প্রবন্ধ

ভারতবাসীর মোহ নাশ ঘটবে কবে?

হরিগোপাল দেবনাথ

(পূর্বেপ্রকাশিতের পর)

বর্তমান ভারতে আমরা কেমন পরিস্থিতিতে দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছি, এর কিঞ্চিৎ আভাস ফুটিয়ে তুলতে ক্ষুদ্র প্রয়াস নিচ্ছি৷ তবে, তারও  পূর্বে বলে নেওয়া ভাল (এমনটা না বলে সঙ্গত কারণেই বলা সমীচীন মনে করছি) যে, --- বর্তমানের এই দুর্বৃত্তপনা কেবল আজকের বোনা ফসল ঘরে এল তা কিন্তু নয়--- ১৯৪৭-এর সময় থেকেই সেই চাষাবাদ শুরু হয়েছিল এখন যার বনেদীয়ানা এলমাত্র৷ নীচে এ মর্মে কতিপয় তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপিত করছি ঃ---

‘২১-এর নির্বাচনে কেন্দ্রের মন্ত্রীগণ পশ্চিমবাঙলায় রাষ্ট্রীয় শক্তির আস্ফালন দেখাচ্ছেন দলছুটদের হাত ধরে

প্রবীর সরকার

পশ্চিম বাঙলায় রাজ্যস্তরে ২১-এর যে নির্বাচন হচ্ছে সেটিকে  প্রথম থেকেই লক্ষ্য করছি একটা অতি বিসদৃশ ঘটনা৷ সেটি হলো এই রাজ্যে যে নির্বাচন হচ্ছে সেটা যেন মমতার  তৃণমূল দলের সরকার আর বিজেপি--- যে দলটা গড়ে উঠেছে প্রথম থেকে  দলছুট নেতাদের নিয়ে তৃণমূলের সদস্যগণই এখানে জড়ো হয়ে সরাসরি নির্বাচনে লড়ছে যাকে সম্পূর্ণ মদৎ দিয়ে চলেছেন রাজ্যের বাহির থেকে আসা বিজেপি দলের নেতারা কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্যান্য হিন্দি বলয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা৷ তাঁরা রাজ্যের বোটে ঢাকে কাঠি পড়ার আগে থেকেই যেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মতো সাজ রবে চিৎকার করছেন৷ কতবার যে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীগণও অন্যান্য নে

অর্থের বর্হীস্রোত ঘটিয়ে বাঙলাকে শোষণ করে সোনার বাঙলা গড়া কখনোই সম্ভব নয়

এইচ.এন. মাহাত

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোদীজী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সকল ছোট বড় নেতা মন্ত্রী সান্ত্রীরা বাঙলার নির্বাচনে বলে বেড়াচ্ছেন বাঙলা জয় করলে আগামীতে সোনার বাঙলা গড়বেন৷ বাঙলাতো বরাবর ধন ধান্যে,বিদ্যা বুদ্ধিতে, জ্ঞানে বিজ্ঞানে, বৈদগ্দে মনিষায়,শৌর্যেবীর্যে বরাবর  সোনার বাঙলাই ছিলো৷ অতীতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের  শোষণে   বর্তমানে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের রাজনৈতিক চক্রান্তে বাঙলা ও বাঙালীর বর্তমান করুনদশা হয়েছে৷ এরা বলছে কিনা বাঙলাকে সোনার বাঙলা বানাবে৷

পরিবেশ

কণিকা দেবনাথ

পরম শ্রদ্ধেয় দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর রচিত একটি গানের মধ্যে বলেছেন--- ‘মানুষ যেন  মানুষের তরে সব কিছু করে যায়, একথাও যেন মনে  রাখে৷ পশু পাখী তার পর নয়, তরুও বাঁচিতে চায়৷’

মানুষ পশু পাখী তরুলতা,জলবায়ু মাটি সব নিয়েই আমাদের পরিবেশ৷ এই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে৷ এই সহজ সত্যটা জানা সত্ত্বেও মানুষের সীমাহীন লোভ দিন দিন পরিবেশকে বিষময় করে তুলছে৷ বিশেষ করে যন্ত্র শিল্পের  বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে৷

