তিরাশির বিশ্বকাপ দলের মত অদম্য মানসিকতা নিয়ে টিম ইণ্ডিয়াকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বিশ্বকাপের আসরে

সংবাদদাতা
ক্রীড়া প্রতিনিধি
সময়

আজ থেকে ৩৬ বছর আগে কথা৷ সালটা ১৯৮৩৷ ইংল্যাণ্ডের লর্ডস ষ্টেডিয়ামে কপিল দেবের নেতৃত্বে ওয়েষ্ট ইণ্ডিজকে হারিয়ে ভারত প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল৷ ১৯৮৩-র বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতীয় দলকে নিয়ে ক্রিকেট বোদ্ধাদের কোন উচ্চাশা ছিল না৷ কিন্তু কপিল দেব, সুনীল গাভাসকার, রবি শাস্ত্রী, মহিন্দর অমরনাথ, মদনলাল প্রমুরা যে টীম স্পিরিট আর হার না মানার যে মানসিকতা দেখিয়েছিলেন তারই ফলস্বরূপ ইতিহাসে স্থান করে নিতে পেরেছিল---প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী ভারত৷

আজকের ভারতীয় ক্রিকেট দল যথেষ্টই সমৃদ্ধ ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের অভাব নেই টীম ইণ্ডিয়ার৷ তাই এবারে বিশ্বকাপ জয়ের আশা করতেই পারে বিরাট বাহিনী৷ কিন্তু বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিজেদের চেনা পরিবেশে অষ্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের পারফরম্যান্স আশানুরূপ হয় নি৷ দরকার ছিল ধারাবাহিক জয়৷ কিন্তু তা হ’ল না৷ বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যাণ্ড রবানা হওয়ার পূর্বে নিজেদের ‘অপ্রতিরোধ্য’ হয়ে বিশ্বকাপের দাবিদার হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হ’ল ভারত৷ শেষ সিরিজে নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড় তুলে আনতে পারেনি টিম ইণ্ডিয়া৷ আন্তর্জাতিক আসরে ভারতকে হারিয়ে অষ্ট্রেলিয়া পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনার স্বপ্ণ দেখতে শুরু করেছে৷

তবে বিশ্বকাপের আসরে খেলা হবে অন্য পরিবেশে৷ আর বিশ্বকাপের আগে ভারতে হবে আই পি এল ক্রিকেট৷ এখানে ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ অবশ্যই পাবেন৷ কঠিন পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিজেদের সেরাটা তুলে ধরার অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিতে পারবেন প্রতিটি খেলোয়াড়৷

বিশ্বকাপের আগে ভারতের কাছে এখনও বেশ খানিকটা সময় রয়েছে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার৷ ইংল্যাণ্ডে ইংলণ্ড তো বটেই অষ্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী দল৷ এদের বিরুদ্ধে ভারতকে প্রথম দিকে খেলতে হবে৷ তাই লড়াই যে খুব উচ্চপর্যায়ের হবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ বিশ্বকাপের আসরে মানসিকতাটা ঠিক রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার৷ সেই কারণেই তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের মানসিকতার প্রসঙ্গ এসে পড়ে৷ কপিলের নেতৃত্বে সেই দলটা কোনও সময়েই হাল ছেড়ে দেয়নি৷ দলের প্রতিটি সদস্যই নিজের নিজের কাজটা ঠিক ঠিক ভাবে করতে পেরেছিলেন৷ আগামী বিশ্বকাপে বিরাটদের সেটাই করে দেখাতে হবে৷ ১৯৮৩-র সেই দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন মহিন্দর অমরনাথ৷ তাঁর সুনিয়ন্ত্রিত স্যুইং বল দলের পক্ষে ভাল কাজে এসেছিল৷ এছাড়া কপিল দেবের নেতৃত্ব ও তাঁর পারফরম্যান্স সমগ্র দলটিকে এক সূত্রে গেঁথে ফেলেছিল৷ বর্তমান ভারতীয় দলেও রবিশঙ্কর, কুলদীপ যাদব, যশপ্রীত বুমরারা প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে আনার ক্ষমতা রাখেন৷ তঁদের সাথে রয়েছে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, পূজারাদের মত অভিজ্ঞরা৷ অঙ্ক বলছে ৩৬ বছর আগের বিশ্বকাপজয়ী দলের থেকেও এই দলটি অনেক বেশী ব্যালান্সড্৷ তাই ভারতীয় ক্রিকেট রসিকরা টীম ইণ্ডিয়ার ধারাবাহিক জয়যাত্রাকেই চোখের সামনে দেখছেন৷

অনেকে ভাবতে পারেন তিরাশির বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ এখানে আসছে কেন? আসলে তিরাশির মত এই বিশ্বকাপটাও ইংল্যাণ্ডে হচ্ছে৷ তৎকালীন সময়ে বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দলের এক দিনের ম্যাচের পারফরম্যান্স খুব ঈর্ষণীয় ছিল না৷ শুধু বিশ্বকাপের আসরে দলটার মানসিকতাই অন্য দলের সঙ্গে ফারাক গড়ে দিয়েছিল৷ এখনকার ভারতীয় দলের ক্ষেত্রে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা যথেষ্ট রয়েছে৷ তখন কপিল দেব জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলে সমগ্র দলটিকে যে মানসিকতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা বর্তমানে বিরাট, রোহিত, পূজারাদের যে কেউ একজন করতেই পারেন৷ তখন ছিল সুনীল মনোহর গাভাসকারের মত ক্ষুরধার মস্তিষ্ক আর প্রতিটি ম্যাচে মাঠে থাকার অতি প্রয়োজনীয় শক্তি৷ বিরাটের নিম্নবিত্ত পরিবারে থেকেও ভাল ফুটবল খেলে