বাঙালী কবে মানুষ হবে

লেখক
মন্ত্র আনন্দ

প্রধানমন্ত্রীর ষোলআনা গুজরাটি প্রেম। তাই কংগ্রেস বিদ্বেষী হলেও গান্ধী-পটেল ভক্ত। দুজনেই গুজরাটি কিনা!কংগ্রেসী গুজরাটি পটেলের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মূর্তি, সকালে ঘুম থেকে উঠেই গান্ধীর চরণে প্রণতি।

বাঙলার ন্যাতারা না দেখে শেখে, না ঠেকে শেখে। লোকসভায় যিনি বিরোধী নেতা হয়েছেন (যদিও স্বীকৃত নন)বঙ্গে পান থেকে চুন খসলে মমতা ব্যানার্জির শ্রাদ্ধ  করে, কিন্তু লোকসভায় দাঁড়িয়ে নেতাজির ফাইল কোথায় গেল? শ্যামাপ্রসাদের হত্যা নিয়ে নীরব কেন শ্যামাপ্রসাদ প্রেমি প্রধানমন্ত্রী!---- এ কথা বলার হিম্মত নেই।কারণ নেতাজির হারিয়ে যাওয়া, শ্যামাপ্রসাদের রহস্যজনক মৃত্যু---- সব কেলেঙ্কারির পান্ডা কংগ্রেসী নেতারা। আরো স্পষ্ট করে বললে নেহেরু।মোদি অবশ্য নেহেরু বিদ্বেশি, কিন্তু সব কেলেঙ্কারি সামনে এলে গুজরাটি গান্ধী পটেলও কালিমালিপ্ত হবে। তাই নেতাজীর সব গোপন ফাইল প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েও আর ও পথে যাননি প্রধানমন্ত্রী। নেতাজি প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট বন্ধুরাও নিরব। কারণ সুভাষ বিরোধিতায় ব্রিটিশের সঙ্গে গোপন প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছে কংগ্রেস, কমিউনিস্ট, আরএসএস সবাই।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন--- "সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালী করে মানুষ করনি"। কিশোর সুভাষচন্দ্র তার মাকে এক পত্রে লিখছেন---- "মা বাঙালী কি কোনদিন মানুষ হবে না!"
বাঙলার নেতারা  যদি মানুষ হতো তবে পাঞ্জাবি উদ্বাস্তুর  ক্ষেত্রে এক নীতি, বাঙলার ক্ষেত্রে আর এক নীতি হ'ত না! বাঙলার নেতারা যদি মানুষ হতো সুভাষ চন্দ্রের অন্তর্ধান রহস্য এতদিনে প্রকাশ হ'ত।

৬৫ বছর  বাঙলায় কংগ্রেস কমিউনিস্ট শাসন করেছে। বাঙলার শিল্প,শিক্ষা,  সাহিত্য, সংস্কৃতি সব গোল্লায় পাঠিয়েছে আর দিল্লির দাসত্ব করেছে। বিধান রায়েরও হিম্মত হয়নি বিহার, উড়িষ্যা, অসমের সঙ্গে যুক্ত বাঙলার অংশ ফেরত চাইবার। বাঙলার স্বার্থ অপেক্ষা দিল্লির দাসত্ব এদের কাছে অনেক লাভের। তাই যে প্রধানমন্ত্রী  বাঙালী বিদ্বেষী পটেলের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মূর্তি গড়ে, নিজের নিরাপত্তার জন্য সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার বিমান কিনতে পারে,আর বাঙলায় দাঁড়িয়ে এত বড় বিপর্যয়ের পর এক হাজার কোটি টাকা ভিক্ষা দেয়ার কথা বলতে পারে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ের বড় উৎস বাঙলার খনিজ সম্পদ, কৃষিজ সম্পদ ও জলজ সম্পদ।

বঙ্গীয় হিন্দুত্ববাদীরা যতই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চিৎকার করুক, প্রধানমন্ত্রী কিন্তু পশ্চিমবাঙলাকে মেরে বাঙলার জল বাংলাদেশকে দিতে চান।

বাঙালী আর কবে মানুষ হবে! বহুদিন আগে পরাধীন ভারতে বড় আক্ষেপ করে বিজ্ঞানী প্রফুল্ল চন্দ্র রায় লিখেছিলেন----- "বিহার বিহারীর,  পাঞ্জাব পাঞ্জাবির...... কিন্তু বাঙলার দ্বার সকলের জন্য খোলা!

বাঙালী আর কতদিন উদারতার নামে ভাবের ঘরে চুরি?