প্রবন্ধ

স্বদেশ প্রেমিক কবি

প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

হ্যারিসন রোডে ‘বেঙ্গলী’ সাপ্তাহিক পত্রিকার কার্যালয়ে বসে আছেন সম্পাদক সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন একজন স্বদেশ প্রেমিক কবি৷

কথা প্রসঙ্গে বললেন সুরেন্দ্রনাথ, ‘জানেন, এবার দেওঘরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হার্ড সাহেবকে খুব জব্দ করেছি৷ সে একজনকে বেআইনী বেত মেরেছিল৷ আমি কাউন্সিলে সে প্রশ্ণ তুলেছি৷ কটন সাহেব এক সপ্তাহ প্রশ্ণটি স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেছিলেন৷ তাতে আমি রাজী হইনি৷ আগামীকালই প্রশ্ণটি কাউন্সিলে উঠবে৷ কবি তাতে মোটেই সন্তুষ্ট হলেন না৷ তাতে সুরেন্দ্র-পক্ষীয়রা খুব চটে গেলেন৷.....

যত রঙ্গ এই বঙ্গে

জ্যোতিবিকাশ সিনহা

২০২১ সনের সূচনা বিভিন্ন দিক দিয়ে অত্যন্ত অর্থবহ৷ সমগ্র ২০২০ সাল ধরে অতিমারি করোনার মারণ তাণ্ডবের পর এই বছরেরই  প্রথম মাস জানুয়ারির ১৬ তারিখে ভারতে করোনা-প্রতিষেধক  প্রয়োগের আনুষ্ঠানিক শুভারম্ভ করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদী৷ অবশ্য জানুয়ারি মাসটি সারা বিশ্বে তথা বঙ্গদেশসহ ভারতবর্ষে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে৷ এই মাসেরই প্রথম দিন পৃথিবীর সব দেশে ইংরেজী দিনপঞ্জী মতে বছরের প্রথম দিন হিসেবে স্বীকৃত৷ এছাড়াও এই দিনটিকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ‘‘কল্পতরু দিবস’’ হিসাবে পালন করা হয়৷ ১৮৮৬ সালের ১লা জানুয়ারি উত্তর কলকাতার কাশীপুর উদ্যানবাটীতে  শ্রীরামকৃষ্ণ কল্পতরুরূপে  ভক্তগণকে আশীর্বাদ কর

২০২১-২০২২ আর্থিক বছরের  বেচারামের  দিশাহীন কেন্দ্রীয় বাজেট

প্রভাত খাঁ

ভারতে করোনার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এর ২০২১-২২ সালের আর্থিক বছরের আয়ব্যয়মাত্রিকা পেশ করা হয়েছে মাননীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতার মনের দ্বারা৷ এই আয়ব্যয় মাত্রিকা বেশ কিছুক্ষেত্রে  বিলগ্ণিকরণের উল্লেখ আছে৷ এতে যে দেশের হতদরিদ্র লোক প্রাণে বাঁচার সুযোগ পাবেন তা আশা করাই বৃথা, কারণ দেশটি চলছে পুঁজিবাদী শাসকদের দ্বারা৷ অদ্যাবধি দেখা যাচ্ছে এ সরকার যা করে চলেছেন তা সকল ক্ষেত্রে ধনীদেরই জয় জয়কার৷ সরকার আর্থিক  ক্ষেত্রে একেবারেই জি.ডি.পির মান শূন্যের নীচে এ দাঁড় করিয়েছেন৷ লক্‌ডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ১২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ৷ কিন্তু ১০০ জন ধনকুবের লক্‌ডাউনে ৩৫ শতাংশ সম্পদ বাড়িয়েছেন৷ সম্প্রতি অক্সফ্যাম ‘

নীলকন্ঠ দিবসের শপথ–শোষণমুক্ত নোতুন বিশ্ব

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, যখনই কোনো মহাপুরুষ প্রচলিত ধর্মীয় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরোধিতা করেছেন, সামাজিক–র্থনৈতিক নানান শোষণ ও অবিচারের প্রতিবাদ করেছেন, শোষণমুক্ত সমাজের আদর্শ তুলে ধরেছেন, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে শোষকশ্রেণী বা কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী ও তাদের স্তাবকরা নানা ভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, এমন কি তাঁদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যে নানান্ভাবে চেষ্টা চালিয়েছে৷

তাই সক্রেটিসকে হেমলগ বিষ পান করানো হয়েছিল,  যীশুখৃষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল–এমনি অজস্র উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে৷

সত্যবাদী

প্রণবকান্তি  দাশগুপ্ত

সংস্কৃত কলেজের একটা ভাঙা সিঁড়ি নিয়ে একবার দুই ক্লাসের ছেলেদের মধ্যে ভীষণ মারামারি ও হৈ-চৈ হলো৷ দুই পক্ষই চাইল ভাঙা সিঁড়িটি খেলার সামগ্রী হিসাবে দখল করতে৷ তাই উভয় দলের মধ্যে শুরু হলো শক্তি পরীক্ষা৷ প্রথমে কথা কাটাকাটি...তারপর ঠোকনা-ঠাকনি...তারপর ঠেলাঠেলি ব্যঙ্গবিদ্রূপ... শেষ পর্যন্ত দুমদাম কিলচড় লাথিঘুষি৷

