কেন্দ্রের বর্তমান দিশাহীন আয়-ব্যয়মাতৃকা (বাজেট) কোনও আশার আলো তুলে ধরতে পারেনি

লেখক
প্রভাত খাঁ

এটি দেশের এক অপরিচ্ছন্ন ঘাটতি আয়-ব্যয়মাত্রিকা (বাজেট), যা কোটি কোটি মানুষের জীবনে কোনও আর্থিক উন্নয়নের দিশা দেখাতে পারবে না, কারণ এই আয়-ব্যয় মাত্রিকা  দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের কোনও পরিচ্ছন্ন দিশার সন্ধান দিতে পারেনি৷ এতে চরমভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে, নারী না পুরুষ কে বাজেট পেশ করলেন সেটা বড় কথা নয়, এই বাজেটে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি দুই টাকা করে তাতে সর্বক্ষেত্রে আরও মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েই গেল৷

এতে আর্থিক সংস্কারের কোনও পদক্ষেপ নেই, আর নেই ‘পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠা’র সার্থক প্রয়াস৷ এতে নেই কোনও ঘাটতি কমানোর বিশেষ উদ্যোগ৷ অর্থমন্ত্রী মাননীয়া নির্মলা সীতারামণ সঞ্চয়ে সুদের হার কমানোর কোনও প্রয়াসই দেখাতে সবম হননি৷ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমার দিকে৷ তবুও সরকার বাড়িয়ে দিল ডিজেল ও পেট্রোলের দাম৷ তাছাড়া আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সময় সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও নজর দেয়নি৷ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের আয়করের ব্যাপারে কোনও ঘোষণা নেই৷ বাজেটে আধার কার্ডে সরকার জোর করে জাতে তুলেছে আয়কর রিটার্নে একে মর্যাদা দিয়ে সরকার কিছু উক্তি করেছেন৷ তা হ’ল, অর্থবর্ষে তিন লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারে পরিণত করতে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে বিনিয়োগের পথ সৃষ্টি করবেন৷ পথের কিন্তু কোনও সুনির্দিষ্ট হদিশ দেওয়া হয়নি৷ অর্থমন্ত্রী কিএতে দারুণ ধোঁয়াশা রেখে গেলেন না? কৃষি ক্ষেত্রেও কৃষি-শিল্প ও কৃষি পণ্য পরিবহনের কথা আছে৷ কিন্তু তার কি কোনও পরিচ্ছন্ন নির্দেশনা আছে  দাম বেড়েছে সোনা ও রূপার, নিউজপ্রিণ্ট ও ম্যাগাজিন কাগজের, সাবানের কাঁচামাল-মশলার৷ এছাড়া আগেই বলা হয়েছে ডিজেল ও প্রেট্রোলের দাম বেড়েছে৷ এছাড়া আরও তেরোটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে৷ এগুলি সাধারণের ঘাড়ে চাপ দেবে না? আর দাম কমেছে পাঁচটির যথা---ইলেকট্রিক চালিত যানবাহনের যন্ত্রাংশের, ক্যামেরা মডিউল ও মোবাইল ফোনের চার্জার, বাড়ানো হয়েছে সেট টপ বক্সে ইত্যাদির৷

কেন্দ্রীয় বাজেটে সরকার রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্য মাত্রা কমিয়ে ৩.৩ শতাংশ করেছেন ৷ বিলগ্ণীকরণে ৯০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে৷ মহিলারা জনধন প্রকল্পের একাউণ্টে ৫,০০০ টাকা ওভারড্রাফট্ নিতে পারবেন৷ এছাড়া এক লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবেন৷ তাছাড়া গাড়ী কিনলে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়া দেওয়া হবে৷ ২০ টাকার কয়েন বের করা হচ্ছে৷ নেই আর্থিক সংস্কারের কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা, নেই পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতি হয়ে ওঠার  সুনির্দিষ্টি নির্দেশনা৷ অত্যন্ত বেদনার কথা কোটি কোটি মানুষের জন্য এই বাজেট যা নাকি ‘নতুন ভারত’ গড়ার বাজেট, তাতে নেই গরীব মানুষের ছিঁটেফোটা কোনও সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা৷   যা আছে তা হ’ল পরোক্ষ রক্তমোক্ষণের আর্থিক যন্ত্রণা৷