বহরমপুর, নিমতলা গ্রীণফার্ম আনন্দমার্গ স্কুলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

বহরমপুর, গ্রীনফার্ম ঃ স্থানীয় অক্ষয় সমিতির ক্রীড়াঙ্গনে সুদৃশ্য মঞ্চে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা অবধূতিকা আনন্দপূর্ণজ্যোতি আচার্যার উদ্যোগে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাবৃন্দের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় বহরমপুর গ্রীণফার্ম আনন্দমার্গ স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হ’ল৷ শুরুতেই ‘মহর্ষি প্রণাম তোমায়.....’ একটি আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে নৃত্য সহযোগে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য সুতীর্থানন্দ অবধূত৷ প্রধান অতিথি ছিলেন বহরমপুর গার্লস্ কলেজের অধ্যাপক কাজল কুমার সাহা৷ বিশেষ অতিথি ছিলেন অবধূতিকা আনন্দসংশুদ্ধা আচার্যা, এডুকেশন ইন চার্জ, ওমেন ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেণ্ট, আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ৷

সভাপতি আচার্য সুতীর্থানন্দ অবধূত বিশ্ববন্দিত মহান দার্শনিক ও শিক্ষাগুরু শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার যিনি ধর্মগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি নামেও সমধিক পরিচিত, তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ অতিথিবৃন্দকে পুষ্পস্তবকে বরণ করে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রাবৃন্দ৷ অধ্যাপক কাজল কুমার সাহাকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্বর্ধিত করা হয়৷

অধ্যাপক সাহা তাঁর বক্তব্যে আনন্দমার্গের নব্যমানবতাবাদী শিক্ষাব্যবস্থার ভূয়ষী প্রশংসা করেন৷ তিনি বলেন, এছাড়া প্রকৃত শিক্ষা সম্ভব নয়৷ তিনি আরো বলেন, মা-বাবা ওপরিবারের মধ্যে থেকে শিশু প্রথমেই আচরণ শিখবে৷ তাই বাবা-মা ও পরিবারের অন্যরা শিশুর সার্বিক বিকাশে সর্বদা আদর্শের পথে থেকে সজাগ হয়ে শিশুর প্রতি লক্ষ্য রাখবেন৷ তার সাথে সাথে নব্যমানবতাবাদের পথে তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বদা সচেতন থাকবেন৷

অবধূতিকা আনন্দ সংশুদ্ধা আচার্যা বলেন, আনন্দমার্গের শিক্ষাব্যবস্থা হ’ল ‘সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে’ তা-ই বিদ্যা যা মানুষকে সমস্ত বন্ধন থেকে অর্থাৎ প্রতিবন্ধকতা থেকে চিরতরে মুক্ত করে৷ তাই আমরা বিশ্বের কোণে কোণে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে ছড়িয়ে দিতে হাজার হাজার সুকল তৈরী করে পরিচালনা করছি৷

সভাপতি আচার্য সুতীর্থানন্দ অবধূত বলেন---শিক্ষার মূলত তিনটি স্তম্ভ৷ নৈতিকতা, বিশ্বৈকতাবাদ ও আধ্যাত্মিকতা৷ এই তিনটি ভিন্ন প্রকৃত শিক্ষা কখনই সম্ভব নয়৷ তিনি সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে-এরও ব্যাখ্যা করেন৷ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রারা বিশ্ববন্দিত মহান দার্শনিক ও কালজয়ী শিক্ষাগুরু শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার রচিত ও সুরারোপিত প্রভাতসঙ্গীত---

‘সবারে করি আহ্বান......’, ‘তুমি রূপে ভূবন আলো করা.....’

‘তুম হো মেরে কৃষ্ণ....’, ‘কে গো পলাশ বনে.....’

অবলম্বনে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে প্রশংসিত হয়েছে৷ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাবৃন্দের অক্লান্ত শ্রম ও পরিচালনায় ছাত্রাবৃন্দ বিভিন্ন ছড়া ও শিশুসঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য, ছড়াপাঠ, আবৃত্তি, বাংলা, সংস্কৃত, ইংরেজীতে বাণী পাঠ ও ইংরেজী রাইমস্ প্রভৃতি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশন করে৷

অনুষ্ঠানে অন্যতম বিষয়টি ছিল আসন৷ স্বস্তিকা সরকার , শুভদীপ মজুমদার ও লিজা এই তিনজন বিভিন্ন রকমের আসন দেখিয়ে দর্শকমণ্ডলীকে অবাক করে দিয়েছে৷ তার আগে মঞ্চে আসন সম্পর্কে ও আসনের গুণাগুণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হয়৷

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ বিশ্ববন্দিত মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের গল্প অবলম্বনে ‘গড় সায়রের গপ্পো’ নাটকটি মঞ্চস্থ করা হয়৷ নাটকটির অভিনয়, আলোকসজ্জা ও ভিডিওতে নাটকের দৃশ্যায়ন দর্শকমনে রেখাপাত করেছে৷ নাটকটি পরিচালনা করেন পূর্ণেন্দু মণ্ডল ও ভিডিওতে নাটকের পরিবেশ প্রদর্শনে আলোকপাত করেন আচার্য কৃষ্ণপ্রসন্নানন্দ অবধূত৷

সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানে সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা অবধূতিকা আনন্দ পূর্ণজ্যোতি আচার্যা৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন অবধূতিকা আনন্দকর্মব্রতা আচার্যা ও প্রশান্ত দত্ত৷

সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রী গৌরাঙ্গ  ভট্টাচার্য