মুর্শিদাবাদ জেলার নবীপুর আনন্দমার্গ স্কুলে কৃষ্ণনগর সেকেণ্ড ডায়োসিস সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

অধ্যক্ষ্যা অবধূতিকা আনন্দ তপারতি আচার্যার উদ্যোগে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাবৃন্দের ঐকান্তিক সহযোগিতায় ৮,৯, ১০ই মার্চ মুর্শিদাবাদ জেলার নবীপুর আনন্দমার্গ স্কুলে সাড়ম্বরে কৃষ্ণনগর ডায়োসিসের সেকেণ্ড ডায়োসিস সেমিনার অনুষ্ঠিত হ’ল৷ ৮ই মার্চ মানবমুক্তির মহামন্ত্র ‘বাবা নাম কেবলম্’ অখণ্ড কীর্ত্তনের (তিন ঘণ্টা) মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়৷ শতাধিক আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের সদস্য-সদস্যা  সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন৷ প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘যোগ ও তন্ত্র ও কেবলাভক্তি’ / ‘আনন্দমার্গ এক বিপ্লব’ এই দুটি বিষয়ের ওপর ক্লাস নেন আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের প্রবীণ সন্ন্যাসী তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত৷ ক্লাস নিতে গিয়ে তিনি বলেন,---পরমপুরুষের উপলব্ধির জন্যে  সাধকের যোগ, তন্ত্র ও কেবলাভক্তি একান্ত অপরিহার্য৷ যদিও একটা কথা ঠিক যে, ভক্তি বা কেবলাভক্তির মাধ্যমে পরমপুরুষের প্রাপ্তি সম্ভব৷ যোগ ও তন্ত্র দুইয়েতেই জ্ঞান, কর্ম ও ভক্তি তিনটেই রয়েছে৷ যোগের সবচেয়ে যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা হচ্ছে ‘সংযোগো যোগ ইত্যুক্তো’৷ আনন্দমার্গের শ্রেষ্ঠত্ব হ’ল আনন্দমার্গের প্রতিটি বিষয়েই অভিনবত্ব বহন করে৷

এছাড়া সহকারী প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট প্রাউটিষ্ট তথা শিক্ষাব্রতী শ্রীমনোরঞ্জন বিশ্বাস তিনি ‘প্রমা’-এর ওপর ক্লাস নিতে গিয়ে বলেন---প্রমা শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ হ’ল প্র-মা+ ড+ টা= প্রমা ‘মা’ ধাতুর অর্থ মাপা বা পরিমাপ করা৷ ‘প্রমা’ শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে ভারসাম্য৷ জাগতিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক---জৈবী সত্তা এই ত্রিভৌমিক৷ এই তিনকে নিয়ে তৈরী হয় সত্তার ‘প্রমা’-ত্রিকোণ বা লোক ত্রিকোণ৷

ক্লাস নিতে গিয়ে শ্রীগৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য বলেন, মানুষের জীবনে দু’টো দিক রয়েছে---একটা হ’ল আত্মগত দিক, অপরটি বস্তুগত দিক৷ অর্থাৎ অত্মোন্নতি ও জগৎ কল্যাণ৷ তন্ত্রে বলা হয়েছে আত্মমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ, একটি অপরটির পরিপূরক৷ সাধারণ মানুষ বস্তুগত দিকে ব্যস্ত থাকলেও সেই মানুষই আবার ভাবে, কোথায় পাবো তাঁকে৷ আধ্যাত্মিকতা সেই মানুষকে সত্যিকারের উন্নত মানসিকতায় প্রতিষ্ঠিত করে৷ 

সেমিনারে তিন দিনই নগরকীর্ত্তন, প্রভাত সঙ্গীত, বাবা নাম কেবলম কীর্ত্তন, মিলিত সাধনা হয়৷

সেমিনারে উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে থেকে আনন্দমার্গ দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ৯ জন আনন্দমার্গের সাধনা শেখেন৷

প্রভাত সঙ্গীত ও কীর্ত্তন পরিচালনা করেন ব্রহ্মচারিণী অনন্যা আচার্যা, শ্যামলী সরকার, তাপসী সাহা, ডাঃ বৃন্দাবন বিশ্বাস, অবধূতিকা আনন্দ বিভূকণা আচার্যা প্রমুখ৷

আচার্য বিশ্বেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য বিশ্বোত্তরানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ সুধাকল্পা আচার্যা, ব্রহ্মচারিণী রত্নদীপা আচার্যা, ব্রহ্মচারিণী সমর্পিতা আচার্যা, অবধূতিকা আনন্দ পূর্ণজ্যোতি অচার্যা (আর.এস.এল, কলকাতা) ও উপস্থিত আনন্দমার্গের সদস্য-সদস্যাবৃন্দের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় সেমিনারটি সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