সংবাদটা পৌঁছে গেলো অধ্যাপক মহলে৷ জনকয়েক অধ্যাপক ছুটে এসে ধমকানি দিতেই ছাত্ররা যে যার ক্লাসে পালিয়ে গেলো৷

মাভৈঃ ভারত আবার জেগে উঠছে

হরিগোপাল দেবনাথ

অগণিত ভারতবাসীদের প্রাণবলি, আত্মত্যাগ, দ্বীপান্তরে নির্বাসন,ও অপরদিক থেকে বেইমান আর বিশ্বাসঘাতক দালাল ও ব্রিটিশ শাসকদের অনুচরদের বর্বরচিত নিন্দাবাদ সমালোচনার গ্লানি সয়ে যাওয়ার--- বিনিময়ে ভারতবাসী সেদিন পণ্ডিত নেহেরুর হাত দিয়ে পাওয়া ‘রাজনৈতিক ক্ষমতা-হস্তান্তর চুক্তিকেই ‘‘দেশের স্বাধীনতা’’ বলে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন---১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট গভীর রাতের কালো অন্ধকারে৷ কিন্তু সেই স্বাধীনতার আস্বাদন কী রকম তা’ অবশ্যই বুদ্ধিমান ও বিচারশীল ভারতবাসী মাত্রেই আশা করি বুঝতে পেরেছেন আর এত বছরের ব্যবধানে তাঁদেরই বংশধরগণ, পরবর্তী প্রজন্ম যাঁরা অন্ততঃ নিজেদের চোখ দিয়ে দেখা, কোন দিয়ে শোনা আর আপন চিন্তা-বুদ্

কৌশিকী নৃত্য

সুভাষপ্রকাশ পাল

আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বছর আগে এই ধূলার ধরনীতে  পরমপুরুষ নরদেহ ধারণ করে তারকব্রহ্মরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তাঁর দিব্য আবির্ভাবে অধ্যাত্মবিদ্যা,শিক্ষা,চিকিৎসাশাস্ত্র,সঙ্গীত,নৃত্য,বিবাহব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা সবকিছুতেই একটা নোতুনত্বের ছাপ সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল৷ আমাদের কাছে তিনি সাধারণ মানুষ নন৷ তাঁকে আমরা শিব বলে চিনেছি,জেনেছি,মানুষের সমাজে তাঁর অবদানের কথা বলে শেষ করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়৷ তাঁর অনেক  অবদানের মধ্যে অন্যতম হল ‘তাণ্ডবনৃত্য’৷ এটি নারীদের জন্য নিষিদ্ধ  শিবের সময় এই নৃত্যের প্রচলন ছিল সর্বাধিক, কিন্তু কালের গতিতে এই নৃত্যের কথা মানুষ ক্রমশঃ বিস্মৃত হতে থাকল ও তা শিবের নটরাজমূর্তির মধ

ভয়ংকর সংকটে দেশ  - বাঙালী বাঙলার কথা ভাবুন

প্রভাত খাঁ

অত্যন্ত তিক্ততার সঙ্গে বলতে হয়  পৃথিবীর  বৃহত্তম লোকসংখ্যার নিরিখে ভারত যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র সংসদীয় বহুদলীয় গণতান্ত্রিক (?) রাষ্ট্র৷ এই রাষ্ট্রের সংবিধান  হলো আয়তনে সর্ববৃহৎ সংবিধান রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে৷ আর এটি শাসকগণদের  দ্বারা মাত্র ৭৩ বছরে  বিভিন্ন ধারার সংশোধন হওয়াতে সেটি  আরো বৃহত্তর হয়ে উঠেছে৷

বহিরাগতের প্রভাব ও ঐক্যের অভাবে অসমের ভূমিপুত্র বাঙালী বিপন্ন

এইচ এন মাহাত

ভবিষ্যতে অসমে বাঙালীদের কর্মসংস্থানের জন্য চাতক পাখীর  মতন তাকিয়ে থাকতে হবে ভারতের বহিরাগত অসমীয়াদের জন্য৷  অসমে বাঙালীরা বসবাস করে দুইটি নদী উপতক্যায়, ব্রহ্মপুত্র ভেলি ও বরাক ভেলি ধরে৷ সমগ্র অসম জুড়ে কয়েক দশক ধরে বহিরাগত  অসমীয়ারা প্রথমে ব্রিটিশ পরবর্তীতে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী রাজশক্তিকে  কাজে লাগিয়ে বঙাল খেদাও নামে অযৌক্তিক, অমানবিক বাঙালী বিদ্বেষী আন্দোলনে কত বাঙালীর প্রাণ নিয়েছে, কত মা বোনদের মান সন্মান ভুলুন্ঠিত করেছে অসম সরকারের মদতে ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নীরব সাক্ষী রেখে তার সঠিক হিসাব কেউ জানে না৷ কয়েক পুরুষের  জন্মভিটা থাকার পরেও বহু বাঙালী উদ্বাস্তু হয়ে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বসতি স্থ

বাঙালীয়ানা ও বিচ্ছিন্ন ভাবধারা প্রসঙ্গে কিছু কথা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

অদ্ভূত এক অন্ধগলিতে ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতের রাজনীতি৷ ক্ষমতার হাতবদল হয়,কিন্তু জনতার ভাগ্য বদল হয়না৷ কারণ ক্ষমতার হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার মধুচক্রের মক্ষীকারাও দল বদল করে বসে৷ একমাত্র ব্যতিক্রম ‘আমরা বাঙালী’৷ কিন্তু কেন?