লীলাময়

লেখক
জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

কোন্ সে অনাদিকালে লীলাচ্ছলে---

অসীম তুমি, ধরা দিলে বৈচিত্র্যের সীমায়

প্রকৃতির গণ্ডী এঁকে নিলে বিরাট ভূমাসত্ত্বায়৷

রস-সমুদ্রে সত্ত্ব-রজঃ-তমের গুণবন্ধনে

সঞ্চরের পথ ধরে’ সৃষ্ট হ’ল জগৎ

ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোম৷

প্রকৃতির প্রচণ্ড উগ্রতায় আরও

বাঁধতে চাইলে তোমায় আষ্টেপৃষ্ঠে,

শুভারম্ভ প্রতিসঞ্চরের পালা, জডস্ফোটে৷

সর্জনকেন্দ্রে নিহিত শক্তির প্রাবল্যে

জাগলো প্রাণের স্পন্দন---

বিকশিত এককোষী থেকে বহু-বহুকোষী অবয়ব৷

প্রবহমান বিবর্তনের ধারা বেয়ে

উজ্জীবিত উন্নত মননের উন্মেষ---

জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উত্তরণ---এলো মানুষ৷

পরমাত্মার প্রতিবিম্ব সর্বদা বিচ্ছুরিত

জীবাত্মার গহন নভোপটে৷

তোমার বিচিত্র রূপকল্পে

বিধৃত পৃথিবীর বিরাট রঙ্গশালা৷

লীলানন্দে বিভোর লীলাময়---

কোথাও লোভ-লালসা, কামনার তীব্র দহন

অন্যদিকে ত্যাগ-বৈরাগ্য, অধ্যাত্ম-রতন

হৃদয়ে বিবেকবুদ্ধি, প্রেম-প্রীতির অনুরণন৷

বিদ্যা-অবিদ্যা, ধর্মাধর্মের নিয়ত সংগ্রামে

পাশ-রিপু-বৃত্তির দংশন অবহেলে

মুক্তি পিপাসু মানুষ যখন অন্তরের অন্তঃস্থলে

সাধনা, ত্যাগ, সেবার মশাল জ্বালে

তুমি তখন তার দু’হাত ধরে, করুণাভ’রে

টেনে নাও তোমার মধুময় ক্রোড়ে---

কোটি জন্ম মৃত্যুর অবিরাম চলার অবসানে

অনন্ত ওঁঙ্কারের শাশ্বত প্রশান্ত গুঞ্জরণে

সমাহিত হয় পরম আনন্দ পারাবারে৷