নির্বাচনী প্রচারে ‘আমরা বাঙালী’র প্রধান দাবী - অর্থনৈতিক গণতন্ত্র ও বাংলা ভাষার মর্যাদা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

‘আমরা বার্র্ঙলী’র কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা বাঙালী একটা আদর্শের জন্য লড়াই করছে৷ মুখ্যতঃ ‘আমরা বাঙালী’ যে দাবীগুলি মানুষের সামনে তুলে ধরছে, তা হ’ল---প্রথমতঃ অর্থনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের নূন্যতম চাহিদা পূরণের গ্যারাণ্টি অর্থাৎ যুগোপযোগী অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের গ্যারাণ্টি দেওয়া ও উত্তরোত্তর তাদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি৷ আর দ্বিতীয় মুখ্য দাবী হ’ল---বাঙালীস্তানের অর্থাৎ সমসত্মত বাংলা ভাষা-ভাষী এলাকায় সরকারী সমস্ত কাজে অফিস-আদালতে মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করা৷ এতে বাঙলার সংস্কৃতি ও সভ্যতা রক্ষা পাবে৷ তার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র নৈতিক তথা আধ্যাত্মিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া৷

‘আমরা বাঙালী’ নেতা বলেন, আগামী ১২ই মে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, টাটানগর ও ধানবাদে নির্বাচন হচ্ছে ও ওই কেন্দ্রগুলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যথাক্রমে রবীন্দ্রনাথ বেরা, লক্ষ্মীকান্ত মাহাত, অঙ্গদ মাহাত ও মনোতোষ মণ্ডল৷

তাঁদের সমর্থনে সর্বত্রই জোর প্রচার চলছে৷ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুড়ি, নোংরা ভাষা ব্যবহার এসব ‘আমরা বাঙালী’র নেতা-নেত্রীরা করেন না, তাঁরা আমরা বাঙালীর আদর্শকেই মানুষের সামনে তুলে ধরছেন, এলাকার প্রকৃত সমস্যা সে বাঙলার হোক বা ঝাড়খণ্ডের হোক মানুষের সামনে তুলে ধরে প্রাউট দর্শনের মাধ্যমে এই সমস্যার কী সমাধান তাই ব্যক্ত করছেন৷ বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যেভাবে পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে হিংসা, দ্বেষ ছড়াচ্ছে---আমরা বাঙালী তার নিন্দা করে৷ আমরা বাঙালীর বক্তব্য, এতে বরং বাঙালী জাতির সর্বনাশ হচ্ছে, কারণ এতে বাঙালী ঐক্য---বাঙালী সংহতি ধবংস হচ্ছে৷

আমরা বাঙালীর পক্ষ থেকে ১২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনী এলাকা যেমন মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখছেন বকুল চন্দ্র রায়, তারাপদ বিশ্বাস, প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ বেরা, খুশী মণ্ডল, সৌরভ মালিক, গঙ্গা পাত্র, রামপদ হাঁসদা, বাসুদেব মণ্ডল, শঙ্কর প্রসাদ কুণ্ডু, রাজু মান্না প্রমুখ৷ এঁরা মেদিনীপুর, খড়গপুর, কেশিয়ারী, নারায়ণগড়, দাঁতন, এগরা প্রভৃতি এলাকায় নির্বাচনী সভা করছেন৷

পুরুলিয়া কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে আমরা বাঙালীর নির্বাচনী সভাগুলিতে বক্তব্য রাখছেন বিভূতি দত্ত, প্রার্থী লক্ষ্মীকান্ত মাহাত, বিদ্যুৎ কুমার, রতন মাহাত, প্রদীপ সরকার, রঞ্জিত কুমার, রামপদ মাহাত, শক্তি গড়াঞ, দশরথ টুডু, বনমালী মাহাত, শুভম্ মাহাত, অমরেন্দ্র মাঝি প্রমুখ৷ আমরা বাঙালীর নির্বাচনী সভা হয়েছে পুঞ্চা, হুড়া, লালপুর, বিশপুর, কালীপুর, বাঘমুণ্ডি, সুইসা, গাগী, চেমেন্দি, জয়পুর, কোটশিলা, ছটকা, ডিমডিহা, ঘাঘরা, পুন্দাগ, সিধি, রোপো, নামরা, চিরাডি, নোয়াহাতু, চিতমু, বড়রোলা, শ্যামপুর প্রভৃতি স্থানে৷

টাটানগরের প্রার্থী অঙ্গদ মাহাতর সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে ‘আমরা বাঙালী’ র নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখছেন আশিস নাগ চউধুরী, নারায়ণ সেন, মোহনলাল রজক, সুনীল মাহাত, কেয়া মাহাত, তপেন্দ্র সরকার, তুহীন বিশ্বাস, জয়শ্রী মাহাত, দেবযানী বিশ্বাস প্রমুখ৷ র্বিাচনী সভা হয়েছে বহরাগড়া, ঘাটশিলা, চাকুলিয়া, ধলভূমগড়, মশাবনি, পটমদা, বড়াম, যুগসলাই জামশেদপুর শহর প্রভৃতি স্থানে৷

বোকারোতে (ঝাড়খণ্ড) ‘আমরা বাঙালী’ প্রার্থী মনোতোষ মণ্ডলের সমর্থনেও সমস্ত নির্বাচনী এলাকা জুড়ে প্রচার চলছে৷ প্রার্থী মনোতোষ মণ্ডল ছাড়া ওই নির্বাচনী সভায় প্রধান বক্তারা হচ্ছেন নিতাই মণ্ডল, চক্রধর কালিন্দী, প্রভু প্রসাদ প্রমুখ৷ নিরসা, চাষ, বোকারো প্রভৃতি  স্থানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সভায় তাদেরন্যতম প্রধান দাবী হ’ল ঝাড়খণ্ডে ৬৫ শতাংশ বাঙালী, অথচ এই রাজ্যে সরকারী কাজকর্মে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বাংলা ভাষার স্থান নেই৷ বাঙালী হয়েও এই রাজ্যের বাঙালীরা মাতৃদুগ্দ সম মাতৃভাষা থেকে বঞ্চিত৷ এটা হিন্দী সাম্রজ্যবাদী শোষণ ছাড়া আর কিছু নয় এই শোষণের বিরুদ্ধে আমরা বাঙালীর নেতারা প্রতিটি জনসভায় সরব হন৷ তাছাড়া, ধানবাদ ও বোকারো অঞ্চল শিল্প সমৃদ্ধ হলেও এই অঞ্চলের বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে স্থায়ী অধিবাসীদের বেকারত্ব ঘুচছে না৷ বহিরাগতরা এসে ওই সব শিল্পে কাজ করছে৷ স্থানীয় মানুষেরা চরম দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করছে৷ প্রাউটের নীতিতে ব্লকভিত্তিক পরিকল্পনা ও সমবায় শিল্পই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান৷