শ্রী পঞ্চমীতে ইলিশ

লেখক
প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

হিন্দুশাস্ত্রে বিশেষ বিশেষ দিনে বিভিন্ন খাওয়ার বিধান আছে৷ ওপার বাংলার সরস্বতী পূজোয় জোড়া ইলিশ খাওয়ার রীতি আছে৷ পশ্চিমবঙ্গে সরস্বতী পূজোয় নিরামিষ খাওয়াই বিধি৷ কিন্তু প্রায় সমগ্র  পূর্ববঙ্গে  বিশেষত বরিশাল, রহমৎপুর, গৈলা, জলাবাড়ি, সিরাজগঞ্জ বিক্রমপুর, ময়মনসিংহ প্রভৃতি অঞ্চলে সরস্বতী পূজোয় প্রথম ইলিশ খাওয়া হয়৷ বিজয়া দশমীর পর থেকে ইলিশ খাওয়া বন্ধ থাকে৷ কুমারখালি পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হলেও সীমান্তবর্তী বলে সেখানেও দশমী থেকে ইলিশ খাওয়া বন্ধ থাকে ও সরস্বতী পূজোয় প্রথম ইলিশ  খাওয়া হয়৷

মাদারীপুরের লোকেদের জোড়া ইলিশ খেতে হয়৷ জোড়া ইলিশ সংগ্রহ করতে না পারলে  একখানা ইলিশ ও একখানা লম্বা বেগুন একসঙ্গে জোড়া করে আনতে  হয়৷ সম্ভবত বেগুন দিয়ে ইলিশ  খাওয়ার চল আছে বলেই এই ব্যবস্থা৷ বিক্রমপুরের লোকেরা বিজয়াদশমীর  দিনও জোড়া ইলিশ খায়৷ সরস্বতী পুজোর আগে তারা ইলিশ খেতে পারবে না৷ চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরের লোকেরা সরস্বতী পুজোয় মাছ খায় না৷

বাঙালী হিন্দুর এই নিয়ন্ত্রিত ইলিশ খাওয়ার মূলে কিন্তু কোন ধর্মীয় কারণ নেই৷ বিজয়াদশমীর পর থেকে শ্রীপঞ্চমী পর্যন্ত মোটামুটি ইলিশের  প্রজনন কাল৷ ইলিশের বংশবৃদ্ধিই এই নিয়মের উদ্দেশ্য৷