প্রবন্ধ

ভাত দেবার নাম নেই কিল মারার গোঁসাই

হরিগোপাল দেবনাথ

ত্রিপুরা রাজ্যে সিপিআই (এম)নেতৃত্বাধীন উল্লেখযোগ্য অপকীর্তি সমূহের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ অপকীর্তিটা ছিল, তাদের স্বজন-তোষণ ও ক্যাডার -তোষণ অপকর্মের জাজ্জ্বল্যমান’ দৃষ্টান্ত---১০,৩২৩ জন শিক্ষক-নিয়োগ প্রচলিত নিয়ম-রীতি, দেশের আইন ও শিক্ষানীতি, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ইত্যাদির বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করেই স্রেফ গায়ের জোরে চালিয়ে দেওয়া৷ বস্তুতঃ স্বজন-পোষণসহ অহংকার প্রমত্ততা যে কতই বেসামাল হয়ে উঠতে পারে, এরও যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া ত্রিপুরার উচ্চ ন্যায়ালয় তথা হাইকোর্টের রায়কেও রীতিমত অবজ্ঞা করে ভারতের শীর্ষ আদালত সুপ্রীমকোর্টে গিয়ে আপীল করা৷ শিক্ষক-নিয়োগের ক্ষেত্রে যে নীতিলাঞ্ছিত হয়েছিল তাও ছাপিয়ে  গিয়েছিল

ভারতে বিপন্ন বাঙালী

এইচ.এন. মাহাত

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭৪ বছর অতিক্রান্ত৷ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সব থেকে বেশী যারা আত্মত্যাগ করেছে, স্বাধীনতার বেদিমূলে জীবন  উৎসর্গ করেছে, স্বাধীন ভারতে সেই বাঙালী জাতির অস্তিত্ব আজ বিপন্ন৷ স্বাধীনতার জন্মলগ্ণ থেকেই বাঙালী ভারতে বৈষম্যের শিকার৷ কারণ আর কিছুই নয়, বিদেশী বেনিয়া স্বদেশী বণিকের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশ ছেড়ে গেছে৷ সেই স্বদেশী শোষক শাসকের কাছেও বাঙালী ততটাই আতঙ্কের, যে আতঙ্কে ব্রিটিশ ভারত ছেড়ে গেছে৷

৫ই মার্চের মর্মান্তিক ঘটনা

প্রভাত খাঁ

মনে পড়ে ৫ই মার্চে ১৯৬৭ সালের সেই দিনের কথা৷ আমি কয়েকজন ছাত্রকে নিয়ে একটি সেমিনারে গিয়েছিলাম দক্ষিণ কোলকাতার একটি স্থানে৷ এদিকে ৫ই মার্চেই পুরুলিয়ার আনন্দনগরে আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রমে স্থানীয় হামলাকারীরা আশ্রম আক্রমণ করে আমাদের ৫জন সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে প্রকাশ্যে দিবালোকে বেলা ১০টার মধ্যে তাঁদের জোর করে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে!

সময়োচিত কিছু কথা

বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়

বাঙলা কেন ভারতের কোনও রাজ্যেই একশ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থানের (শুধুমাত্র চাকরি নয়) ব্যবস্থা হয়নি৷ এর অন্যতম কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যে ধরনের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার  ছিল তা নেওয়া হয়নি৷ সেটা অজ্ঞতার কারণেও হতে পারে, আবার রাজনৈতিক ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল তা ইচ্ছে করেই করা হয়নি৷ ভারতের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুই অনুভব করেছিলেন দেশবাসীর হাতে অর্থনৈতিক ক্ষমতা না এলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে যাবে৷ তিনি বুঝেছিলেন অর্থনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত নাহলে ব্রিটিশদের শোষণ বন্ধ হয়ে শুরু হবে দেশীয় পুঁজিপতিদের শোষণ৷ আজ তারই চ

সমবায়ের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গণমুখী করতে হবে

প্রবীর সরকার

ব্যষ্টি নিয়ন্ত্রিত ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ব্যবস্থাই অদ্যাবধি পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ও মূলতঃ বন্টন ব্যবস্থাকে পরিচালিত করছে৷ এদের যথাক্রমে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রক সাম্যবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করা হয়৷

আজ এই দুটিই উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থাই শোষণের হাতিয়ার হিসাবে চিহ্ণিত হচ্ছে৷

সারা পৃথিবীতে চলছে চরম অর্থনৈতিক শোষণ৷ বর্ত্তমানে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই স্বনামে ও বেনামে কাজ করে চলেছে৷ এই দুই ক্ষেত্রেই শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী নানাভাবে আর্থিক দিক থেকে শোষিত হচ্ছে৷

বোটারগন সজাগ হোন দলীয় স্বার্থে পবিত্র নির্বাচনকে যেন আর কালিমালিপ্ত না করা হয়!

