সুপ্রিম কোর্টে সাতে নেই বাংলা প্রতিবাদে সরব ‘আমরা বাঙালী’

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আমরা বাঙালী আন্দোলন

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট তার রায় প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে হিন্দী, ইংরাজীর সাথে আরও পাঁচটি ভাষাকে বেছে নিয়েছে৷ তার মধ্যে উড়িয়া, অসমিয়া থাকলেও বাংলা ভাষার স্থান হয়নি৷

আইনি দোহাই দিয়ে বাঙলার তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ও রাজনৈতিক দলগুলো নীরব থাকলেও প্রতিবাদে পথে নেমেছে ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটন৷ ‘আমরা বাঙালী’র পক্ষ থেকে গত ৬ ও ৯ই জুলাই শিয়ালদহ ষ্টেশন ও দমদমে দুইটি সভার আয়োজন করা হয়৷

‘আমরা বাঙালী’র পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী জয়ন্ত দাশ জানান গোঁজা-মিলের হিসাবে হিন্দীকে ভারতের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ভাষা দেখানো হয়েছে৷ কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা৷ বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মানুষের মাতৃভাষা হিন্দী দেখানো হয়েছে৷ এটা হিন্দী সাম্রাজ্যবাদের একটা চতুর চাল৷ বিহার, উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েকটি ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠী আছে৷ যেমন অঙ্গিকা, মৈথিলী, ভোজপুরী, মগহী, বুন্দেলী, বাঘেলী প্রভৃতি৷ এই ভাষাগুলোকে জোর পূর্বক অবদমন করে হিন্দীকে এদের মাতৃভাষা দেখানো হয়েছে৷ নতুবা বাংলাই ভারতের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ভাষা৷ শুধু তাই নয়, ভারতে সব থেকে উন্নত শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির ধারক বাংলা ভাষা৷ রাষ্ট্রসংঘও বাংলাকে মধুরতম ভাষা বলে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ তাই গোঁজা-মিলের তথ্য মেনে নিলেও হিন্দী, ইংরাজীর পর সুপ্রিম  কোর্টের রায় প্রকাশের মাধ্যম হওয়া উচিত বাংলা৷ সেখানে সাতটি ভাষার মধ্যে বাংলার স্থান হয়নি৷ অথচ উড়িয়া, অসমিয়া স্থান পেয়েছে৷ খোদ অসমেই অসমিয়া ভাষা অপেক্ষা বাংলা ভাষী মানুষের সংখ্যা বেশী৷ অথচ সুপ্রিম কোর্টও বাংলাকে বঞ্চিত করল৷ এরপর আমাদের দুঃখ ও বঞ্চনার কথা জানাবার আর কোনও স্থান নেই৷ তাই এখন পথে নামা ছাড়া বাঙালীর কাছে আর অন্য কোনও উপায় নেই৷

শ্রী দাশ আরও বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার অন্যতম স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থা৷ মোদী জমানায় সেই স্তম্ভও নড়ে উঠেছে৷ কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টেরই এক গণ্ডা বিচারপতি তৎকালীন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিলেন৷ সিবিআই-এর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে৷ গত লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনেরই এক সদস্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেন৷ ভারতের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন৷ বাঙালী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বও বিপন্ন৷

গণতন্ত্র রক্ষা ও বাঙালী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষায় ‘আমরা বাঙালী’ অবিলম্বে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে শ্রী দাশ জানান৷ তিনি দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান৷ সভা দুটিতে বক্তব্য রাখেন শ্রী জয়ন্ত দাশ, বাপী পাল, গোপাল রায়চউধুরী, শৈলেন মোদক, তপোময় বিশ্বাস, ধীমান চক্রবর্তী প্রমুখ৷ সভা চলাকালীন গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়৷ সভার শুরুতে ও শেষে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শঙ্কর সরকার৷