মানালী ভ্রমণ

লেখক
আশীষ দত্ত রায়

পূর্বপ্রকাশিতের পর,

কোনও স্থানে অটল, স্থিতিশীল হয়ে রইলে অঞ্চলের সুবিধাগুলি নিশ্চিত ভোগ করা যায়৷ কিন্তু অসুবিধা গুলোকেও অনিবার্যভাবে দুর্র্ভেগ করতে হয়৷ তাই একটা রীতির মাথায় রেখে পথ চলতে হয়৷

সুর-নর-মুনি কি এহি রীতি৷

স্বার্থ লাগি করে সব প্রীতি৷৷

অতএব পর্যটকদের কার্পণ্য স্বভাবের আধিক্য থাকলে পথে ঘাটে দুর্র্ভেগের আধিক্য অনিবার্য৷ আর যেহেতু স্থিতিশীলতা কারো কারো অদৃষ্টলিপিতে নেই তাদের চালচলন স্থিতিবাদীদের মত হওয়া মুসকিল৷ স্থানীয় অধিবাসীদের স্বার্থটুকুকে অগ্রাধিকারের আওতায় রাখলে এই পাহাড়ী অঞ্চলে বেশ সুব্যবহার পাওয়া যায়৷ স্থানীয়রা এটা বেশ জানে এই পর্যটকেরাই তাদের জীবিকার প্রধান উপায়৷

সামান্য আয়াসেই গাইয়ের দুধের ব্যবস্থা করা গেল৷ গাইয়ের মালকিনের সারল্য প্রশ্ণাতীত৷ দর সমতলের তুলনায় অবিশ্বাস্য হলেও কম৷ স্থানীয়দের থেকে আহার্যের উপকরণ জোগাড় করতে পারলে দেখা গেল মূল্য কম পড়ে৷ তুলনায়-ব্যবসায়ীদের থেকে সংগ্রহ করলে মূল্যমান কিঞ্চিৎ অধিক৷ এর মধ্যে কয়েক দফা স্থানীয় আরো একটি গ্রামে (নাম-ভাঙ্গ) যাতায়াতের সুযোগ হলো৷ সেটি আবার রাজপথের  ধারে৷ স্বাভাবিকভাবেই সেখানে বিপনী সংখ্যা বেশি৷ কিন্তু স্মারকের  দোকান প্রায় নেই৷ কিছু পানাহারে, কিছু মনিহারী, তবে বেশিরভাগ বরফের রাজ্যে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ধরাচুড়ো, পরিধান, আভূষণ ইত্যাদির৷ কিছু ইমারতি দ্রব্যেরও আছে৷ একটু দূরে এক সুস্বাদু পানীয় জলের কুণ্ডের খোঁজ পাওয়া গেল৷ নাম নেহেরু কুণ্ড৷ ভারতের প্রাক্তন রাজনীতিক ও প্রধানমন্ত্রী শ্রী নেহেরুর নামেই তার নামকরণ৷ কারণ জিজ্ঞাসায় জানা গেল তিনি মানালিতে এলে এই কুণ্ডেরই জল পান করতেন৷ বোঝো কাণ্ড৷

রাজপথ ধরে হেঁটেই মানালিতে সহজে পৌঁছানো যায়৷ পাশে বিয়াসকে কে সঙ্গী করে৷ নিঃসংশয়ে জানাতে পারি কিছুতেই একা লাগবে না৷ নদীবক্ষে কিছু অস্থায়ী ঘরও দেখা গেল৷ পথের একপাশে নদী হলে অন্যপাশে পাহাড় নিশ্চিত৷ পাহাড়ের গায়ে নানা তরুশ্রেণী৷ তার মধ্যে কিছু আপেল, ন্যাসপাতি, বাবুঘোষা,খোমানি এই সব ফলের  বাগান উপস্থিত ৷ আর পাইন ইত্যাদি তো সর্বত্র৷ আর দেখা পাওয়া যায় বিপাশার বুকে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ খেলার আয়োজন৷