March 2020

মানুষের স্বার্থবুদ্ধি কেড়ে নিল একটি নিষ্পাপ প্রাণ 

মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে পারল না অবোধ শিশু ঋষভ সিং৷ আট দিনের লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কাছে হার মানতে হ’ল তাকে৷  গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী সুকল যাওয়ার পথে পুলকার দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল ঋষভ৷

একটি অবোধ শিশুকে এভাবে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হ’ল কেন? পুলকার দুর্ঘটনা কী নিছকই একটি ঘটনা? কে তাকে ঠেলে দিল এই দুর্বহ জীবনযুদ্ধে? অবশ্যই এই সমাজ, এই রাষ্ট্র৷ যে সমাজ যে রাষ্ট্র চতুর্দিক দিয়ে অন্যায়-অবিচার দ্বারা, অসত্যের দ্বারা পরিবৃত৷ স্বার্থের বন্ধনে জর্জরিত মানুষ দিন দিন বিবেকহীন বিচারবোধহীন পশুতে পরিণত হচ্ছে৷ তার বলি হতে হচ্ছে ঋষভের মত নিষ্পাপ অবোধ শিশুদের৷

নাগরিকত্ব প্রমাণে ভোটার কার্ডই যথেষ্ট

মুম্বাইয়ের রে-রোড এলাকায় থাকেন এক বাঙালী দম্পতি৷ ভূয়ো খবরের ভিত্তিতে গত ১১ই ফেব্রুয়ারী মুম্বাই পুলিশ ওই দম্পতি আববাস শেখ ও তাঁর স্ত্রী রাবিয়া খাতুনকে বাঙলাদেশী সন্দেহে গ্রেপ্তার করে৷ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে বিদেশী নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ, ও ভারতে প্রবেশ সংক্রান্ত পাসপোর্ট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে৷ আববাস শেখ মুম্বাই পুলিশের অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদের ভারতীয় বলে দাবী করেন৷ তিনি তাঁর দাবীর স্বপক্ষে ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, স্বাস্থ্য বীমার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাস বই, ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে স্ত্রীর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ও প্যান কার্ড আদালতে জমা দেন৷

রত্তাক্ত রাজধানী - মরছে মানুষ -  নির্বিকার প্রশাসন - যমুনার তটে হিংসার উৎসব

  হিংসার আগুনে জ্বলছে দেশের রাজধানী শহর৷ এই লেখা পর্যন্ত হিংসার বলি ৩৭ জন৷ আহত ৩০০-র বেশী, তার মধ্যে অন্তত ৭০ জন গুলিবিদ্ধ৷ ৭২ ঘণ্টা পরেও হিংসার আগুন নেভেনি৷ আতঙ্কিত মানুষ দিল্লী ছেড়ে পালাচ্ছে৷ উত্তর-পূর্ব দিল্লীর বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কে, অনাহারে, অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছে৷ পুলিশ নীরব দর্শক৷ আগুণে বিধবস্ত যানবাহন, ঘরবাড়ী, দোকান, বাজার৷ দিল্লীর হাসপাতালগুলি আহত মানুষ ও   তাদের উৎকণ্ঠিত আত্মীয়দের ভীড়ে ঠাসা৷

দিল্লী ছাড়ছেন বাঙালীরা

উত্তর-পূর্ব দিল্লীর বিভিন্ন মহল্লায় যেসব বাঙালী শ্রমিক ছিল তারা আতঙ্কে বাড়ী ফিরে আসছে৷ এরা মূলত মালদা, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা৷ জীবিকার জন্য এরা রাজধানী শহরে গিয়েছিল৷ এখন সেখানে প্রাণ নিয়ে থাকাই মুশকিল৷ তাই তারা গৃহে ফিরে আসছে৷

বিচারপতি বদলী

 দিল্লী হাইকোর্টের বিচারপতি এস. মুরলীধরণকে পঞ্জাবে বদলী করা হয়েছে৷ বিরোধীরা বলেন দিল্লী পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করা ও বিজেপির তিন নেতার বিরুদ্ধে এফ.আই.আর করার নির্দেশ দেওয়াতে তড়িঘড়ি করে বিচারপতিকে মধ্যরাতেই বদলী করা হয়েছে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বুধবার মধ্যরাতে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে নির্দেশ জারী করে মুরলীধরণকে দিল্লী হাইকোর্ট খেকে পঞ্জাব হাইকোর্টে পাঠানো হয়৷