প্রভাত খাঁ

গণতন্ত্রে সকলেরই মতামত দান করার অধিকার আছে এটাই আইনসিদ্ধ৷ বর্ত্তমানে এই কথাটাই প্রবাদবাক্যের মতো হয়ে গেছে৷ ভারতের গণতান্ত্রিক অধিকারটির জন্য শুধু বর্ত্তমানে ১৮ বছর বয়স হলেই বোট দানের অধিকার পাওয়া যায়৷ তবে প্রার্থী হতে হলে আরো কিছু বছর অপেক্ষা করতে হয়৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় দেশকে চিনতে জানতে ও জনসেবায় যুক্ত হতে হয় অর্থাৎ জনসংযোগ কিছুটা দরকার হয়৷ কারণ রাজনৈতিক নেতা আকাশ থেকে তো পড়ে না৷ তাই বাস্তবের মাটিতে যিনি নির্বাচনে দাঁড়াবেন তাঁকে কিছুটা জনগণের অভাব অভিযোগ জানতে হয় ও সেবার দ্বারা কিছু জনসেবা করে পরিচিত হতে হয়৷ অতীতের নেতাদের দেখা গেছে প্রচণ্ড জনসংযোগ ছিল নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে মানুষের সঙ

কর্ষকদের আন্দোলন শোষণ মুক্তির জন্যে

হরিগোপাল দেবনাথ

ভারতে বিগত কয়েকমাস ধরে কর্ষক বিদ্রোহ এখন নোতুন একমাত্রা পেতে চলেছে৷ সম্প্রতি ভারতের সংসদের কোন কক্ষেই আলাপ-আলোচনা না করে জনগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিমত জানারও কোনরকম তোয়াক্কা না রেখে, বর্তমানের মোদী শাহ জমানা দেশের ‘‘কৃষি ও কর্ষক-স্বার্থ বিরোধী’’ যে আইন তিনটে পাশ করিয়ে নিলেন, এ থেকেই প্রমাণ করিয়ে দিলেন যে, মোদিজীর ভারতে ‘গণতন্ত্র’-টা ‘বাৎকী বাৎ’ মাত্র৷ এছাড়া মানুষকেই বেওকুফ বানাবার এক সুচিন্তিত কৌশলমাত্র৷ বিশেষ করে মোদী শাহ জমানার এই পদক্ষেপ বিগত শতাব্দীর ‘ইন্দিরাজী জমানাকেও’ হার মানিয়েছে৷ কেননা ইন্দিরাজী ভারতের সংসদ ও কেবিনেটকে পাত্তা না দিয়ে ঘুমে রেখে দেশে আচম্‌কা ‘জরুরী অবস্থা’

নেতা অভিনেতা!

 অভিনেতাদের বাস্তব জীবনের দিকটা আমরা কেউ খোঁজ খবরই রাখি না৷ নেতাদের জীবনের শেষদিনের খবর সাধারণ মানুষের নখদর্পণে থাকে৷ তাদের পাপ পূর্ণ ভালো মন্দ শেষ বয়সে জনসাধারণ বিচার করেন৷ নেতা ও অভিনেতাদের বাস্তব জীবনে কিছু মিল আছে যেমন---এঁরা দুই জনই টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না৷ জীবনটাকে উপভোগ করে ব্যষ্টিগতভাবে৷ তাই এদের স্থায়ীভাবে কোন আদর্শ থাকে না৷ বর্তমান নেতাদের জাতিসত্তা, দল বা দেশের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা থাকে না৷ স্বার্থে ঘা লাগলে মান সন্মানের নামে বা অন্য কোনো অজুহাতে এক মুহূর্তে দল বদল করতে কুন্ঠাবোধ করে না৷ লেনদেনের বা ভাগ বাটোয়ারায় কম হলে বা অন্য দলের বড় টাকার অফার থাকলে বলতে থাকবে আমাকে সন্মানের সঙ্

বিজেপির শেষের সেদিন আসছে

এইচ.এন. মাহাত

 ‘‘একের স্পর্ধারে কভু নাহি দেয় স্থান দীর্ঘকাল নিখিলের বিরাট বিধান৷’’

প্রাকৃতিক নিয়মে অহংকারী দল বা নেতৃত্বের পতন খুব তাড়াতাড়ি হওয়াই উচিৎ৷ একটি প্রবাদে শুনতাম ‘‘অহংকার পতনের কারণ৷’’ এতে নাকি জনগণের কল্যাণ সাধিত হয়৷ বঙ্গদেশে সিপিএমের আমলে বঙ্গেশ্বর মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মহাশয় ক্ষমতার গর্বে মদমত্ত হয়ে বলে ছিলেন--- রাজ্যটা আমরা চালাই, সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে আমরা যা বলবো তাই হবে৷ উনি বলেছিলেন ওঁরা ৩৪ আমরা ২৩৪ আমাদের   কথাই শেষ কথা৷ আর এক বঙ্গেশ্বর মিষ্টার ‘বসু’ বলেছিলেন জনগণতো ভেড়ার পাল, আমরা যেভাবে চালাবো জনগণ সেইভাবে চলবে৷

সুগভীর ষড়যন্ত্রের শিকার বাঙাল

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

দীর্ঘ ৭৩ বছরের স্বদেশী শাসনে বাঙলার সমাজ জীবনের সর্বস্তরে  তার ধর্ম সাধনায়, তার কর্ম সাধনায়, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি সর্বস্তরে আজ বহিরাগত অশ্লীল অসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ সমাজ জীবনে ও ব্যষ্টি জীবনে নিম্নমানের পরিবর্তন এনেছে৷ তার রুচিতে, তার চাল-চলনে, আচার-আচরণে তারই প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে৷ আসলে স্বাধীনতার পরেই বাঙালীর জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্র্ভগ্য৷ এই দুর্র্ভগ্য তার স্বরচিত নয়, দেশভাগ, লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুর,তার অর্থনৈতিক বিপর্যয় , সামাজিক অস্থিরতা এর কোনটির জন্যেই বাঙালী দায়ী নয়৷ বাঙলাকে এইপথে আসতে বাধ্য করেছে বিদেশী-স্বদেশী বেনিয়াগোষ্ঠী ও তাদের অর্থে পালিত রাজনৈতিক দল ও নেতারা৷ যাদের লক্ষ্য বাঙাল