নীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত সামাজিক-অর্থনৈতিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ গড়তে প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

২০শে নভেম্বর থেকে ২৬শে নভেম্বর ত্রিপুরার তেলিয়ামুড়া আনন্দধারা চক্রনেমিতে অনুষ্ঠিত হ’ল প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির৷ সাত দিনের এই প্রশিক্ষণ শিবিরে সামাজিক-অর্থনৈতিক আধ্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন সৎ ও নীতিবাদী মানুষ গড়ে তুলতে নব প্রজন্মের তরুণদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ষাট জন তরুণ এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন৷

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের নেতৃবৃন্দ মনে করেন দেশের বর্তমান দূরবস্থার কারণ দেশের কর্ণধার তথা রাষ্ট্রের পরিচালকদের স্বচ্ছ বুদ্ধি, সততা, নৈতিকতা ও দৃঢ়নিবদ্ধ সামাজিক-অর্থনৈতিক চেতনার অভাব৷

দেশে সম্পদের অভাব নাই৷ মানুষের দূরবস্থা ও অর্থনৈতিক মন্দার অন্যতম কারণ যোগ্য নেতৃত্ব ও উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাব৷ বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর কোন আদর্শ নেই, সার্বিক উন্নয়নের কোন পরিকল্পনা নেই, সমাজ কল্যাণেও মতিগতি নেই৷ নেতারা একে অপরকে তিক্ত-বিরক্ত করে রাখতে শুধু কলহে মত্ত থাকে৷

নেতৃত্বের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই দেশীয় পুঁজিপতিরা দলগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে৷ তাই রাজনৈতিক দলের ব-কলমে পুঁজিপতিরাই এখন রাষ্ট্র পরিচালনা করে৷ পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করা ছাড়া দলগুলোর পক্ষে জনগণের কল্যাণ করা সম্ভব নয়৷ গণতন্ত্রে যদিও প্রচার আছে জনগণ নির্বাচিত সরকার, কিন্তু তার আড়ালে চলে পুঁজিবাদের টাকার খেলা৷ দেশের বর্তমান সামাজিক-অর্থনৈতিক বেহাল দশার কারণ এটাই৷

শ্রদ্ধেয় দার্শনিক তাঁর গভীর অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে সমাজের ব্যাধিগুলোর পর্যবেক্ষণ করেছেন ও তার সমাধানের পথও দেখিয়েছেন তাঁর প্রবর্তিত প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্বে৷ আজ সর্বপ্রকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান সম্ভব প্রাউট তত্ত্বের বাস্তবায়নের মাধ্যমে৷ অন্য কোন পথ নেই৷ প্রাউটের পথেই গড়ে উঠবে আদর্শ মানব সমাজ৷ কিন্তু তার জন্য আগে চাই সততা ও নীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত আদর্শ মানুষ৷ সমাজকে যাঁরা নেতৃত্ব দেবে তাঁদের শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক দৃঢ়তা ও আধ্যাত্মিক নীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে৷ প্রাউট তত্ত্বের প্রবক্তা সমাজের এই নেতৃত্বের নাম দিয়েছেন ‘সদ্বিপ্র’৷ এই সদ্বিপ্র নেতৃত্ব গড়ে তোলার সুনির্দিষ্ট পথ-নির্দেশনা প্রাউট তত্ত্বে আছে৷

সাত দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে নব প্রজন্মের তরুণদের সামাজিক-অর্থনৈতিক চেতনা সম্পন্ন করে তুলতে ও শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ সাত দিনের এই শিবিরে নতুন জীবনের সন্ধান পেয়ে তরুণরা উজ্জীবিত হয়৷ তারা অনেকেই সমাজের সার্বিক কল্যাণের কাজে আত্মনিয়োগ করার প্রস্তুতিও নেয়৷

এই প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষক ছিলেন প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের সেক্রেটারী জেনারেল আচার্য রবীশানন্দ অবধূত, কেন্দ্রীয় সংঘটক আচার্য প্রসূণানন্দ অবধূত, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংঘটক আচার্য সুনন্দানন্দ অবধূত, আচার্য ধ্যানাত্মানন্দ অবধূত, দানিশ পাল প্রমুখ৷ প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্ব এই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিলেন৷