোপ্রোতভাবে জড়িত৷ দেহ ও মনের মধ্যে  পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম

বিষাক্ত বৃত্ত

মনোজ দেব

ভারতীয় মানুষ রাজনীতির এক বিষাক্ত বৃত্তে আবর্তিত হচ্ছে৷ দেশীয় পুঁজিপতিরা এই বৃত্তের কেন্দ্রে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে৷ ১৯৩৮ সালে সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেসের  সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর লণ্ডনে ভারতীয়  ছাত্রদের  এক সমাবেশে ভাষণ প্রসঙ্গে বলেন---‘‘দেশীয় পুঁজিপতিদের সহযোগিতায় ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শক্তি অর্জন করছে৷ এদের বিরুদ্ধেও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে৷ শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়, মানুষকে অর্থনৈতিক  স্বাধীনতাও দিতে হবে৷’’