প্রাউটের আলোয় পৃথিবীতে বিশ্বায়ণ প্রতিষ্ঠার কর্মে এগিয়ে চল সকলেই

লেখক
প্রবীর সরকার

মহান দার্শনিক শ্রদ্ধেয় প্রভাতরঞ্জন সরকার সারা পৃথিবীর আর্থিক তথা সামাজিক উন্নয়নের জন্য যে আর্থিক ও সামাজিক দর্শন দেন ও যেটি মূলতঃ সুপ্রাচীন ভারতের অধ্যাত্মবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত সেই মহান দর্শনের বাস্তবায়নেই পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ তাই সেই দর্শনকে যাঁরা শিরোধার্য করে সারা পৃথিবীতে প্রগতিশীল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় ও প্রতিটি সমাজ আর্থিক, সামাজিক দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে তারই ব্যাপক প্রচারে মিশনারী কর্মে সক্রীয় তারাই প্রাউটিষ্ট৷ সেই সমাজগুলিই সম্মিলিতভাবে জাগ্রত নব্যমানবতাবোধে উদ্ভুব্ধ হয়ে বিশ্বায়নের পথে অগ্রসর হয়ে এক মানবসমাজ ঘটনে সফল হয়ে উঠবে৷ তাই বলা হয় আঞ্চলিকতার পথ ধরে মানবসমাজ একদিন বিশ্বরাষ্ট্র গড়ে তুলতে সক্ষম হবে৷ তখন পৃথিবীর বুকে অস্ত্র প্রতিযোগিতা থাকবে না৷ রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সীমান্তে লড়াই হবে না৷ মারাত্মক সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে সংঘাত হবে না৷ সংকীর্ণ জাত-পাতের প্রশ্ণ থাকবে না৷ কেউই বঞ্চনার শিকার হবে না৷ যে বিশ্বভ্রাতৃত্বের জন্য পৃথিবীর মহান ব্যষ্টিরা কাজ করে গেছেন সেটা অবশ্যই সফল হবে৷ তারই মহান উদ্দেশ্যে প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কর্মীরা সেবাব্রতী হিসাবে কাজ করে চলেছে৷ এখানে ধর্মমতের হানাহানি নেই নেই কোন সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ৷ এই বিশ্বৈকতাবোধের জাগরণের জন্য কিছু কিছু পত্রিকা কাজ করে চলেছে৷ বাংলা ভাষায় কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক পত্রিকা নোতুন পৃথিবী, বর্ধমান জেলা থেকে প্রকাশিত হয় অজানা পথিক৷ এইপত্রিকাগুলোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো প্রাউট দর্শন কে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া ও মানুষকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন করা৷

প্রাউট মূল ৫টি নীতির ওপর আধারিত৷ তা হলো---

(১) কোনব্যষ্টিই সামবায়িক সংস্থার সুষ্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া ভৌতিক সম্পদ সঞ্চয় করতে পারবে না৷ কারণ এই সম্পদ সীমিত সকলেই যাতে ভোগ করতে পারে তারই জন্য এই বিধান৷ সমাজের  কল্যাণে এই সিদ্ধান্ত৷

(২) বিশ্বের যাবতীয় জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করতে হবে ও যুক্তি সঙ্গত বন্টন করতে হবে৷ এখানে মানসিক ও আধ্যাত্মিক যে দিক আছে তার দ্বারা যে অভাব পূরণ হয় তাকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের পর্যায়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন মহান দার্শনিক শ্রদ্ধেয় প্রভাতরঞ্জন সরকার কারণ যে অভাব মেটায় ও  পূর্ত্তি যোগায় সেটাই সম্পদরূপে স্বীকৃত হওয়াটা যুক্তি সম্মত৷

(৩) মানব সমাজের মধ্যে ব্যষ্টিগত ও সমষ্টিগত যতপ্রকার আধিভৌতিক, আধিদৈবিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদ আছে সব কিছুরই সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করতে হবে৷ কারণ কিছুই অবহেলার ও ফেলনার নয়৷

(৪) জাগতিক, মানসিক, আধিভৌতিক ও আধ্যাত্মিক উপযোগ সমূহের মধ্যে সুনির্দ্দিষ্ট বিবেচনা ও সামঞ্জস্য থাকা অবশ্য প্রয়োজনীয়৷ কারণ সন্তুলন না থাকলে অকল্যাণ আসতে পারে৷ ভারসাম্যের মিলিত  ফলশ্রুতি হলো---প্রমা৷

