পরলোকে প্রণব রায়l ---সেই ফোনটা আর আসবে না

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ ‘নোতুন পৃথিবী’রদীর্ঘদিনের সাথী প্রণব রায় গত ২রা অক্টোবর রাত্রি ৮-৩০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷  মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বৎসর৷ ১৯৩৯ সালে ১৭ই আগষ্ট কলিকাতার গিরিশ পার্কের কাছে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম৷ লেখা পড়ার শুরু স্কটিশচার্জ সুকলে৷ লেখাপড়া শেষ করে কলিকাতা কর্র্পেরেশনে কর্মজীবন শুরু করেন ৷ কিন্তু বেশী দিন কাজ করেন নি৷ ১৯৬৮ সালে বৃহৎ কর্তব্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কর্র্পেরেশনের কাজে ইস্তফা দিয়ে আনন্দমার্গে যোগ দেন৷ সেই থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আনন্দমার্গের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন৷ মার্গের যে কাজের দায়িত্ব পেতেন নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করতেন৷

অকৃতদার মানুষটির আনন্দমার্গই ছিল ঘর-সংসার৷ মার্গের প্রকাশিত পুস্তক-পত্র পত্রিকার প্রুফ দেখতেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে৷ সেই সূত্রে তিনি ‘নোতুন পৃথিবী’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন৷ দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশী নোতুন পৃথিবী পত্রিকার প্রুফ দেখা ছাড়াও আরও  নানা দায়িত্ব সামলেছেন৷

 আমার নোতুন পৃথিবীতে লেখা শুরু প্রণবদার তাগিদেই৷ দেখা হলেই বলতেন, এই তুমি লেখ না  কেন? খালি লেক্চার দিয়ে বেড়াও৷ এমন হয়েছিল পত্রিকা অফিসে আসলে প্রণবদার ধমক খাওয়া আমার অবধারিত ছিল৷ সেই ভয়েই নোতুন পৃথিবী অফিসে আসলে একটা কিছু লেখা নিয়েই আসতাম, লেখা যাই হোক ধমকের হাত থেকে বাঁচতাম৷

এবারে আমি নোতুন পৃথিবীতে আসায় খুব খুশী হয়েছিলেন৷ বার্ধক্যজনিত কারণে উনি আর অফিসে আসতে পারতেন না৷ তবে ফোনালাপ বন্ধ হয়নি৷ বেশ কয়েকবার বলেছেন---একবার এসে দেখা করে যেও৷ কিন্তু যাব যাব করে আমার আর যাওয়া হয়নি৷ করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে নিয়মিত ফোন করে খবর নিতেন৷ গত সাতমাসে নিয়মিত প্রণবদার ফোনটা আসতো---‘‘কিগো কেমন আছো? সবাই ভালো আছে তো? পত্রিকা ছাপা হচ্ছে?’ ’ গত ২রা অক্টোবর রাত্রি ৮-৩০ মিনিটের পর থেকে ওই ফোনটা আর আসছে না৷ আমরা ভালো আছি, পত্রিকাও ছাপা হচ্ছে৷ শুধু প্রণবদার ফোনটা আর আসবে না৷                       ---আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত