অপামার্গ / অপরাজিতা

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

অপামার্গের পর্যায়বাচক শব্দগুলি হ’ল ‘কোষাতকী’ ও ‘খরমঞ্জরী’৷ ভারতীয় অপামার্গ মুখ্যতঃ দুই প্রজাতির–শ্বেত অপামার্গ ও রক্ত অপামার্গ৷ কলকাতা অঞ্চলে আমরা অপামার্গকে কথ্য ভাষায় বলে থাকি অপাঙ বা আপাঙ৷ রাঢ়ে বলি চচ্চড়ে, অঙ্গিকা ভাষায় বলা হয় চিড়চিড়া৷ অপামার্গের শীষ কারো গায়ে ছুঁড়ে দিলে তা তার বস্ত্রে আটকে যায়৷

অপরাজিতা একটি ফুলের নাম৷ এর আদিবাস মালয়ে (মূল নাম তেলাঙ)৷ শাদা, নীল ও রক্তাভ ভেদে অপরাজিতা তিন ধরনের হয়ে থাকে৷ প্রতিটি প্রজাতি এক পাতি বা দু’থোকা, দু’ধরনের হয়ে থাকে৷ অপরাজিতা একটি নির্দোষ ভেষজ৷ এর নীলরঙকে তাই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে খাদ্যবস্তুকে নীল রঙ করার কাজে ব্যবহার করা হয়৷ ধাতুঘটিত রঙের চেয়ে এই রঙ অনেক বেশী নির্দোষ৷

স্ত্রীব্যাধিতে অপামার্গ ও অপরাজিতা ঃ (১) গর্ভিণীর কটিদেশে শ্বেত অপামার্গের মূল (সম্পূর্ণ মূলটা) ধারণ করলে অথবা শ্বেত অপরাজিতার মূল ধারণ করলে গর্ভপাত বিদূরিত হয়৷

(২) মৃতবৎসা নারীর প্রসবকালে শ্বেত অপরাজিতার মূল আলুলায়িত কেশে ৰেঁধে রাখলে সুসন্তান প্রসূত হয়৷

(৩) অপামার্গের মূল, আরো বিশেষ করে শ্বেত অপামার্গের মূল মৃতবৎসা রোগেরও অন্যতম ঔষধরূপে গণ্য হয়ে থাকে৷

(৪) কৃষ্ণপক্ষে অপামার্গের ঔষধীয় গুণ ৰেড়ে যায়৷ বন্ধ্যা (বাঁঝা) নারীর রোগ–নিবৃত্তির ঔষধ রক্ত–পামার্গ থেকে তৈরী হয়৷ আর বন্ধ্যা পুরুষ বা অপুত্রক পুরুষের জন্যেও কয়েকটি ঔষধ শ্বেত অপামার্গ থেকে তৈরী হয়ে থাকে৷

(৫) যে সব নারী মৃতবৎসা রোগে ভোগেন কুকসিমা তাঁদের উপকারে লাগবে৷

অন্যান্য রোগে অপামার্গ ঃ এক আনা পরিমিত অপামার্গের শেকড় কাঁচা পেঁপের মধ্যে ভরে সেদ্ধ করে খেলে পারা ও উপদংশের ৰীজ ত্রম্ভহ্মড়ন্প্তন্ব্দগ্ দুই–ই নষ্ট হয়৷ প্রমেহ বা গণোরিয়া রোগে অন্ধত্বের সম্ভাবনা দেখা দিলে অপামার্গের কাজল ব্যবহার করতে হয়৷

কুর্চি ফুল ও মৃতবৎসা রোগ

‘গিরিমল্লিকা’ মানে কুটজ পুষ্পম্ বা কুর্চি ফুল৷ আয়ুর্বেদে কুর্চির অজস্র গুণ বর্ণনা করা হয়েছে৷ কুর্চি ফুল মৃতবৎসা রোগীর ঔষধ৷ এর ফুল ও মূল থেকে ঔষধ তৈরী হয়৷ কিম্বদন্তী এই যে ছ’টি কন্যার মৃত্যুর পর শচীদেবী ঙ্মশ্রীমন্মমহাপ্রভু চৈতন্যদেবের মাতাদেবীৰ কুর্চি ফলজাত ঔষধ খেয়ে পুত্রসন্তানের জননী হয়েছিলেন৷