সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে

লেখক
জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

২০২০ সনের ২৬শে সেপ্ঢেম্বর, ইংরেজী সাল-তারিখ গণনা অনুসারে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহোদয়ের জন্মদ্বিশতবর্ষ পূর্তি দিবস (জন্মঃ ১৮২০ খ্রীষ্টাব্দের ২৬শে সেপ্ঢেম্বর) আমরা উদযাপন করলাম৷ বাঙালী জাতির জীবনে এই প্রাতঃ স্মরণীয় মনীষীর অবদান ও গুরুত্ব অপরিসীম৷ অবিস্মরণীয় কীর্তির অধিকারী পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘‘বর্ণপরিচয়’’ এর মাধ্যমেই বাঙালীর অক্ষর জ্ঞানের শুভারম্ভ৷ এই সেপ্ঢেম্বর মাসেরই ৫ তারিখ ‘‘শিক্ষক দিবস’’ ও   ৮ তারিখ ‘‘বিশ্ব স্বাক্ষরতা দিবস’’ হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়৷ তাই শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে সেপ্ঢেম্বর মাসের সম্পর্ক  অত্যন্ত নিবিড়৷  মানুষের প্রথাগত শিক্ষার সূচনা হয় অক্ষর পরিচিতির দ্বারা৷ এ বিষয়ে বাঙালীদের কাছে অপরিহার্য পুস্তক হলো ‘‘বর্ণপরিচয়’’৷ অক্ষর জ্ঞানের চৌকাঠ পেরোলেই মানুষের সামনে ক্রমশঃ জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডার উন্মুক্ত হয়৷ শিক্ষাদানের জন্যে প্রয়োজন শিক্ষক৷ তাই শিক্ষক , শিক্ষার্থী ও পুস্তক হলো শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ৷ প্রাথমিক ভাবে শিশু তার মাতাপিতার  নিকটই প্রথম শিক্ষা লাভ করে৷ এই শিক্ষা অক্ষর পরিচিতির দ্বারা হতে পারে অথবা কথন-শ্রবণ-এর মাধ্যমেও হতে পারে৷ লিপি ও মুদ্রণ প্রণালী আবিষ্কারের পূর্বে অবশ্য কথন,শ্রবণ ও স্মরণ-ই ছিল শিক্ষা বিস্তারের একমাত্র মাধ্যম৷ সেজন্যেই বেদের অপর নাম শ্রুতি৷ প্রাচীনকালে গুরু শিষ্যকে প্রবচনের দ্বারা শিক্ষাদান করতেন ও যুগ যুগ ধরে এই গুরু-শিষ্য পরম্পরা প্রবহমান ছিল৷ পরবর্তী পর্যায়ে  প্রস্তর, ধাতু ও ভুর্জপত্রের পথ বেয়ে বর্তমান সময়ের মুদ্রিত পুস্তক আমাদের হাতে এসেছে৷

ছাত্র-ছাত্রাদের বিদ্যা শিক্ষার জন্যে অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গগুলি হলো ---শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার মাধ্যম৷ এক্ষেত্রে শিক্ষক নির্বাচন সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ মাতাপিতার পর শিক্ষকই হলেন ছাত্র-ছাত্রাদের সবচেয়ে কাছের মানুষ৷ শিক্ষককেই তারা আদর্শরূপে গ্রহণ করে ও অনুসরণ করার চেষ্টা করে৷ মহান দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, প্রাউট প্রবর্তক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার শিক্ষকদের সম্পর্কে বলেছেন ‘‘প্রথম কথাটি হ’ল, শিক্ষক নির্বাচনে সতর্কতা৷ উপযুক্ত  শিক্ষাগত  অভিজ্ঞান পত্র থাকলেই যে তাকে শিক্ষকতা করার অধিকার দেওয়া হবে এমন কোন কথা নেই৷ তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, ধর্মনিষ্ঠা, সমাজ সেবা, নিঃস্বার্থতা, ব্যষ্টিত্ব ও নেতৃত্বের গুণ থাকতেই হবে৷ শিক্ষক সমাজগুরু৷ তাই যে - সে লোককে শিক্ষকরূপে মেনে নেওয়া কিছুতেই যেতে পারে না৷ শিক্ষকের পদের গুরুত্ব যেমন অধিক তেমনই তার যোগ্যতার মাপকাঠিও বেশ উচঁু ধরণের হওয়া দরকার৷’’