(৫) দেশ, কাল পাত্রের পরিবর্তন অনুযায়ী সমগ্র উপযোগ নীতির পরিবর্তন হতে পারে৷ আর এই উপযোগ হবে প্রগতিশীল স্বভাবের৷ কারণ গতিশীল জগতে সবই পরিবর্তনশীল, তবে প্রগতি হলো চিরগতিশীল কারণ আধ্যাত্মিক ভাবনায় কোন গতিহীনতা নেই৷ এটি অনন্ত ও অসীম সম্পদে পরিপূর্ণ৷ মানুষ আধ্যাত্মিক জীব বিশেষ৷

স্মরনীয় প্রাউটের প্রচারে বিভিন্ন ভাষায় লিখিত পুস্তকাদিও পত্রিকা বর্ত্তমানে প্রকাশিত হচ্ছে৷ এটি শুধু এদেশে নয়,পৃথিবীর ১৮২টি দেশে৷

পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে ও ভারতে প্রাউট দর্শন অর্থনৈতিক পাঠ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে৷ এটা সর্বজন স্বীকৃত৷ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জ্ঞানী, গুনীজন প্রাউট এংর ভূয়সী প্রশংসা করছেন৷ এই দর্শন সময়োপযোগী হিসাবেই আদৃত৷ আজ পৃথিবীতে দারুণ অভাব সৎনীতিবাদী মানুষের৷ তাছাড়া ক্যাপিটালিজ্যম ও কমিউনিজম আজ সম্পূর্ণ ব্যর্থ তাই আজ এদেশে ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে চরম বেকার সমস্যা, অর্থনৈতিক মন্দায় মানব সমাজ কাতর৷

তাই আজ এই সমস্যা সমাধানের জন্যে শ্রী পি.আর.সরকার এই আর্থিক ও সামাজিক অর্থনীতি দান করেছেন৷

বিশ্বৈকতাবোধ জাগ্রত না হলে মানব সমাজ রক্ষা পাবে না৷ আজ শোষণের উপর দাঁড়িয়ে মুষ্টিমেয়র সমৃদ্ধির চাবিকাঠি৷ তাই তো এতো রেসারিসি দলাদলি, মারামারি ও কাটাকাটি৷

প্রাকৃতিক সম্পদ নির্মমভাবে ধবংস করা হচ্ছে ক্ষুদ্র স্বার্থে৷ সাম্প্রদায়িক স্বার্থে দেশভাগ! সভ্যতা আজ পরিহাসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ধবংসের লোলুপতায় সারা পৃথিবী আজ রাষ্ট্র নেতা ও নেত্রীদের দ্বারা আক্রান্ত৷ মানুষ আজ গৃহহারা, বিতাড়িত হয়ে পথের ভিখারীতে পরিণত৷ মানবতা আজ ধূলায় পড়ে৷ স্বার্থান্বেষীরা তাদের কথা অস্বীকার করে নিজেদের নিয়ে সদাব্যস্ত৷ তাইতো মহান দার্শনিক শ্রদ্ধেয় পি.আর.সরকার মহাসম্ভূতিরূপে জীব,জন্তু,গাছপালা রক্ষার ধন্যই নব্যমানবতাবাদীদের্ আহ্বান দিয়েছেন এই প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের মাধ্যমে সারা বিশ্বে এক মহামিলনের সূচনায় কাজ করে যেতে৷ তাই আজ সকল শোষিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত ব্যষ্টিরা ধর্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মহামিলনের শুভকর্মকে বাস্তবায়িত করে তুলুক৷ এই ধরনীর বুকে সেই এক মানবসমাজ যে একই পৃথিবীর স্তন্যে লালিত পালিত হচ্ছে, একই চন্দ্রসূর্য্যের আলোকে আলোকিত হয়ে চলেছে, তাদের তো আজ ঋণশোধের  সময় এসেছে সেই মহান ঈশ্বরের নিকট৷ সবাই কে নিয়ে সবাই মিলে নোতুন পৃথিবী গড়ার ডাকতো তিনিই দিয়ে গেছেন এই বলে---সংস্কারমুক্ত হয়ে তোমরা নোতুন পৃথিবী গড়ে তুলবে ‘‘নোতুন পৃথিবী’’ পত্রিকাকে সমাজ কল্যাণের বাহন করে গড়ে তোল৷

আশাকরি কালক্ষেপ না করে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজকল্যাণের কাজে আরো সক্রিয় হবে৷