কৃষি আইনে কর্ষকের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না - চাই বাস্তবমুখী পরিকল্পনা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

কর্ষক আন্দোলনে পর্যদস্তু কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তি পেলেন৷ কার্যত আন্দোলনে অবরূদ্ধ সরকার একটা বেরোবার রাস্তা বার করলেন৷ কৃষি আইনের ওপর মতামত জানাতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন ‘আমরা বাঙালী’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ৷ তবে সুপ্রিম কোর্টের রায় কতটা কার্যকর হবে সে ব্যাপারেও সন্দিহান শ্রী দাশ৷ তিনি বলেন আন্দোলনরত কর্ষকরা সুপ্রিমকোর্টের রায় কে ভালো চোখে দেখছেন না৷ আইন রূপায়ণে সুপ্রিমকোর্ট স্থগিত আদেশ দিলেও সরকার ও আন্দোলনরত কর্ষকদের বক্তব্য শোনার জন্যে সুপ্রিমকোর্ট যে চার সদস্যের কমিটি তৈরী করেছে বিতর্ক দানা বেঁধেছে তাদের নিয়েও৷ যে চারজন কে নিয়ে কমিটি তৈরী হয়েছে তাঁদের দু’জন হলেন কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি ও প্রমোদ জোশী৷ দুজনেই এই কৃষি আইনের কট্টর সমর্থক৷ এঁরা একাধিকবার কৃষি আইনের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন৷ অপর দুজন কর্ষক নেতা ভূপেন্দ্র সিংহমান ও  অনিল ধনওয়াত আগেই কৃষি আইনে সমর্থন জানিয়ে কৃষি মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে৷ শ্রী জয়ন্ত দাশ বলেন এমন চার জনকে নিয়ে কমিটি তৈরী হয়েছে যাদের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ জাগতেই পারে৷ আন্দোলনরত কর্ষকরা জানিয়েও দিয়েছেন তাঁরা তাঁদের বক্তব্য রাখতে কমিটির কাছে যাবেন না৷  আন্দোলনরত কর্ষকরা মনে করছেন সুপ্রিমকোর্টের এই রায় ও কমিটি তৈরী কর্ষকদের সামনে আন্দোলন ভাঙার ফাঁদ৷ প্রশ্ণ উঠছে কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়েও৷ কারণ কমিটির চারজনই ইতিমধ্যে কৃষি আইনের পক্ষে স্পষ্টমত দিয়েছেন৷ এদের নিয়ে কমিটি  একটা প্রহসন বলে মনে করছেন আন্দোলনরত কর্ষকরা৷ শ্রী দাশের বক্তব্য এইধরনের সমস্যা সমাধানে নিরপেক্ষ ব্যষ্টিদের নিয়ে কমিটি করা উচিত ছিল৷  কমিটির ভূমিকা নিয়ে তো সন্দেহ জাগছেই, এই কমিটি ঘটনে বিচার ব্যবস্থার প্রতিও মানুষ আস্থা হারাবে৷ পরিশেষে শ্রী জয়ন্ত দাশ বলেন এই আইন ও আন্দোলন কোনটাই কৃষি সমস্যা সমাধানের পথ নয়, তিনি বলেন শুধু অর্থনীতি নয়, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি,এমনকি খেলাধূলার জগৎটাও পুঁজিপতিদের কুক্ষিগত হয়ে গেছে৷ ধনকুবেরদের শোষণের জাল সমাজের সর্বস্তরে বিছানো আছে৷ এই অবস্থায় শুধু কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বা কৃষি আইনের পরিবর্তন করে কোন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন এই পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রীত অর্থনীতির বিনাশ ঘটিয়ে অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন করতে হবে বিকেন্দ্রীত আর্থিক পরিকল্পনার মাধ্যমে৷ কৃষিব্যবস্থা সম্পূর্ণ সমবায়ের আওতায় এনে কৃষিকাজ, কৃষিভিত্তিক শিল্প, কৃষি সহায়ক শিল্প গড়ে বাস্তবমুখী আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে৷ তাতেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সার্বিক কল্যাণ হবে৷ কৃষি সমস্যা সমাধানে ও বাস্তবমুখী আর্থিক পরিকল্পনার সুস্পষ্ট পথ নির্দেশনা আছে শ্রদ্ধেয় দার্শনিক  শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের প্রগতিশীল উপযোগতত্ত্বে৷ এর বাইরে অন্য কোনো পথ আজ আর নেই৷