পরমারাধ্য ৰাৰার  মহাপ্রয়াণে প্রার্থনা জানাই তাঁর নব্যমানবতাবাদ  বিশ্বকে রক্ষা করুক

লেখক
প্রভাত খাঁ

পৃথিবীর বুকে পরমারাধ্য ৰাৰা শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী (মহান দার্শনিক শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার) এসেছিলেন এমন সময়ে  যখন সারা পৃথিবীর  মানুষ তথা জীবজন্তুর বেঁচে থাকাটা সংকটের  মধ্য দিয়েই চলছিল৷ তাঁর আধ্যাত্মিকতা ভিত্তিক নব্যমানবতাবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে৷   নব্যমানবতাই হ’ল  বিশ্ব সংসারের সৃষ্টিকে রক্ষার ও তাদের সার্বিক  বিকাশের জন্য সুষ্টু পরিবেশ গড়ে  ওঠার চাবিকাঠি৷ সদবিপ্র সমাজের  আন্তরিক সেবা ও নিষ্ঠায় তা কেবলমাত্র সম্ভব৷ প্রগ্রতিশীল  উপযোগ তত্ত্ব অর্র্থৎ প্রাউট তত্ত্বই হল মহোষধি বিশেষ যা সমগ্র বিশ্বের জাতি ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল মানুষকে  এক ছাতার  নীচে নিয়ে আসার  একমাত্র মহান পথ৷

আজীবন  তিনি সেই মহান  পবিত্র কর্ম সম্পাদনে আত্মনিয়োগ করেন৷  এরই উদ্দেশ্যে তিনি প্রাউটের সমাজ আন্দোলনকে সার্থক  করে তুলতে সমাজ সংস্কারক হিসাবে সমগ্র জগৎকল্যাণেই ব্রতী ছিলেন৷

তিনি মানব সমাজের এমন দিক  নেই  যে দিকে দৃষ্টি দেননি৷ জীবনের সকল  দিকেই ছিল তাঁর মহান অবদান৷ আজ সারা পৃথিবী ৰাৰার বিশ্ববরেণ্য কর্মসাধনায় আপ্লুত৷ সারা পৃথিবীর মানুষ  তাঁকে ও তাঁর মহাম আদর্শকে  স্বীকার  করে নিয়ে  জগৎ কল্যাণে কর্মরত৷  তাঁর প্রতিষ্ঠিত  সংঘটন ও সেবকবৃন্দ নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন  শত বাধা বিপত্তিকে দুরে ঠেলে ৷ সেই মহান মহাসম্ভূতি  তাঁর লীলা সংবরণ করে কালধর্মে ইহলোক ত্যাগ করেন  গত ১৯৯০ এর ২১অক্টোবর৷

প্রতি বছর সেই দিনটি শ্রদ্ধার  সঙ্গে পালিত হয় সেই মহান মহাসম্ভূতিকে স্মরণ ও  তাঁর নির্দেশিত পথে থেকে নব্যমানবতাবাদকে বাস্তবায়িত করার কাজে নোতুন উদ্যমে উদ্ধুদ্ধ হওয়ার মানসিকতাকে জাগ্রত করতে৷ নব্যমানবতাবাদ  প্রতিষ্ঠা করার  প্রতিশ্রুতি নিতেই  নব্যমানবতাবাদীগণ্ সমবেত হন এই দিনে বিশ্বের প্রতিটি ইউনিটে তাঁরই প্রতিকৃতির সম্মুখে৷ কীর্ত্তন, ভজন, সাধনার মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে ভক্তবৃন্দের এই মহান অনুষ্ঠান বিশেষ করে পশ্চিমবাংলার কলকাতার তিলজলা আশ্রমে  চলে ২১ অক্টোবর থেকে ২৬ শে  অক্টোবর-এর অপরাহ্ণ পর্য্যন্ত৷ হাজার হাজার  গৃহীভক্তবৃন্দ ও অবধূত অবধূতিকাগণ সমবেত হয়ে এই পবিত্র কর্মসম্পাদন করেন৷ দেখে মনে হয় পৃথিবীর বুকে এ যেন এক মহান মানবতার মেলা৷

বর্তমান পৃথিবী দেখেছে গত শতাব্দীতে পরপর দুটো বিশ্বযুদ্ধ৷ তাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ, জীবজন্তু, গাছপালা নির্মমভাবে নিহত হয়েছে আর ধবংস হয়েছে পৃথিবীর অমূল্য সম্পদ৷

তার হাত থেকে জগৎকে রক্ষার কারণেই  তো পরমারাধ্য ৰাৰার আবির্র্ভব৷ অত্যন্ত দুঃখ ও  বেদনার কথা, তা দেখেও বর্ত্তমান শতাব্দীতে লোভী, হিংসাশ্রয়ী, দানবরূপী কিছু মানুষও  পৃথিবীর কোন কোন দেশের  সেই ধরণের  নেতৃবৃন্দ সমস্যা সংকুল পৃথিবীকে ধবংস করার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত৷ যে কোন  সময়ে ভয়ংঙ্কর পারমাণবিক অস্ত্রের আক্রমণে মানব সভ্যতা ধবংস হতে পারে৷ কমিউনিষ্ট মতাদর্শে অনুপ্রাণিত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র প্রধান   হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে হুমকি দিচ্ছে!

পৃথিবী বর্ত্তমানে আতঙ্কগ্রস্ত  হয়ে আছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্কে৷ সারা পৃথিবীতে চলছে ভয়ঙ্কর অস্ত্র প্রতিযোগিতার দাপট৷ ‘এ বলে আমরা দেখ্ ও বলে আমায় দেখ’! এই পরিস্থিতিতে পৃথিবী বাঁচবে নব্যমানবতাবাদের পবিত্র বারিবর্ষণে৷ তাই আজকের পৃথিবী ব্যাকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছে সেই মহান  দার্শনিক  শ্রদ্ধেয় প্রভাত রঞ্জন সরকারে নব্যমানবতাবাদের ব্যাপক প্রচার ও তার প্রতিষ্ঠার জন্য৷

তাই মনে করি নব্যমানবতাবাদের  আদর্শের  ব্যাপক প্রচার ও একই মানব সমাজ গঠনের বার্ত্তা ও বাস্তবায়ণই হলো একমাত্র মানুষের সমাজকে ও জীব জগৎ গাছপালাকে  ধবংসের হাত থেকে রক্ষা করা৷

এই দায়িত্ব  শুধু আজ তাদের  যারা নব্যমানবতাবাদী, সৎ,নীতিবাদী, জনসেবায় আত্মনিবেদিত প্রাণ৷

তাইতো প্রাউটের  আর্থ সামাজিক দর্শনই হলো সুদর্শন  যার দ্বারা পাপশক্তি খন্ড বিখন্ড হতে বাধ্য৷

পরমারাধ্য ৰাৰার মহাপ্রয়াণ দিবসে তাঁর শ্রীচরণকমলে প্রার্থনা জানাই তিনি যেন তাঁর অনুগামী ভক্তবৃন্দ ও কর্মীদের  আশীর্র্বদ করেন পৃথিবীকে ধবংসের হাত থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে সারা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমাজ আন্দোলন গড়ে তুলতে ও  তাঁর অভীমন্ত্রকে সার্থক করে তুলতে৷