সর্বনাশের খাদের কিনারায় বাঙালী --- মারের ওপর মাথা তুলে দাঁড়াতে ১৬ই নভেম্বর মহামিছিলের ডাক আমরা বাঙালীর

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আগামী ১৬ই নভেম্বর কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দিল আমরা বাঙালী৷ হাওড়া, শিয়ালদহ দুই প্রান্ত থেকে দুটি মিছিল বের হয়ে দুপুর ১২টায় ধর্মতলায় রাণী রাসমণি রোডে জমায়েত হবে৷ সংঘটনের কেন্দ্রীয় সচিব শ্রীবকুল রায় জানান এন. আর. সি. ও হিন্দী আগ্রাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট বাঙালী আজ নিজ ভূমে পরবাসী৷ এভাবে বেশিদিন চলতে দেওয়া যায় না৷ বাঙালীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে৷ বাঙালী যদি এখনই সব সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ না হয় তবে অচিরেই বাঙালী একটি লুপ্তপ্রায় জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে৷

শ্রীরায় অভিযোগ করেন --- ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও পরবর্তী ৭২ বছরের দিল্লীর বাঙালী বিদ্বেষী শাসক বাঙলার সামাজিক-অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে ধবংস করেছে৷ ভাষা, সাহিত্য, সংসৃকতির ওপর আঘাত হেনেছে৷ এখন এন.আর.সি.-র অজুহাতে বাঙালীকে বিদেশী বানিয়ে তার নিজ ভূমি থেকেই তাকে উচ্ছেদ করার চক্রান্তও শুরু করেছে৷ বাঙলার মাটিকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে হিন্দী সাম্রাজ্যবাদ৷ যেভাবে দিনে দিনে হিন্দী আগ্রাসন বাড়ছে তাতে বাঙালীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে৷ রাজনৈতিক দলগুলো সব বুঝেও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে নীরব থাকছে৷ অদ্ভুত জিনিস দেখা গেল রবীন্দ্রসরোবরে ছট্ পূজো উপলক্ষ্যে৷ যে তৃণমূল-বিজেপি অহি-নকুল সম্পর্ক তারা উভয়ে উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে রেখে রবীন্দ্রসরোবরে তাণ্ডব করার সুযোগ দিল ভিন রাজ্যের মানুষকে৷ আমরা বাঙালী অনেক প্রতিবাদ করেছে, এবার প্রতিরোধে নামবে৷

সংঘটনের কলিকাতা, দুই ২৪ পরগণা, নদীয়া ও মুর্শিদাবাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীজয়ন্ত দাশ বলেন ১৬ই নভেম্বর থেকে আমরা বাঙালী আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু হবে৷ রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মদতে তালা ভেঙ্গে রবীন্দ্রসরোবরে ঢুকে একদল অবাঙালী তাণ্ডব চালিয়েছে, অন্য কোনও রাজ্যে বাঙালীরা গিয়ে যদি এই ধরণের ঘটনা ঘটাতো তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হ’ত৷ ডান-বাম-রাম করতে করতে আজ বাঙালী চেতনাই হারিয়ে গেছে৷ তিনি বলেন---আমরা বাঙালী কোন জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়৷ কোনও জনগোষ্ঠীর প্রতি তার কোনও বিদ্বেষ নেই৷ বরং ভারতবর্ষের ৪৪টি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলে আমরা বাঙালী৷ কারও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেও হস্তক্ষেপ করে না৷ কিন্তু রবীন্দ্রসরোবরে যা ঘটল তা বাঙালীর জাত্যাভিমানে আঘাত৷ বাঙলার শিরা-উপশিরায় রবীন্দ্রনাথ জড়িয়ে আছেন৷ তাঁর নামাঙ্কিত যে কোনও স্থানের শুচিতা রক্ষা করা প্রতিটি বাঙালীর দায়িত্ব৷ আগামী দিনে রাজ্যে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে আমরা বাঙালী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে৷

১৬ই নভেম্বর মহামিছিলে যাতে বিশাল সংখ্যক মানুষ যোগ দেয় তার জন্যে প্রতিদিন ব্লকে ব্লকে ঘরোয়া সভা, আলোচনা সভা, ও প্রচারপত্র নিয়ে প্রচার করে যাচ্ছেন শ্রীজয়ন্ত দাশ, অরূপ মজুমদার, তপোময় বিশ্বাস, শৈলেন মোদক ও বাপী পালপ্রমুখ নেতৃবৃন্দ৷