নূতন বঙ্গাব্দের প্রত্যাশা

লেখক
জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

বিগত বছর নিয়েছে বিদায় চৈত্রের সাথে---
নবারুণ রাগে নব সাজে নববর্ষের আগমন, 
নব উদ্দীপনায় নব আনন্দে নূতন প্রভাতে 
নব অঙ্গীকারে সবে নূতন বছর করিছে বরণ৷
১৪২৩ বঙ্গাব্দের অবসানে ১৪২৪-এর পদার্পণ৷ নূতনের ছোঁয়ায় মানুষের মন আনন্দে উদ্বেল, নূতনকে বরণ করে নিতে সকলের সাধ্যমত আয়োজন৷ নূতন পোষাকে দেবালয়ে আগামী দিনের মঙ্গলকামনায় প্রার্থনা, একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে উন্মুখ, বাঙালী সংসৃকতির চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী দিকে দিকে বর্ষবরণের বিভিন্ন অনুষ্ঠান৷ এই দিন নূতন উদ্দীপনায় জেগে ওঠার দিন, পুরাতনকে ভুলে নূতন উদ্যমে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করার দিন৷ পুরাতনের জীর্ণ স্তূপের ওপরেই গ্রথিত হয় নূতন স্বপ্ণের মিনার, অনাগত ভবিষ্যৎকে গড়ে তোলার নূতন অঙ্গীকার৷ আসুন আজ এই পুণ্যদিনে আমরা সকলে মিলে পৃথিবীকে ভেজাল ও দূষণমুক্ত করার শপথ নিই৷ আজকের পৃথিবীতে ভেজাল ও দূষণ হচ্ছে একমাত্র পরম শক্তিধর, সর্বব্যাপী, সর্বগ্রাসী এক কার্যক্রম যার দ্বারা প্রভাবিত হয়নি এমন কোনও মানুষ নেই৷ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, যেমন খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, পরিবেশ, অর্থনীতি, রাজনীতি প্রতিটি বিভাগেই দূষণ ও ভেজালের রাজ্যপাট সুবিস্তৃত৷ 
এখন দেখা যাক ভেজাল জিনিসটা কী! ---যখন কোনও বস্তু বা ভাবনার সঠিক রূপ অন্য কোনও নিম্নস্তরীয় বস্তু বা ভাবনার সংমিশ্রণে বিকৃত হয় ও কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে ব্যবহৃত হয়ে বৃহত্তর সমাজের ক্ষতিসাধন করে তখনই সেই কার্যক্রমকে আমরা ভোজল রূপে অভিহিত করি৷ আর অ-পরিকল্পিত নগরায়ন, তথাকথিত উন্নয়ন, শিল্পায়ন, উষ্ণায়ন, অরণ্য সম্পদ ধবংস ও বিভিন্ন কারণে বহুবিধ দূষণের কুফল ইতোমধ্যেই সর্বজনবিদিত ও অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত৷
খাদ্য হিসেবে আমরা বাজারে, দোকানে যা কিছু পাই তার বেশীরভাগই ভেজাল সমৃদ্ধ৷ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে ও ইতোপূর্বে বিভিন্ন সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, খাদ্যশষ্যের ফলনকে মাত্রাতিরিক্ত বাড়ানো ও লোকচক্ষুর সামনে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যে ব্যাপক রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করা হয়৷ শাক-সব্জি, ফল-মূল, আনাজ-পাতির ক্ষেত্রেও এর অন্যথা নেই৷ বিভিন্ন রকমের রাসায়নিক, হরমোন ইনজেক্শন, রঙ ইত্যাদির প্রয়োগে উৎপাদিত বস্তুর আকার বৃদ্ধি ও আকর্ষণীয় করার প্রয়াসে ব্যবহারকারীর পক্ষে ক্ষতিকর করে তোলা হচ্ছে৷ ভোজ্য তেল, ঘি, দুধ, দই, মিষ্টান্নও সেই প্রক্রিয়ার বাইরে নেই৷ এমনকি শিশুখাদ্য ও পানীয়গুলির ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি সমানভাবে পরিলক্ষিত৷ সুতরাং উদরপূর্ত্তি কিংবা পুষ্টির জন্য আমরা যা গ্রহণ করি তার বেশীরভাগই এই দোষে দুষ্ট, যার ফল ভুগতে হয় আপামর জনগণকে৷ 
