চার ম্যাচ বাকি থাকতেই আই.লিগ.মোহনবাগানের

সংবাদদাতা
ক্রীড়াপ্রতিনিধি
সময়

হোলির দিনে সবুজ মেরুণ রঙে রাঙিয়ে দিয়ে গেল ১৩০ বছরের মোহনবাগানকে ৷ বিশাল চেহারার ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর ড্যানিয়েল সাইরাসকে দেখা গেল নাচের মধ্যমণি হতে৷ সকলের নাচানাচি থামতেই মোহনবাগান কোচকে  আকাশে তুলে ধরল পুরো দল৷ কল্যাণী স্টেডিয়ামের বাইরে তখন বাজির আওয়াজে কান ঝালাফালা  হওয়ার উপায়৷

মোহনবাগানের প্রাক্তন খেলোয়াড় ও কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন---জাতীয় লিগ ও আই লিগ নিয়ে মোট পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান৷ তার মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার জাতীয় লিগ জয়ের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি৷ তাই জানি, লম্বা এই লিগে  সাফল্য পেতে গেলে  কোচের ভাবনা , পরিকল্পনা, কার্যকারিতা  ও খেলার গতি, পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে আলাদা হতে লাগে৷ সঙ্গে ড্রেসিংরুমের সংহতিটাও ধরে রাখতে হয়৷ যে কাজটা এবার মোহনবাগানে কিবু ভিকুনা সুন্দরভাবে প্রদর্শন করেছেন৷

এই জয়ের প্রসঙ্গে প্রাক্তন মোহন  বাগান কোচ আরও বলেন---মরসুমের শুরুতে  ডুরান্ড কাপ, কলকাতা ও এরপর বাংলাদেশে গিয়ে সাফল্য পায়নি মোহনবাগান৷ আক্রমণ ভাগে সালভা চামোরো ছন্দে ছিল না৷ কিবু নতুন উইন্ডোতে চামোরোকে সরিয়ে আনলেন পাপাকে৷ যে প্রথমতিন ম্যাচে গোল পায়নি৷ কিবু কিন্তু ওকে আস্থা রেখে  খেলিয়ে গিয়েছেন৷ ডার্বি থেকে গোলের পর গোল করেই যাচ্ছে পাপা৷ আশুতোষ মেহতা মরসুম শুরুর দিকে সাইড ব্যাকে ভাল খেলছিল না৷  কিবু কিন্তু ওর উপরে ভরসা রেখে ঠিক তৈরি করে নিয়েছেন৷ গোলকিপার শঙ্কর রায়ের ত্রুটি বিচ্যুতি না ভেবে সর্বক্ষণ ওকে ভাল খেলতে উৎসাহ দিয়েছেন৷ তাই ছেলেরাও ওঁর জন্য জান লড়িয়ে দিয়েছে মাঠে৷

পাশাপাশি পুরোনো  জমানার  সেই রক্ষণ থেকে তারকা  ফুটবলারের  উদ্দেশে বল তুলে দিয়ে গোল করার রাস্তায় হাঁটেননি কিবু৷ বদলে স্পেনীয় ঘরানার  আক্রমণাত্মক  পাসিং ফুটবল  অর্থাৎ---বল ছাড়ো, জায়গা  নাও, বল ধরো--- এই পদ্ধতি ও দর্শনে দলকে  এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন৷ তাই ২৩ পাসের গোল করে মোহনবাগান এই আই লিগে সাড়া ফেলেছে৷ দিয়েছে নতুনত্ত্বের সন্ধান৷ সঙ্গে নংদম্বা নওরেমের গতি, সুহের  ভি.পি.কোমরন তুর্সুনভের  চকিতে জায়গা বদল, রক্ষণ ও মাঝমাঠে ফ্রান মোরান্তে-ড্যানিয়েল সাইরাস-ফ্রান গঞ্জালেসের ত্রিভুজ পাহাড়ের মতো নির্ভরতা প্রদান করেছে এই মোহনবাগানকে৷ রণনীতি বিপক্ষ দলগুলো বুঝতে  না পারায় আলাদা রকমের লেগেছে মোহনবাগানকে৷ যার  ব্যান্ডমাস্টার  সেই কিবু ভিকুনা৷

সব শেষে  একটা কথা তিনি আন্তরিকভাবে জানান --- আই লিগের খেতাব জয়ের পরে ডার্বি ম্যাচ খেলতে নামবে মোহনবাগান৷  ১৯৯৯-২০০০ সালে আমার কোচিংয়ে জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েও  ডার্বিতে হেরেছিল৷ তাই আমি কিবুকে সতর্ক করতে চাই যে আত্মতুষ্টি  যেন ড্রেসিংরুমে প্রবেশ না করে৷ জোড়া ডার্বি জিতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হবার মজাই আলাদা৷