‘আমরা বাঙালী’র হাত ধরে, বাঙালীস্তানের পথ ধরে গড়ে উঠবে আত্মনির্ভর ভারত

লেখক
আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পুঁজিবাদের পয়লা নম্বর দোসর ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর  মুখ দিয়ে হঠাৎ করে আত্মনির্ভর ভারত কথাটি বেরিয়ে এসেছে৷ তিনি এরকম অনেক কথাই বলে থাকেন, যা শুধু কথার কথা, বাস্তবে কোনমূল্য নেই ৷ শূন্য একাউন্টে ১৫লাখ, সুইস ব্যাংকের  কালো টাকা, বছরে দু কোটি চাকরি, এরকম অনেক কথাই প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন যা অলীক স্বপ্ণ বইতো নয়! পুঁজিবাদের হাত ধরে আত্মনির্ভর ভারত--- হয়তো এও এক আকাশ কুসুম! নতুবা প্রধানমন্ত্রী অমানিশার অন্ধকারে  কালো পেঁচা খঁুজতে বেরিয়েছেন৷

প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব প্রাউট-এর মতে আত্মনির্ভর ভারত তখনই হবে ---যখন প্রতিটি মানুষ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বনির্ভর হবে, সমাজে কোন প্রকার শোষণ থাকবে না, প্রতিটি মানুষ জীবনধারণের নূ্যনতম প্রয়োজন (অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) পূর্তির ক্রয় ক্ষমতা অর্জন করবে৷ ভারতের  মতো দেশে পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়৷

যে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিদেশী পুঁজিপতি প্রেসিডেন্টকে তোষণ করতে ১০০ কোটি টাকা খরচ করেন, আকাশ থেকে ফুল ছড়াতে  ৬৪০ কোটি টাকা খরচ করেন, অথচ ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া লকডাউন-এ অসহায় শ্রমিকদের পেছনে এক পয়সা খরচ করতে পারে না, তিনি গড়বেন আত্মনির্ভর ভারত! পাগলে হাসবে, দলীয়  বশংবদ ছাড়া কেউ বিশ্বাস করবে না৷

প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে আত্মনির্ভর ভারত অলীক কল্পনা মাত্র!

তাহলে কি আত্মনির্ভর ভারত সম্ভব নয়! অবশ্যই সম্ভব, কিন্তু পুঁজিবাদের তোষণ ও আত্মনির্ভর  ভারত গঠন-দুটো একসঙ্গে সম্ভব নয়৷

প্রাউট-এর অর্থনীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনৈতিক  অঞ্চলগুলি আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলবে৷

বর্তমান ভারতের  সামাজিক অর্থনৈতিক  প্রবণতা ও সাংসৃকতিক নৃতাত্ত্বিক ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভারতবর্ষে ৪৪টি জনগোষ্ঠী আছে৷ এই ৪৪টি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে  সর্বপ্রকার শোষণমুক্ত ৪৪টি স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক-অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে হবে৷ যেখানে  সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংসৃকতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক কোনো প্রকার শোষণ থাকবে না৷  তখনই তৈরি হবে আত্মনির্ভর ভারত৷

নানা ভাষা, নানা পরিধান, নানা সাংসৃকতিক  অভিব্যক্তি নিয়ে  বৈচিত্রময় ভারতবর্ষ৷ এই বৈচিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি বজায়  রেখে আত্মনির্ভর  ঐক্যবদ্ধ ভারত গঠনের পথে এগুতে হবে৷

প্রাউট তত্ত্বকে সামনে রেখে আমরা বাঙালীর  আন্দোলনের লক্ষ্য হচ্ছে স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক  অঞ্চল বাঙালীস্তান  গড়ে তোলা৷ এই বাঙালীস্তানের পথ  ধরেই গড়ে উঠবে ৪৪টি স্বয়ংসম্পূর্ণ অঞ্চল গড়ে উঠবে আত্মনির্ভর ভারত -এটাই পথ৷

আজকের পুঁজিবাদী শোষণ ও স্বৈরাচারী শাসকের অত্যাচারে জর্জরিত ভারতের সামনে অন্য কোন পথ নেই৷