মানুষ বহুবিধ কারণেই রোগ অসুখের শিকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে৷ যে ঔষধ সেবন করলে মানুষের রোগ-দুর্ভোগ কমে, বর্তমানে সেই ঔষধের মধ্যেও বিভিন্ন ভাবে ভেজাল প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ হয় মোড়কে বা বোতলে ঔষধের পরিবর্তে অন্য পদার্থের মিশ্রণ বা সামগ্রিকবাবে অন্য পদার্থ থাকছে---নয়তো মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধগুলির লেবেলে জাল তারিখ বসিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে৷ ফলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা বিভ্রাটের সম্মুখীন হচ্ছে৷ রোগ নির্ণয়ের জন্য যেসব মূল্যবান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় সেখানেও অনেক ক্ষেত্রে জাল রিপোর্ট (অনেক সময় পরীক্ষা না করেই) সরবরাহ করা হয়৷ এই সমস্ত কারণে রোগ নিরাময়ের পরিবর্ত্তে মানুষের নানারকমের সমস্যার সৃষ্টি হয় ও অর্থের অপচয় হয়৷ পেস্মেকার, শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র, চশমা ইত্যাদি সহায়ক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও দেখা যায় অধিক লাভের আশায় নিম্নমানের যন্ত্রপাতি প্রদান করে রোগীর অসুবিধা বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে৷ এছাড়া বড় বড় হাসপাতালগুলি প্রকৃত সেবাকেন্দ্রের পরিবর্তে সেবার নাম করে বিভিন্ন অছিলায় রোগী ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনের অর্থ শোষণের কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত৷ 
পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অরণ্য সম্পদ ধবংস করে জনবসতি স্থাপনের যে ব্যাপক প্রয়াস চলেছে, তার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পরিবেশ দূষণ ও উষ্ণায়নের মাত্রা চরমভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এছাড়াও বাসস্থান তৈরী করবার জন্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী (ইট, কাঠ, সিমেণ্ট, লোহা ইত্যাদি) ব্যবহারের ফলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত ও বিপদ্গ্রস্ত হচ্ছে৷ পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও রাস্তাঘাট, সেতু, উড়ালপুল ইত্যাদি নির্মাণেও সঠিক মানের সামগ্রী ও দক্ষতার অভাবের ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হচ্ছে ও তার ফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ৷ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যত্র-তত্র অবিজ্ঞানসম্মত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, পরিবহন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে মারাত্মক দূষণ৷ 
এছাড়া ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কারণে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত রাখার ফলে মানুষকে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে৷ কুশিক্ষার প্রভাবে সমাজের একটা বড় অংশকে শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট  হতে হয়৷ রাজনীতির ঘেরাটোপ থেকে শিক্ষাকে মুক্ত না করতে পারলে মানুষ’ কিছুতেই সুশিক্ষিত হয়ে উঠতে পারবে না ও অন্ধ-কুসংস্কার তথা ভাবজড়তার নিকষ অন্ধকারের বাইরে আসা অসম্ভব হয়ে উঠবে৷ তাই শুধুমাত্র শিক্ষাব্রতীদের পরিচালনায় সুপরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে ও তার সমস্ত ব্যয়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে৷ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানুষ তৈরীর কেন্দ্রের পরিবর্তে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার প্রবণতাকে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ বর্তমান পৃথিবীতে প্রচলিত অর্থনীতি ও রাজনীতি বিশেষ কিছু শ্রেণীর কল্যাণে ও অঙ্গুলিহেলনে পরিচালিত হওয়ার ফলে সমাজের বৃহৎ জনগোষ্ঠী অবহেলিত ও শোষিত হতে থাকে৷ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করার জন্যে তারা সমগ্র সমাজের ওপর শোষণের ষ্টীম রোলার চালাতেও পিছপা হয় না৷ যার ফলে একশ্রেণীর মানুষের হাতে সমস্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় আর বাকীরা অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে বাধ্য হয়৷ পৃথিবীর সীমিত সম্পদ ভোগবাদীদের অনন্ত ভোগলিপ্সাকে চরিতার্থ করতে সমর্থ না হওয়ার দরুণ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়৷ সীমিত পার্থিব সম্পদকে করায়ত্ত করার সীমাহীন প্রয়াসের কারণেই চলেছে দেশে দেশে, মানুষে মানুষে চরম প্রতিযোগিতা যার বিষময় ফল হিসেবে সমাজে বেড়ে চলেছে হানাহানি, রেষারেষি, হিংসা ও বহুবিধ অসামাজিক কাজকর্ম৷ এমনকি বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও আজ নানা কারণে বিপদ্গ্রস্ত৷ শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা গুপ্তচর সেনাবাহিনীতে ছদ্মবেশে প্রবেশ করে বিশ্বাসঘাতক সৈন্য সামন্তের সাহায্যে বহু দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে৷ এছাড়াও ধর্ম-সম্প্রদায়ের নামে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় জঙ্গী সংঘটনগুলি মানবতা ও বিশ্ব-শান্তির পক্ষে ভয়ঙ্কর অভিশাপের আকারে দেখা দিয়েছে৷ এর ফলে প্রতিদিন শত শত মানুষ হতাহত হয়ে চলেছে৷ 
বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, মানুষের সীমাহীন লোভই এই সমস্ত সমস্যার মূল কারণ৷  ‘আরও চাই আরও চাই’---মনোভাবের কারণে যে কোনও নীচতাপূর্ণ হীন কাজ করতে আজ মানুষ পিছপা নয়৷ একমাত্র ভোগ বাসনা চরিতার্থ করা, কুক্ষিগত অর্থের পাহাড় গড়ে তোলা ও অন্যকে পদানত করে রাখার প্রবণতা মানুষকে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনের প্রতি প্রলুব্ধ করে৷ এমতাবস্থায় মানুষের মনকে কঠোর অনুশাসনের মধ্যে না বাঁধতে পারলে পৃথিবীতে একদিন রক্তগঙ্গা বইবে ও মনুষ্য জাতিই ক্রমশঃ বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাবে৷ ধনতন্ত্র, তথাকথিত সমাজতন্ত্র, কম্যুনিজম্, বিভিন্ন ধর্মমতগত বা জাতিভেদ প্রথা কোনভাবেই মানুষের সমাজকে বাঁচাতে সক্ষম হবে না কারণ এই মতবাদগুলির কোনটিতেই মানব সমাজকে সামগ্রিকভাবে দেখবার দৃষ্টিভঙ্গি নেই৷ বরং এই মতবাদগুলি সমগ্র সমাজকে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে ধবংস করে দিতে উদ্যত৷ যার ফলে দেশে দেশে মাঝে-মধ্যেই জাতিদাঙ্গা, সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও সম্প্রীতির অভাব পরিলক্ষিত হয়৷ 
