নারীর মর্যাদা

জাতিভেদ ও নারীর মর্যাদা হ্রাস

বৈয়ষ্টিক জীবনে মৌলিক অধিকার সমূহের সুরক্ষা তথা সামূহিক জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মানুষ অনাদিকাল থেকে শৃঙ্খলাসমন্বিত শাসন–ব্যবস্থার প্রবর্ত্তন করে চলেছে৷ এই সকল আইন শাসকশ্রেণীই সময়ে সময়ে তৈরী করেছে ও প্রতিটি আইন থেকে এ ভাবই প্রকট হয় যে শাসক শ্রেণী আইন প্রণয়নকালে তাদের নিজেদের স্বার্থের দিকেই সব থেকে বেশী নজর রেখেছে৷ দৃষ্টান্ততঃ, মনুস্মৃতিতে মনু বিধান দিয়েছেন যে কোন ব্রাহ্মণ শূদ্রকন্যার পাণিগ্রহণ করলে তাকে মাথা মুড়িয়ে গাধার পিঠে বসিয়ে শহর পরিক্রমণ করানো হবে, আর শূদ্র যদি কোন ব্রাহ্মণতনয়ার পাণিগ্রহণ করে তবে সেক্ষেত্রে তার শাস্তি হবে প্রাণদণ্ড৷  এই ধরণের আইন ব্যবস্থা সমাজে ব্রাহ্মণদের প

নারী–পুরুষ উভয়েই পরমপুরুষের আদরের সন্তান

আমরা সবাই পরমপুরুষের সন্তান৷ তিনি সবাইকে তৈরী করে চলেছেন৷ সুতরাং বেঁটে, লম্বা, কালো, ফর্সা, আমি পুরুষ, সে মেয়ে–এসব ভেদের মধ্যে থাকার প্রয়োজন নেই৷ পরমপুরুষের সঙ্গে মনটা মিলিয়ে দিয়ে ভেবে দেখ কী করলে পরমপুরুষের ভালো লাগৰে, কী করলে ভাল লাগবে না৷ যা’ করলে তাঁর ভাল লাগবে সেই মত করবে৷ কোন পিতা চাইবে না তার একটা সন্তান শুকিয়ে মরুক, একটা সন্তান প্রয়োজনের চেয়েও বেশী খাক বা প্রয়োজনের চেয়েও বেশী জমিয়ে রাখুক৷ অর্থনৈতিক জীবনেও তোমাদের সেই রকমই চলতে হবে৷ সামাজিক জীবনে কোন পিতাই মনের দিক থেকে চাইবে না তার বিধবা মেয়ে অন্য রকম পোষাক পরুক, তার বিধবা মেয়ের ওপর সামাজিক নির্যাতন চলুক অর্থাৎ কোন শুভ কার্যে তাকে ছ

নারীর প্রতি অবিচার ঃ ভাষা ব্যবহারে

এই দশ লাখ বৎসরের মানুষের ইতিহাসে মানুষের প্রতি সুবিচার করা হয়নি৷ মানুষের একটি শ্রেণী, একটি বর্গের প্রতি বেশী বাড়াবাড়ি করা হয়েছে, বেশী আদিখ্যেতা করা হয়েছে, ও তা, করতে গিয়ে অন্যকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে৷ একজন মানুষ লড়াই করল, মরল, আত্মদান দিল, কাগজে বড় করে তা ছেপে দেওয়া হ’ল, আর সে মরে যাওয়ার পর ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলিকে নিয়ে তার বিধবা স্ত্রীকে কী ধরণের অসুবিধায় পড়তে হ’ল সেকথা খবরের কাগজে বড় করে ছাপানো হ’ল না অর্থাৎ একতরফা বিচার করে আসা হয়েছে৷ যদিও ব্যাকরণগত ব্যাপার, আর হঠাৎ বদলানো যায় না, তবু ‘ম্যান’ ‘প্প্ত্রু’ এই কমন জেণ্ডারের মধ্যে ‘ম্যান’, আর ‘ওম্যান’(woman) দুই–ই এসে যায়৷ অথচ ‘ওম্যান’ এই কমন জেন

