সমাজের বৃহত্তম স্বার্থেই আদর্শহীন রাজনীতি বর্জনীয়

লেখক
এইচ.এন.মাহাতে

কংগ্রেস আমলে মানসিক ও আর্থিক শোষণ লাগাম ছাড়া হওয়ায় মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে শুরু হলো ‘ফুড ফর ওয়ার্ক’৷ এটা এক ধরনের কাজের নামে খাদ্যের মেলা৷

অন্যদিকে সিপিএমের রাজনৈতিক শ্লোগান হলো ‘ঋণ করে ঘি খেয়ে যাও৷’ তাই তাদের আমলে শুরু হলো মাঠে ঘাটে ক্যাম্প করে জনসাধারণকে কাজের  পরিকল্পনা না দিয়ে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার ঋণের মেলা৷ তাদের নেতারা বলতেন ওই ঋণের টাকা মকুব হয়ে যাবে৷ বাস্তবে কিন্তু ঘটনা ঘটেছে উল্টো অর্থাৎ ঋণ গ্রহিতার উপর টাকা আদায়ের জন্য ব্যাঙ্ক বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করলে অনেকেই জমি ঘটি বাটি  বিক্রয় করেও ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়৷

আবার বাঙলায় তৃণমূলীদের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিলো অন্যরকম৷ তাদের আমলে অর্থনৈতিক সমস্যাকে ধামাচাপা দিতে তারা শুরু করলো সাংসৃকতিক মেলার  মতো নানা রকমের মেলা৷ অধিকন্তু যুব সম্প্রদায় যাতে কোন অবস্থায় অর্থনৈতিক স্বাধিকার অর্জনের প্রশ্ণে কোন আন্দোলনে যেতে  না পারে৷

এবার বাঙলায় বিজেপির নতুন সংযোজন হলো দলবদলু মেলা৷ এই মেলার বৈশিষ্ট্য হলো নারদা, সারদা, কাটমানি বা যাদের ইডি সিবিআই-র জন্যে গারদে যাওয়ার ভয়ে তাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মেলা৷ বিজেপি মানেই যেন ওয়াশিং মেশিন৷ পশ্চিম বাঙলার  বিজেপি দলের রাজনৈতিক নেতাদের দৈনদশা এতটাই করুণ যে বিরোধী পক্ষের নেতাদের ইডি বা সিবিআই লেলিয়ে ভয় দেখিয়ে দলবদলু মেলার  পরিবেশ তৈরী করে আগামী নির্বাচনে বৈতরণী পার হতে চাইছে৷ বিজেপি ভুলে গেছে টাকা দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে নেতা দলে যোগ দেওয়ানো যায় কিন্তু লক্ষ লক্ষ সমর্থককে ঘরে আনা সম্ভব নয়৷ বিশেষজ্ঞদের অভিমত বাঙলা দখলের জন্য দলবদলু করতে  বিজেপির দিল্লীর উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ভিক্ষার পাত্র নিয়ে দরজায় দরজায় নেতার ভিক্ষা করেছে৷ তবে আগামী নির্বাচনে ভোট বৈতরণী পার হতে  এই দলবদলু মেলা কতটা কাজে লাগবে তা ভবিষ্যতেই বলবে৷

বিজেপির দিল্লীর নেতৃত্ব ভেবেছেন ত্রিপুরা ও পশ্চিম বাঙলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি একই ধরনের৷ ত্রিপুরায় ২০১৮ নির্বাচনে যেভাবে সিপিএমকে হঠানো গেছে বঙ্গের তৃণমূল সরকারকেও একইভাবে হঠানো যাবে৷

ত্রিপুরাতে বাম আমলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সব দিক থেকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙালীরা বঞ্চনার শিকার৷ রাজনৈতিক স্বার্থে সিপিএমের জনজাতির তোষণ নীতিও বৃহত্তম জনগোষ্ঠী বাঙালীর ক্ষোভের অন্যতম কারণ ছিলো৷ পশ্চিমবাঙলায় কিন্তু এই বিচারে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন৷

এমন অবস্থায় দলবদলু করে অশান্তি পাকিয়ে, লক্ষ কোটি টাকা ছড়িয়ে বিজেপির বাঙলার দখলের স্বপ্ণ সফল না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী৷