পাখীর তরে

লেখক
ভবেশ কুমার বসাক

ছোট্টবেলায় অনেক ছোট তখন

ভালবাসতাম যে পাখীদের গান

গানের কথা স্পষ্ট হ’ল এখন

‘তোমরা মোদের দিচ্ছ না সম্মান’৷

মনে-পড়ে সেই ভোরের বেলার ডাক

‘ছোট্ট সোনা ঘুমিয়ে কেন থাকো,

ওঠো নয়তো করবোই হাঁকডাক

হাত-মুখ ধুয়ে অ-আ-ক-খ শেখো৷’

দুয়ারে এসে বসতো শালিক কটা

সঙ্গে চড়ুই আর দোয়েলের দল,

নেচে গেয়ে কইত কি সব কথা

ভাবলে পরেই চোখ করে ছলছল৷

উঠল যেথায় উঁচু অট্টালিকা,

সেথায়ই-তো মিলত পাখীর দেখা,

হারিয়ে গেছে তাদের সুর ও কথা

এখন শুধুই শূন্যতে মুখ দেখা৷

হঠাৎ সেদিন ভোরের বেলায় দেখি

পুরোনো সেই দিনের একটি পাখী

চেহারায় নেই একটুও ঝিকিমিকি

বলল আমায়---দিলেম তোমায় ফাঁকি৷

এই না বলে উড়তে যাবে যেই

হাত বাড়িয়ে ধরেই তাকে ফেলি

বলি তারে---রাগ করতে নেই

বন্ধু তোমায়  কেমন করে ভুলি?

স্বপ্ণেতে সে কষ্ট করে হাসে

কণ্ঠস্বরে চাপা অভিমান

‘প্রতিদানটা পেলাম ভালবেসে

তাড়িয়ে দিলে করলে অসম্মান৷’

দাঁড়িয়ে দেখি অট্টালিকার ছাদে

লোহার জালের উঁচু টাওয়ারখানি,

এর জন্যেই পাখীরা সব কাঁদে

এর বিষেই পাখীর জীবনহানি৷

আমার আমি উঠছে যে আজ জেগে

আবার হবে প্রভাত পাখীর গান,

আকাশ-বাতাস মাতিয়ে আসবে তেজে

শত-সহস্র পাখীর কলতান৷