নারীর প্রতি অবিচার

কিছুকাল আগেও কেউ কেউ বিধবা নারীর নামের সঙ্গে ‘শ্রীমতী’ বা ‘দেবী’ না লিখে ‘শ্রীমত্যা’ বা ‘দেব্যা’ লিখতেন৷ এরকম লেখা ব্যাকরণের দিক দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ তো বটেই, নারীর পক্ষে মর্যাদাহানিকরও৷ কারণ, বিধবা কী এমন অপরাধ করেছে যে জন্যে তাঁর শ্রীমতীত্ব বা দেবীত্বকে এইভাবে ছিনিয়ে নেওয়া হবে বৈয়াকরণিক বিচারে ‘শ্রীমত্যা’ মানে ‘শ্রীমতীর দ্বারা’, ‘দেব্যা’ মানে ‘ ‘দেবীর দ্বারা’৷ অধবা সধবা–বিধবা নির্বিশেষে সব নারীর নামের সঙ্গেই ‘শ্রীমতী’ বা ‘দেবী’ শব্দ ব্যবহূত হতে পারে৷ এতে কোন সামাজিক বাধাও নেই, আবার বৈয়াকরণিক আপত্তিও নেই৷ ইংরেজী ‘মিস্’(Miss) শব্দের অনুকরণে বাঙলায় অধবা মেয়েদের নামের আগে যে ‘কুমারী’ শব্দটি ব্যবহ

জাতিভেদ ও নারীর মর্যাদা হ্রাস

(মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর শব্দ চয়নিকা–২৬ খণ্ড গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ‘নারীর মর্যাদা’ বিষয়ক অনেক কিছুই বলেছেন৷ ওই গ্রন্থ থেকে কিছু অংশ সংকলিত করে প্রকাশ করা হচ্ছে৷

–সম্পাদক)

ভারতীয় সমাজের নারীর অবদান

অদিতি দত্ত বাগ

পূর্ব প্রকাশিতের পর,

১৫) শাশ্বতী অঙ্গিরাশি ঃ শাশ্বতী অঙ্গিরাশি ঋষি অঙ্গিরাশ এর কন্যা ছিলেন এবং এই ঋষিকা ঋক্‌বেদের ৮.১.৩৪ নং সূক্তোটির রচয়িতা,

১৬) রাত্রি ভরদ্বাজী ঃ রাত্রি ভরদ্বাজী ঋষি ভরদ্বাজ এর কন্যা ছিলেন ইনি ঋক্‌বেদের ১০.১২৭ নং সূক্তোটি রচনা করেন৷

১৭) সিকত নিভাবরী ঃ - সিকত নিভাবরী ঋষি নিভাবরের কন্যা ছিলেন তিনি ঋক্‌বেদের ৯.৮৬.১১-২০ নং সূক্তোটি রচনা করেন৷

১৮) সূর্য্য সাবিত্রী ঃ --- সূর্য্য সাবিত্রী সবিতার কন্যা, ইনি ঋক্‌বেদের ১০.৮৫ নং সূক্তোটির রচয়িতা৷

১৯) ঊবর্বশী ঃ ঊবর্বশী ছিলেন পুরুরবার পত্নী তিনি ঋকবেদের ১০.৯৮ নং সূক্তোটির রচয়িতা৷

নারীনির্যাতন ও কিছু কথা

শ্রীপার্থ

দিকে দিকে নারী নির্যাতন, নারীর শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও খুনের বিরুদ্ধে সর্বত্রই প্রতিবাদ আন্দোলন সংঘটিত হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী সকলেই এসব ঘটনার বিরুদ্ধে সরব৷ মৌন মিছিল, মোমবাতি মিছিল থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার সবই হচ্ছে৷ এসব পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদে পাশবিকতার বিরুদ্ধে জনসাধারণের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ নিঃসন্দেহে একটা ভালো দিক৷ মানূুষের এই শুভ উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি কেউই কিন্তু এই ধরণের জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে যে মূল কারণগুলি নিহিত আছে সেগুলির ব্যাপারে বিশেষ আলোকপাত করতে চাইছেন না বা করছেন না৷ আর এখানেই রয়ে যাচ্ছে ত্রুটি৷ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীর

গান্ধারীর নৈতিক বল

গান্ধারী ছিলেন আফগান মহিলা৷ কান্দাহার (সংস্কৃতে ‘গান্ধার’) নামে এক দেশ ছিল ও গান্ধারী ছিলেন সেই দেশের কন্যা৷ তৎকালীন ভারতীয়রা কান্দাহারকে বলতেন ‘প্রত্যন্ত দেশ’ – সুদূর সীমান্তবর্তী দেশ৷ খাঁটি ভারতবর্র্ষ বলতে যা’ বোঝায়  তা’ নয়৷

বলিষ্ঠ ত্রুটিমুক্ত সমাজ চাই

নারী কল্যাণ ঃ সমাজে নারীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, একান্তই দুর্বিসহ৷ সংঘের যারা ‘তাত্ত্বিক’, তাদের কর্ত্তব্য হ’ল অনগ্রসর মহিলাদের মধ্যে কল্যাণমূলক কাজ করা, তাদের কুসংস্কার–নিরক্ষর দূর করা, ধর্মচক্রের বন্দোবস্ত করা ও তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা৷ দেখা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর নারীরা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হন৷ তাই তাঁরা যাতে স্বাধীনভাবে জীবিকার্জন করতে পারেন সে ধরণের সুযোগ তৈরী করতে হবে৷