জঙ্গল মহল আজও পরিবর্তন চায়

লেখক
হরনাথ মাহাত

পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হলো৷  জঙ্গলমহল এবার  তৃণমূল  দল থেকে  বিজেপি  দলকে বেশী পছন্দ করেছে৷ কেন? কী তার জবাব?  উত্তর কারোর জানা  নেই৷ প্রথমে  কংগ্রেস, সিপিএম  তারপর  মাওবাদী এর পর তৃণমূল এখন বিজেপি  দলকে সামনে এনে মুখের স্বাদ পরিবর্ত্তন  করার একটা  প্রবনতা স্থানীয়  নেতাদের  ইচ্ছা জাগে  আর সাধারণ  মানুষ ভেড়ার  পালের  মত তাঁদের  পিছনে  দৌড়ায়৷ (আমি ইচ্ছা করে রাঢ়ের  বা জঙ্গলমহলের  মানুষকে  ভেড়া  বলিনি৷  আমার গুরুদেব শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী খুবই শ্রদ্ধা করতেন আমিও করি৷ পরিস্থিতি বলতে বাধ্য করেছে)

পুরুলিয়া জেলাকে ইন্দিরা গান্ধী বন্ধা অঞ্চল বলে ছিল৷  সিপিএম তাঁর  ভোট ব্যাঙ্ক তৈরী করেছিল কেউই  সার্বিকভাবে  মাষ্টার পরিকল্পনা করেনি  আর  তৃণমূল পুরুলিয়ার মানুষকে ব্যবহার করেছে ভোটার  হিসাবে৷ শুধু মাত্র ২ টাকা চাল, কিছু খয়রাতি বা সামগ্রিক ত্রাণসহ  কিছু রাস্তা তাও প্রত্যান্ত  গ্রামে  গেলে  এখনো  মেঠো মেরাম  পথও পাওয়া যায় না৷  তাও আবার  যত নোতুন  প্রোজেক্ট  হয়েছে কিছু সংখ্যক  নেতারা  তত বেশী  কাট মানি অর্থাৎ  দালালীর  টাকা  পকেটে  পুরেছে ৷ এরফলে  অন্যান্য চুনোপুটি  বা সাধারণ মানুষ  এগুলি দেখেছে  আর ভেতরে  ভেতরে  বিক্ষোভ তৈরী করেছে, যার পরিণতি  বার বার দল  বদল৷  মানুষ বা নেতা  দল বদলায় কিন্তু তাদের ভেতরের মোহ, লোভ, লালসা, কু-বৃত্তি গুলোতো আর বদলায় না৷  জঙ্গলমহল বা রাঢ় বাংলার নেই কোন নৈতিক শিক্ষার  সঙ্গে সঙ্গে  জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির  ব্যবস্থা, মানবিক মূল্যবোধ, কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা  তৎসহ আধুনিক প্রযুক্তির কৃষি ব্যবস্থা নেই৷ প্রতি ইঞ্চি জমিতে জল সেচের ব্যবস্থা নেই৷ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের  বাইরে৷ এর জন্যেই  এই পরিবর্ত্তন৷ তৃণমূলের  শেষ  ৬ বছরে যত চাকুরী হয়েছে তার ৯৭ শতাংশ  বহিরাগত  যারা জঙ্গলমহল বা পুরুলিয়াকে চিরকাল হীন দৃষ্টিতে  এতদিন  দেখেছে৷ আপনি  যদি রূপসী বাংলা ট্রেনে পুরুলিয়া থেকে  মেদিনীপুর পৌছান  তাদের ভাষাগুলি শুনলে বুঝতে পারবেন তারা কতটুকু  পুরুলিয়াকে ভালোবাসে৷  সেই বাম আমল থেকে দেখেছি এখানে চাকুরীজীবি বহিরাগতরা৷ এখানে  কী কোন শিক্ষিত ছেলেমেয়ে নেই যারা জঙ্গল মহল  বা পুরুলিয়াতে চাকুরী করতে পারে৷  সাহিত্যিকের ভাষায়, সেই ট্র্যাডিশন  এখনো  বয়ে চলেছে৷  এর পরিবর্ত্তন  চাই৷  শোষণের  অবসান চাই৷

রাঢ়ের উন্নতির জন্যে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তথা শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার তার সামাজিক- অর্থনৈতিক-দর্শন  প্রাউটের  মাধ্যমে একটি পরিকল্পনা দিয়েছেন৷ আসুন, আমরা  পুঁজিবাদী বা কমুনিষ্ট দর্শনের ধারক বাহক  কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, তৃণমূল সহ তথাকথিত শোষকদলগুলির  বিরুদ্ধে সরব  হই৷  নোতুনকে গ্রহণ করি ও নোতুন প্রজন্মকে রক্ষা করি সেটাই  হবে আসল পরিবর্তন৷