কলকাতায় কীর্ত্তন দিবস পালন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৮ই অক্টোবর কলকাতায় আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রমে ‘কীর্ত্তন দিবস’ পালিত হয়৷ এখানে উল্লেখ, ১৯৭০ সালের ৮ই অক্টোবর, রাঁচির সন্নিকটে আমঝরিয়ায় মার্গগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী  বাবা নাম কেবলম্’ এই মহামন্ত্র প্রদান করেছিলেন৷

এই উপলক্ষ্যে এদিন এখানে ৩ঘন্টাব্যাপী বাবা নাম কেবলম্’ এই সিদ্ধ মহামন্ত্রের অখণ্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রভাত সঙ্গীত ও অখণ্ড কীর্ত্তন পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন আচার্য শুভধ্যানানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ অভীষা আচার্যা অবধূতিকা আনন্দপুণ্যপ্রাণা আচার্যা প্রমুখ৷ নরেন্দ্রপুর আনন্দমার্গ শিশুসদনের শিশুরাও এই কীর্ত্তন পরিচালনায় ও কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করে৷  এরপর মিলিত সাধনান্তে বাবা নাম কেবলম্’ কীর্ত্তনের ইতিহাসের ওপর বক্তব্য রাখেন দিলীপ সরকার ও আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত৷

শ্রী দিলীপ সরকার বাবার গাড়ীর ড্রাইভার ছিলেন৷ সেই সূত্রে আমঝরিয়ায় বাবা যেদিন এই কীর্ত্তনমন্ত্র প্রদান করেছিলেন, সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলেন  ১৯৭০ সালের ৮ই অক্টোবর বাবা আমঝরিয়ায় ফরেষ্ট বাংলোতে গিয়েছিলেন৷ ভক্তপরিবৃত হয়ে বাবা বসেছিলেন৷ বাবা সামনে বসা ভক্ত আনন্দমার্গী ব্রহ্মদেবজীকে বললেন, মনোযোগ দিয়ে শোনবার চেষ্টা কর তো কিছু শুণতে পাচ্ছ কি না৷ ব্রহ্মদেবজী বললেন, একটা কীর্ত্তনের শব্দ শুণতে পাচ্ছি৷ বাবাঃ --- কী কীর্ত্তন? ব্রহ্মদেবজী খুব মনোযোগ দিয়ে শুনে বললেন,  বাবা নাম কেবলম্’, বলে অনেকে যেন মধুর সুরে কীর্ত্তন  করছে৷ ধীরে ধীরে এই কীর্ত্তনের শব্দ আরও স্পষ্ট হ’ল৷

উপস্থিত সবাই শুণতে পেল৷ বাবা বললেন--- মহাকাশ থেকে এই কীর্ত্তনধবনি আসছে৷ তখন সবাই মিলে মহানন্দে বাবা নাম কেবলম্’ কীর্ত্তণে মেতে উঠলেন৷

এ সময় একটা অদ্ভূদ্ অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেল৷ গ্যারেজে বাবার গাড়ীটা রাখা ছিল, সেটাও নিজে নিজে গড়িয়ে  এল কীর্ত্তনের দিকে৷ এটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল৷ বাবা বললেন, কীর্ত্তনের  মহাশক্তি জড়কেও  আকর্ষণ করছে৷

এরপর আচার্য সর্বেশ্বরানন্দজীর এই ঘটনার সঙ্গে আরও  কিছু যোগ করলেন৷ দাদা সর্বেশ্বরানন্দজীর বললেন, ওই ঘটনার  কয়েকদিন পরেই ছিল দীপাবলী৷ ওই দিন বাবা রাঁচী জাগৃতির  (আশ্রম) ছোট ঘরটিতে ভক্তদের সঙ্গে বসেছিলেন৷ বাবা বললেন, তোমরা যারা ধ্যান শিখেছ, তখন তারাই কেবল এখানে থাক৷ তারপর বাবা সবাইকে ধ্যান করতে বললেন ও চোখে খুলে রাখতে বললেন ৷ সবাই দেখল,  বাবার সমস্ত শরীর থেকে অপূর্ব জ্যোতি বেরুচ্ছে৷ তাকিয়ে থাকতেও  অসুবিধা হচ্ছে৷ বাবা এই অবস্থায় বললেন, এখন থেকে ‘আমি বাবা নাম কেবলম্’ এই অষ্টাক্ষরীয় মহামন্ত্রটিকে সিদ্ধমন্ত্র হিসেবে ঘোষনা করলুম৷ যারাই প্রাণভরে এই কীর্ত্তন করবে বা শুনবে,তাদের সবার আধ্যাত্মিক উন্নতি হবে ও এই কীর্ত্তন জীবনের সর্বভূমিতেই মানুষকে সাহায্য করবে ও মানুষের সর্ববিধ দুঃখক্লেশের অবসান ঘটাবে৷

অনুষ্ঠানে কীর্ত্তনের ইতিহাসের ওপর আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূতের তৈরী একটি ভিডিও ফিল্মও প্রদর্শিত হয়৷ এটি পরিবেশন করেন আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত৷ সবশেষে সবাই মিলিতভাবে প্রসাদ গ্রহণ করেন৷