কোণার্ক

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

কোণূর্কঞ্চকোণার্ক৷ ‘অর্ক’ মানে সূর্য্য৷ ‘কোণার্ক’ শব্দের একটি অর্থ হ’ল সূর্য্যরশ্মি৷ ‘কোণার্ক’ শব্দের অপর অর্থ হ’ল সৌরকরের প্রতিফলন বা প্রতিবিম্বন৷ সমুদ্রতীরস্থিত সুপ্রসিদ্ধ ‘কোণার্ক’ মন্দিরটিও একটি সৌর মন্দির৷ ভারতের বিভিন্ন স্থানে শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণেরা (কেউ কেউ শাকল দ্বীপীও বলেন৷ এঁরা আসলে দক্ষিণ রাশিয়ার স্যাকডোনিয়া অর্থাৎ শাকদ্বীপ–এর অধিবাসী ছিলেন৷ পরে ধর্মগত চাপে তাঁরা দেশত্যাগী হতে বাধ্য হন ও ভারতে আশ্রয় নেন) ছিলেন জ্যোতিষ চর্চাকারী৷ এঁরা একাধারে ছিলেন জ্যোতিষী ও জ্যোতির্বিদ৷ গ্রহদেবতা সূর্য্য ছিলেন এঁদের উপাস্য অর্থাৎ ধর্মমতে এঁরা ছিলেন সৌর৷ ভারতের যে সকল অঞ্চলে এককালে যথেষ্ট সংখ্যা শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণেরা ছিলেন সেই সমস্ত অংশে আজও প্রাচীনকালের নির্মিত সূর্য্যমন্দির রয়ে গেছে৷ এঁরা যে অঞ্চল থেকে এসেছিলেন সে অঞ্চলের পোষাক ছিল ঢ়িলেঢ়ালা পায়জামা......মাথায় ফেজটুপী......মানুষের হাতে থাকত তসবী বা জপমালা (Rosary)৷ তাই সূর্য্যমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত সূর্য্যমূর্ত্তিগুলির পোষাক হত এই ধরণের৷ ভারতের কোণার্ক মন্দিরের সংখ্যা খুব বেশী না হলেও খুব কমও নয়৷ এদের মধ্যে স্থাপত্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হ’ল উৎকলের কোণার্ক মন্দির ও প্রাচীনতায় ও বিভূষণে যতদূর মনে হয় সবচেয়ে আকর্ষক হচ্ছে কশ্মীর উপত্যকার অনন্তনাগ জেলার মার্তণ্ডমন্দির৷ মগধের গয়া জেলাতেও (বর্ত্তমানে সাবেকী গয়া জেলা ত্রিধাবিভক্ত) এই ধরণের সূর্য্যমন্দির রয়েছে৷ তার পাশেই শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণদের বাস৷

(শব্দ চয়নিকা, ৮/২৬)