রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার ও জনগণকে  বিশেষভাবে সচেষ্ট হতে হবে

লেখক
মুশাফির

আজ ভারতের মধ্যে সবচেয়ে শোষিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত রাজ্য হল, এই ভারতের পূর্বদিকে অবস্থিত পশ্চিমবাংলা৷ কেন্দ্র চিরকালই এই রাজ্যকে শোষিত ও বঞ্চিত করে আসছে৷ যেহেতু পশ্চিমবাঙলা প্রায় ৪১ বছর বিরোধীদলের শাসনে,  তাই কেন্দ্র বিমাতৃসুলভ আচরণ করে রাজ্যকে  প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করে আসছে৷  বিশেষ করে দীর্ঘ ৩৪ বছর বাম শাসনের অবসানের পর যে তৃণমূল কংগ্রেস শাসনে এসেছে, সেই রাজ্য সরকারকে বিজেপি নানা ভাবে আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত করে আসছে৷ এই কারণে  তৃণমূল কঠোর আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে, সেটা সারা পশ্চিমবাঙলার জনগণ উপলদ্ধি করেন৷ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শিক্ষক, শিক্ষাক্ষেত্রের অন্যান্য  কর্মচারী তথা সরকারী কর্মচারীরা তাদের উপযুক্ত ডি.এ. পান না৷ এরই মধ্যদিয়ে বহু জনহিতকর কাজে হাত লাগিয়েছে এই সরকার৷ এই আর্থিক বঞ্চনায় জনগণ বিচলিত, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে  সমন্বয়ের দারুণ অভাব থাকায় নিছক দলীয় স্বার্থে একচরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে৷ তাদের লক্ষ্য একটাই, তা হলো কি করে রাজশক্তি কায়েম করা যায় ও একমাত্র সেই লক্ষ্যেই তাঁরা সর্বদা সচেষ্ট৷ সমাজে শান্তি রক্ষায় তাদের ঐকান্তির আগ্রহের অভাব রয়েছে৷

গত ২৩শে মে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হয়৷ তাতে যে ফলাফল ঘোষিত হয়, তৃণমূলের লোকসভার সদস্য সংখ্যা ৩৪ থেকে ২২-এ দাঁড়ায়, আর কংগ্রেস দুটি আসন পায়৷ বাকি ১৮টি আসন পায় বিজেপি৷ তারপর থেকে এখন সর্বত্র অশান্তির  আগুন জ্বলছে, যার দরুণ প্রায় প্রতিটি জেলায় সাধারণ নাগরিকগণ দলীয় কোন্দলে অকালে প্রাণ হারাচ্ছে, তাদের  ঘর দোর ধবংস হচ্ছে এমনকি অনেকে প্রাণের দায়ে গৃহছাড়া হচ্ছে৷ এটা হচ্ছে বিজয়োৎসবকে কেন্দ্র করে৷ সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় হিমসিম খাচ্ছে৷

তার ওপর হাসপাতালগুলিতে তরুণ চিকিৎসকগণের ওপর শারীরিক নির্যাতনের কারণে  কর্মবিরতি হওয়ায় সারাদেশে বহু শিশু, নর-নারী অসুস্থ হয়ে বিনাচিকিৎসায়  অকালে প্রাণ হারাল৷ জনগণের রোষ থেকে পুলিশরাও রেহাই পাচ্ছে না৷   একে প্রশমিত করার দিকে কারুরই খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়নি৷ সরকারকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার কথা যেমন ভাবতে হবে ঠিক তেমনি দরিদ্র অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার কথা ভাবতে হবে৷ মাননীয় রাজ্যপাল যাদের ডাকেন শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্যে, তাঁদের মধ্যে দেখা গেল, একজন ভবিষ্যৎ বাণী করছেন--- আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল গো-হারান হারছে৷ শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার আলোচনায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গটা আসে কী করে? এটা একটা কুৎসিৎ মানসিকতা৷ তাই মনে হয় আজ পশ্চিমবাংলা এমন এক পরিবেশের সম্মুখীন হয়েছে যেটা অতি ভয়ঙ্কর, যেখানে গণতন্ত্র বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই৷   স্মরণে রাখা দরকার বাঙালী জনগোষ্ঠী ঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে কখনই ভুল করবে না৷