সুতরাং শিক্ষক শুধুমাত্র ডিগ্রীধারী হলেই চলবে না, তিনি হবেন নীতিবাদী ও ছাত্রছাত্রাদের পথপ্রদর্শক৷ অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে ছাত্রছাত্রাদের এমনভাবে শিক্ষাদানের চেষ্টা হয় যার প্রতি তাদের কোন আগ্রহ থাকে না৷ এ সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় শ্রী সরকারের অভিমত--- ‘‘ভয় দেখিয়ে লেখাপড়া শেখাবার কুফল পৃথিবীর অনেক দেশের অধিবাসীরাই হাড়ে হাড়ে ভুগে চলছে৷ অধিকাংশ শিক্ষিত ব্যষ্টিই বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডী ডিঙ্গিয়ে কর্মক্ষেত্রে  প্রবেশ করবার সঙ্গে সঙ্গে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার   অধিকাংশই হারিয়ে ফেলে থাকেন৷ এই সমস্ত লোকের বিদ্যার যদি মূল্য নির্র্ধরণ করতে যেতে হয় তাহলে বলতে হয় এদের ক্ষেত্রে সময়, সামর্থ্য ও পরিশ্রমের অধিকাংশ ভাগই মূল্যহীন বা ব্যর্থ হয়ে গেছে৷

তাই বলছিলুম, ভয় দেখিয়ে কিছু শেখাবার চেষ্টা করা চলবে না৷ জ্ঞানের ক্ষুধা জাগিয়ে দিতে হবে আর তার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা নিবৃত্তির ব্যবস্থা হিসাবে যথোপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে৷ তবেই তা ছাত্রের শরীর, মন ও আদর্শকে ঠিকভাবে গড়ে দেবে৷

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও উপলদ্ধি করেছিলেন, ছাত্র ছাত্রাদের উন্মুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষাদান করতে পারলে তারা ভয় ভাবনা ভুলে প্রাণের আনন্দে শিক্ষা লাভ করবে ও তাদের মনের খোলা জানলা দিয়ে প্রবেশ করে জ্ঞানের আলো অন্তরলোককে উদভাসিত করে তুলবে৷ কবির ভাষায়---

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির,

জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর

আপন প্রাঙ্গণ তলে দিবসশর্বরী

বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি৷’’

বিশ্বকবির প্রার্থনার সার্থক রূপায়ণ বোলপুরে‘‘শান্তিনিকেতন’’ প্রতিষ্ঠা৷ উন্মুক্ত আনন্দময় পরিবেশে শিক্ষা ছাত্র ছাত্রার মনকে অনেক বেশি উদার করে তোলে ও  শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক আরও মধুর হয়৷

শিক্ষার ক্ষেত্রে অপর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষাব্যবস্থা৷ শিক্ষাব্যবস্থা সর্বতোভাবে শিক্ষাবিদগণের দ্বারাই পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন৷ শিক্ষাজগতের আর্থিক দায়ভার বহনের অতিরিক্ত অন্য কোনো সরকারি হস্তক্ষেপ বাঞ্জনীয় নয়৷ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলীয় সরকার দেশ শাসন করতে পারেন  কিন্তু শিক্ষাজগত সর্বদাই সরকারি প্রভাবমুক্ত থাকা একান্ত আবশ্যক ৷

এছাড়াও শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির অনুপ্রবেশ একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত৷ কলুষিত রাজনীতি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশকে সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করে দেয়৷ ছাত্র ছাত্রাদের দাবীদাওয়া থাকতেই পারে, তবে তা সীমিত থাকবে শিক্ষাকেন্দ্রিক বিষয় নিয়েই৷ শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে  শিক্ষার মাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম৷ মাতৃভাষাকেই শিক্ষার মাধ্যমরূপে গ্রহণ করা আবশ্যক৷ মাতৃভাষাতেই সকলে সর্বাপেক্ষা সাবলীল৷ তাই মাতৃভাষার মাধ্যমে অধীত বিদ্যা সহজেই বোধগম্য ও হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব হয়৷ ছাত্র ছাত্রারা অন্যান্য ভাষা অথবা সংযোগকারী ভাষা হিসেবে ইংরেজী বা অন্যকোনো সর্বজনগ্রাহ্য ভাষা শিখতেই পারে, কিন্তু শিক্ষার মাধ্যম অবশ্যই হতে হবে মাতৃভাষা৷

শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো মনের সমস্ত প্রকার কূপমণ্ডুকতা দূর করে জ্ঞানের আলোকে সর্বাত্মক অজ্ঞানতার অন্ধকার মুক্তি৷ বিদ্যা শিক্ষার দ্বারা মানুষের মনের বিস্তার ঘটে ও সর্ববিধ সংকীর্ণতা, কুসংস্কার, ভাবজড়তা দূর হয়ে মন নির্মল ও পবিত্র হতে থাকে৷

মানুষের অস্তিত্ব ত্রিস্তরীয়, ভৌতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক৷ প্রকৃত শিক্ষার দ্বারা মানবিক অস্তিত্বের তিনটি স্তরেরই উন্নতি ঘটিয়ে ব্যষ্টিগত ও সমাজের কল্যাণ সাধন করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য৷ জাগতিক সম্পদ বিপুল হলেও অসীম নয়, তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে পার্থিব সম্পদের বহুমুখী উৎপাদন ও মানবৃদ্ধির দ্বারা মানব সমাজের জাগতিক প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা করতে যথোপযুক্ত শিক্ষা আবশ্যক৷ মানসিক জগৎ অবশ্য অনেক বেশি বিস্তৃত৷ শিল্প, সাহিত্য, সংসৃকতি, ভাস্কর্য, সংগীত ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের মানসিক ক্ষুধার নিবৃত্তি ঘটে,---আর তা একমাত্র জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্র্চর দ্বারাই সম্ভব৷ আধ্যাত্মিক জগৎ অসীম, অনন্ত৷ উপযুক্ত শিক্ষা ও অনুশীলনের দ্বারা সেই অনন্ত জগতের সিংহদুয়ার মানুষের  সামনে উন্মুক্ত হয়৷ কঠোর সাধনা ও মানবসেবার দ্বারা অধ্যাত্ম জগতের চরম ও পরম লক্ষ্য ভূমাচৈতন্য সমাহিত হয়ে মানব অস্তিত্বের  সর্বপ্রকার  বন্ধনমুক্তি ঘটে৷

বর্তমানে ভারতবর্ষসহ বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে৷ ফলে  জাগতিক সম্পদ কুক্ষিগত করাই মানুষের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু জাগতিক  সম্পদ সীমিত হওয়ার কারণে মুষ্টিমেয় পুঁজিবাদী শিল্পপতি, ব্যবসায়ী এই সম্পদকে করায়ত্ত করার ফলে সমাজের অধিকাংশ মানুষ বঞ্চিত ও শোষিত হচ্ছে৷ পুঁজিপতিরা অর্থবলে বলীয়ান হয়ে দেশের অর্থনীতিকে তাদের  নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত করার জন্যে দেশের শাসকদের বাধ্য করে--- সে যে দলই শাসন ক্ষমতায় থাকুক না কেন৷ দেশের শিল্পনীতি, কৃষিনীতি, সাহিত্য, সংসৃকতি, সবকিছুকেই পুঁজিপতিরা তাদের অঙ্গুলিনির্দেশে চালনা করে৷ ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয় নি৷ শিক্ষা,কৃষি, স্বাস্থ্য, শিল্প, কর্মসংস্থান সবই পুঁজিবাদীদের করাল গ্রাসের কবলে নিষ্পেষিত হচ্ছে--- আর সাধারণ মানুষ শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে পরিত্রাহি আর্তনাদ করে চলেছে৷ একদিকে মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে সম্পদের পাহাড়, অপরদিকে অধিকাংশ মানুষের হাহাকার৷ পুঁজিবাদী শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে পশুরও অধম করে তুলেছে৷