আজ বলব শুধু বায়ু দূষণের কথা---

ওরা দু’পায়ে দলে, মরণ শঙ্কারে,

পথিকবর

১৮ই এপ্রিল ১৯৩০-বাঙলার সশস্ত্র বিপ্লবের ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে লেখা একটি দিন৷ না, সভা-সমিতিতে জ্বালাময়ী বত্তৃণতা দিয়ে নেতা হওয়ার জন্যে নয়, মাতৃভূমির মুক্তির জন্যে আত্মত্যাগের এক দুর্লভ ইতিহাস৷ সাম্রাজ্যবাদী অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসককে যোগ্য জবাব দিতে বাঙলার ঘরে ঘরে তখন নবজীবনের সাড়া৷ একতরফা মার খাওয়ার দিন শেষ৷ সাম্রাজ্যবাদী বিদেশী শাসককে এবার যোগ্য জবাব দিতে হবে৷ পরাধীনতার যন্ত্রণা জাগিয়ে তোলে বাঙলার সুপ্ত যৌবনকে৷ নেতৃত্বের লোভে নয়, দেশের জন্যে স্বাধীনতার জন্যে আত্মত্যাগের, জীবন উৎসর্গের প্রতিদ্বন্দ্বিতা---‘আগে কে বা প্রাণ করিবেক দান, তারই লাগি কাড়াকাড়ি৷’ পরাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসের পাতায় ওই সময়

দেশের শাসকগণ নির্বাচন করছেন না জনগণের সঙ্গে ঠাট্টা তামাশা করছেন সেটা বোঝা যাচ্ছে  না!

সঞ্জয় দেব

পশ্চিমবাঙলার রাজ্য নির্বাচনটাকে এক ভয়ঙ্কর কুৎসিত দলবাজির যাকে নেতা ও অভিনেতাগণ বলেন খেলা বা খেলযুদ্ধ সেই খেলাটা চলছে কয়েকমাস ধরে করোনার কবলে আক্রান্ত পশ্চিমবাঙলায়৷ এটা আবার অনেকে কুরুক্ষেত্রের অসম যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন৷ তবে স্মরণে রাখা দরকার কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বাঙালীরা অংশগ্রহণ করেনি৷ প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজা খাদ ও যিনি নরকাসুরের পুত্র ছিলেন তিনি কৌরবদের পক্ষ গ্রহণ করেন৷ এই প্রাগজ্যোতিষপুরটি ছিল উত্তর বাঙলা ও অসমে অবস্থিত৷ শ্রীকৃষ্ণ নাকি নরকাসুরকে দমন করেন তাই তার পুত্র ক্ষুদ্ধ হয়ে কৌরবদের পক্ষ নেন ও যুদ্ধে হস্তি যোগান দেন৷

ভয়ঙ্কর ফ্যাসিষ্ট শোষক ধেয়ে আসছে  বাঙলায়

মনোজ দেব

মার্কস শোষণ বলতে ভেবেছিলেন---শ্রমিক শ্রেণীকে ন্যায্য পাওনা না দিয়ে পুঁজিপতিরা যে মুনাফা লোটে সেটাই শোষণ৷ এটাও শোষণ কিন্তু এই শোষণের আগেও আরও শোষণ আছে৷ শোষণের সঠিক সংজ্ঞা একমাত্র প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকেই পাওয়া যায়৷ প্রাউট প্রবক্তার ভাষায়---একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমার মধ্যে অবস্থিত তথাকার জনগোষ্ঠীর দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশকে স্তম্ভিত করে, ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শ্রম ও মানসিক সম্পদের অবাধ লুণ্ঠনই হ’ল শোষণ৷

ভারতবাসীর মোহ নাশ ঘটবে কবে?

হরিগোপাল দেবনাথ

১৯৪৭ সালে বছরের মাঝামাঝি পার হয়ে এসে ভারত ব্রিটিশশাসনের নাগপাশ তথা সাম্রাজ্যবাদী উপনিবেশবাদী বন্দী দশা থেকে মুক্তিলাভ করেছিল৷ তবে, যেহেতু অতটুকু মুক্তি পেতে গিয়েই বহু বছর ধরে লাখো লাখো ভারতবাসীকে শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আধ্যাত্মিক---সকল দিক থেকেই অপারিমেয় মাত্রায়  দুঃখ-কষ্ট ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হয়েছিল৷ অনশনে, অর্ধাশনে অসংখ্য মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে নিজেদের শঁপে দিতে হয়েছিল৷ স্বাধীনতার দাবী নিয়ে আন্দোলন চালাতে গিয়ে হাজার হাজার প্রাণ বলি হয়েছে, দ্বীপান্তরে নির্বাসনে যেতে হয়েছে---ব্রিটিশের বুলেটের ঘায়ে মরণকে আলিঙ্গন করতে হয়েছে---কাউকে বা আহত হয়ে