বর্তমান সমাজকে ধংসোন্মুখ অধোগতির হাত থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র ‘প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব’(Progressive Utilization Theory) বা সংক্ষেপেProut (প্রাউট)৷ প্রাউট প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার প্রাউট দর্শনের মাধ্যমে সমাজে সামগ্রিক সুসামঞ্জস্য বিধানের পথ-নির্দেশনা দিয়েছেন৷ সমাজের সমস্ত সমস্যার মূল কারণ মানুষের অনন্ত ভোগলিপ্সা৷ শুধুমাত্র আইন-কানুনের কঠোরতা দিয়ে মানুষের এই প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়৷ মানুষের মনের অনন্ত ক্ষুধাকে পরিতৃপ্ত করবার ক্ষমতা সীমিত পার্থিব বস্তুর নেই৷ অসীম তৃষ্ণাকে একমাত্র অনন্ত সত্তাই পরিতৃপ্ত করতে পারে৷ তাই মানুষের এই অনন্ত চাওয়াকে অনন্ত মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্তরে প্রধাবিত করার ব্যবস্থা করে সীমিত ভৌতিক সম্পদকে সর্বাধিক উপযোগের মাধ্যমে সকল মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে৷ বিশ্ববিধাতার সৃষ্টি এই পার্থিব সম্পদে পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্ট সত্তার অধিকারকে স্বীকার করে নিয়ে প্রাউট তত্ত্ব অনুযায়ীই সকলের স্বার্থে সুষম ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বণ্টন করতে হবে৷ অনন্ত আধ্যাত্মিক সম্পদের আস্বাদনে মানুষের মন শান্ত হবে ও অনন্ত সুখের সন্ধান পাবে৷ শুধু তাই নয়, নিরন্তর বৃহতের ভাবনায় মনকে সম্পৃক্ত রেখে আধ্যাত্মিক চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত করতে পারলে ভৌতিক সম্পদের প্রতি অত্যধিক আসক্তিও ক্রমশঃ কমে যেতে থাকবে৷ ফলে ভৌতিক সম্পদ কুক্ষিগত করবার অভিপ্রায়ে অশান্তি, হিংসা, হানাহানির আশঙ্কাও বহুলাংশে হ্রাস প্রাপ্ত হবে৷ সমাজে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হবে৷ 
মানুষের সমস্ত সমস্যার মূলে রয়েছে মনের অস্থিরতা ও এই অশান্ত মনের জন্য সমাজে অশান্তির পরিবেশ দেখা দেয়৷ মন যদি শান্ত থাকে, তৃপ্ত থাকে, তবে সমাজে অশান্তি বা হিংসার আশঙ্কা থাকবে না৷ ফলে মানুষের হীন স্বার্থবুদ্ধিও ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে৷ তখন আর অর্থের লোভে ভেজাল করার প্রয়োজন দেখা দেবে না৷ মানুষের সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর ভেজাল মেশানো বা দূষণ ছড়ানোর ব্যাপারে মানুষ অনেক বেশী সতর্ক হবে৷ নব্যমানবতাবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষ সমগ্র সৃষ্টিকে পরমপিতার বহুধাবিকশিত প্রকাশ ভেবে সমস্ত জীব-জড়-উদ্ভিদ-জঙ্গম-এর সঙ্গে প্রকৃত ব্যবহার করতে সমর্থ হবে৷ সুশিক্ষা ও সঠিক পথনির্দেশনার ফলে সমাজের জন্যে ক্ষতিকর বিষয়গুলি বিলুপ্ত হবে৷ তাই নববর্ষের এই দিনগুলিতে আমাদের অঙ্গীকার হোক---ভেজাল মুক্ত পৃথিবী, সর্বপ্রকার দূষণমুক্ত পৃথিবী, নব্যমানবতার আদর্শে গড়ে ওঠা নোতুন পৃথিবী --- যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিঃশঙ্ক, সুন্দর, শোষণমুক্ত জীবন-যাপনের সুযোগ পাবে৷ আর এর জন্যে পৃথিবীর সকল মানুষকে এক সঙ্গে প্রাউট দর্শনের প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে৷  ‘‘সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে’’---এই নীতির পরিপূর্ণ রূপায়ণে প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ ভৌতিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক সর্ববিধ বন্ধনমুক্ত হবে ও ‘আত্মমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চঃ’----এই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জগৎ কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করে সত্য ও সুন্দরের পথে সার্বিক মুক্তির প্রয়াসে অগ্রসর হতে সক্ষম হবে৷