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মানব সমাজকে পরিত্রাণের জন্যে প্রাউট প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ‘‘নব্যমানবতাবাদী শিক্ষাব্যবস্থা’’ প্রবর্তন করার নির্দেশনা দিয়েছেন৷ প্রাউট (প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব) এর নীতি অনুসারে সমগ্র বিশ্ব পরমপুরুষ পরমব্রহ্ম বিশ্বপিতার সৃষ্টি৷ বিশ্বের প্রতিটি জীব, জড়, উদ্ভিদ সবই পরমপিতার সন্তান ও বিশ্বের সকল সম্পদে সকল সৃষ্টির রয়েছে সমান অধিকার৷ সকলেই মিলে মিশে এই সম্পদকে ভোগ করবে৷ জীব,জড় উদ্ভিদ সমস্ত সৃষ্ট সত্তাকে পরমপুরুষের মূর্ত প্রকাশ হিসেবে গ্রহণ করে সকলের মঙ্গল সাধন করার ভাবনাকেই বলা হয় ‘‘নব্যমানবতাবাদ’’৷ এই নব্যমানবতাবাদী শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিটি সৃষ্টিকে অখণ্ড পরমব্রহ্মের অংশ হিসেবে দেখার শিক্ষাই প্রদান করা হয়৷ শিশুকাল থেকেই আধ্যাত্মিকতাভিত্তিক শিক্ষাগ্রহণের ফলে তাদের মধ্যে নৈতিকতা, সততা, প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা ইত্যাদি সদগুণের সমাবেশ ঘটে৷ এই শিশুরা পরিণত বয়সে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠে সমাজের সেবা ও কল্যাণে নিয়োজিত করবার প্রেরণা লাভ করে৷ প্রাউট প্রবক্তার ভাষায় ---‘‘ছাত্রগণের জ্ঞানার্জনের স্পৃহা জাগাতে হবে৷ শ্রদ্ধা, ভক্তি,শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে হবে--- আর শেখাতে হবে বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি৷ বৈজ্ঞানিক নিষ্ঠা যে ছাত্রের জেগেছে, কুসংস্কার তার মনে বাসা বাঁধতে পারবে না, ইজমের বাগজাল তাকে বিমুগ্দ করতে পারবে না৷ ভবিষ্যৎ জীবনে সদবিপ্র হবার যোগ্যতা সে সহজেই অর্জন করে নেবে৷

প্রাউটের দৃষ্টিতে আধ্যাত্মিকতায় প্রতিষ্ঠিত, কঠোর নীতিবাদী, সত্যনিষ্ঠ, আপোষহীন সংগ্রামী, বলিষ্ঠ চারিত্রিক দৃঢ়তাসম্পন্ন মানুষেরাই ‘সদবিপ্র’ নামে অভিহিত হবার যোগ্য৷ এই সদবিপ্রগণই প্রকৃত শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম৷ তাই  নব্যমানবতাবাদী শিক্ষাই মানুষকে ব্যষ্টিগত ও সমষ্টিগত সমস্ত বন্ধন থেকে মুক্ত করে ভূমাভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে৷ আর এই  শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা যা সার্বিক বিমুক্তির সন্ধান দেয় ও নব্যমানবতাবাদের প্রতিষ্ঠাকে ত্বরান্বিত  করে৷ মানবজীবন তথা সমাজজীবনের ভালো ও মন্দের মূলে রয়েছে মানুষের মন৷ অশিক্ষা-কুশিক্ষা মানুষের মনকে কুসংস্কার, ভাবজড়তা ও অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করে আর সুশিক্ষা মানুষের মনকে  শুদ্ধ ও পবিত্র করে ঈশ্বরমুখী ও কল্যাণমুখী করে তোলে৷ সুন্দর মনের অধিকারী মানুষেরাই জগতের সমস্ত শুভকর্ম সংঘটিত করেন৷ তাই বিশ্বের প্রতিটি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে নব্যমানবতাবাদী শিক্ষা প্রসারের জন্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে ও সমগ্র বিশ্বকে সর্ববিধ বন্ধন ও শোষণমুক্ত করার শুভকর্মে অনতিবিলম্বে অবশ্যই যোগদান করতে হবে ৷ নান্যপন্থা বিদ্যতে অয়নায়৷