রাষ্ট্রসংঘের উদ্বেগ

দিল্লীর হিংসার ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব উদ্বিগ্ণ হয়ে পড়েন৷ দাঙ্গায় নিরীহ মানুষের প্রাণ যাওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন৷ দিল্লীর মানুষকে শান্তি বজায় রাখতে তিনি আবেদন করেন৷

বিপুল উদ্দীপনায় ‘আমরা বাঙালী’র মাতৃভাষা দিবস পালন

মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী উর্দু সাম্রাজ্যবাদী শাসকের বুলেটে ঢাকার রাজপথে লুটিয়ে পড়েছিলেন পাঁচ তরুণ---সফিউর, রফিক, বরকত, সালাম, জববর৷ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সেই আন্দোলনই পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানের অবলুপ্তি ঘটিয়ে স্বাধীন বাঙলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে৷ তাই প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারী এপার-ওপার দুই বাঙলার মানুষই শ্রদ্ধার সঙ্গে এই দিনটি ভাষা দিবস পালন করে৷১৯৯৯ সালে রাষ্ট্র সংঘ এই দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে৷

নিপীড়িত মানবতার মুক্তির আদর্শ ও দধীচি দিবস

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

মানুষ আজ দিশাহীনতায় ভূগছে৷ লক্ষ্যহীন মানব জীবন৷ ধর্মের স্থান অধিকার করেছে রাশি রাশি ডগমা বা ভাবজড়তা, অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার৷ সামাজিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও মূলত পুঁজিবাদ, মাকর্সবাদ (জড়বাদ) আর ডগমা এই তিনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই চলছে৷ অথচ এই তিনের কোনটারই সর্বাত্মকশোষণমুক্ত সমাজ গড়বার সামর্থ্য নেই৷ ফলে মানব সমাজে আজ সর্বক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে চরম আদর্শগত শূন্যতা৷

এরফলে আজ সর্বত্র চলছে ব্যাপক দুর্নীতি ও শোষণ, আর মানুষের ব্যষ্টিগত জীবনেও চরম উচ্ছৃঙ্খলতা ও অশান্তি৷

জড়বাদ ও অধ্যাত্মবাদ

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মূলসত্তা একটিই, তা হচ্ছে চিতিশক্তি৷ এই চিতিশক্তি চৈতন্যসত্তা আবার শক্তিসত্তাও বটে– এইভাবে চিতিশক্তি দুইয়েরই কাজ করে৷ এইজন্যেই একে চিতিশক্তি বলা হয়৷ বস্তু নয় কিন্তু বস্তুকে যে রূপ প্রদান করে তাই শক্তি বা প্রকৃতি৷ এই প্রকৃতিই বস্তুতে রূপ প্রদান করে প্রকারভেদ সৃষ্টি করে৷

সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহতা

মানুষ যে জাতপাত ও সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায় সেটা কি স্বাভাবিক, না কৃত্রিম? স্বাভাবিক বিভাজন কোষ বিভাজনের মত – একটা  কোষ যেমন দু’টো কোষে বিভাজিত হয়৷ কৃত্রিম বিভাজন এরকম নয়৷ কাজেই, মানুষের জাতি ও সম্প্রদায়গত ভেদকে কী বলা যাবে–স্বাভাবিক বিভাজন, না কৃত্রিম বিভক্তিকরণ? বৈরী শক্তিগুলির মধ্যে কিছু দল আছে যেগুলো বিচ্ছিন্নতার মতাদর্শে চালিত হয় ও কিছু লোকও আছে যারা এই সব বিভেদকামী দলগুলির দ্বারা চালিত হয়৷ এই সমস্যার সমাধান কীভাবে সম্ভব হবে? কীভাবে আমরা এই সব যুযুধান দলগুলিকে একটা অচল সেকেলে ভাবাদর্শকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করা থেকে নিবৃত্ত করতে পারব যা দেশকে খণ্ড বিখণ্ড করে দিতে পারে? কী করা উচিত?