শাকের বিভিন্ন গুণাগুণ

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

কলমী শাক স্নায়ুকে সুস্থ রাখে

জলের কলমী সাত্ত্বিক৷ এটি একাধারে পেটকে ঠাণ্ডা রাখে, স্নায়ুকে সুস্থ রাখে, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের মানসিক ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে৷ (সাধারণতঃ অল্প তেলে রান্না করে মাঝে মাঝে খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়৷) তবে ডাঙ্গার কলমী বা নালিতা শাক সর্বথা পরিত্যাজ্য৷

ডাঙ্গার কলমী মানসিক উন্নতির পক্ষে ক্ষতিকারক কারণ সে তামসিক৷ জলের কলমীকেই কলম্বী বলা হবে–ডাঙ্গার কলমীকে নয়৷ ডাঙ্গার কলমীকে বলা হয় নালিতা শাক (নালিকা শাক নয়–নালিতা শাক বা নালতে শাক)৷

অন্যান্য রোগে কলমী

কলমী শাক, লাউ, ছাঁচি কুমড়ো সুপ্তিস্খলন ও যৌন অক্ষমতা তথা ক্লীবতা রোগে অত্যন্ত সুপথ্য৷ ‘‘কলমী শাকের ডগা ছেঁচে প্রত্যহ প্রত্যুষে এক ছটাক মাত্রায় পান করলে সিফিলিস বা উপদংশ রোগের বীজ বিনষ্ট হয়৷’’২৭

বর্ষাকালে কলমী শাক খাওয়া উচিত নয় কেন?

বর্ষাকালে লোকে কলমী শাক খায় না৷ বর্ষাকালে কলমী শাকের পাতায় ও ডাঁটায় এক ধরনের কীট জন্মায়৷ লোককে যুক্তি দিয়ে বোঝালেও অনেক সময় তারা মানতে–বুঝতে চায় না৷ তাই ভয় দেখিয়ে বলা হয় সোজা রথের দিন থেকে উল্টো রথের দিন পর্যন্ত জগন্নাথের জ্বর হয়৷ তিনি কলমী পাতায় শুয়ে থাকেন৷ তাই ওই সময় কলমী শাক খেতে নেই–খেলে পাপ হয়৷

অন্যান্য রোগে কলমী ঃ কলমী শাক, লাউ, ছাঁচি কুমড়ো সুপ্তিস্খলন ও যৌন অক্ষমতা তথা ক্লীবতা রোগে অত্যন্ত সুপথ্য৷ ‘‘কলমী শাকের ডগা ছেঁচে প্রত্যহ প্রত্যুষে এক ছটাক মাত্রায় পান করলে সিফিলিস বা উপদংশ রোগের বীজ বিনষ্ট হয়৷’’

শুশনি শাক নিদ্রাহীনতা ব্যাধির মহৌষধ

শুশনি Insomnia বা নিদ্রাহীনতা ব্যাধিতে এ মহৌষধ৷ মৃৎপাত্রে শুশুনি শাক রান্না করলে তার গুণ আরো বেশী হয়৷

ঘিয়ে ভাজা শুশুনি শাক পাকস্থলির ক্ষত ও আন্ত্রিক ক্ষত রোগে (ডেওডেনাল আলসার ও গ্যাসট্রিক আলসার) ও চক্ষু রোগের উত্তম ঔষধ৷ শুশুনি শাকের পাতার রস দিয়ে তৈরী ঘৃত নিদ্রাহীনতায় ভাল কাজ দেয়৷

ব্রাহ্মী ও থানকুনি স্মরণশক্তি বাড়ায়

ব্রাহ্মী ও তারই প্রজাতিবিশেষ থানকুনি ও থুন্কুড়ি (ভোজপুরীতে পাতাল নিম) প্রভৃতি শাকেরা স্নায়ুরোগের পুষ্টি বিধায়ক, স্মরণশক্তি বর্দ্ধক ও শুক্ররোগের ঔষধ৷ ব্রাহ্মী ও থানকুনি উভয়েরই পাতা ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷ স্নায়ুদৌর্বল্য রোগেও এটা উত্তম ঔষধ৷ সকল প্রকারের স্নায়বিক রোগ ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা রোগে এর ব্যবহার আছে৷ ব্রাহ্মীঘৃত (অথবা ব্রাহ্মী সিরাপ) পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সহায়ক৷ ব্রাহ্মী ও থানকুনি উভয়েই লতানে উদ্ভিদ৷

পেটের অসুখে থানকুনি ঃ থানকুনি পাতার রস চীনী সহ খেলে পেটের অসুখে ভাল ফল দেয়৷

ছাত্র–ছাত্রাদের স্মরণ শক্তি বাড়ানোর উপায়

(১) শাঁখালুর রস প্রত্যহ পান করা (২)Repeatation প্রয়োগ অর্থাৎ মুখস্থ করা বিষয় লেখা বা অন্যকে শোণানো (৩) পাঠ্যবিষয় এমন ভাবে পড়া যাতে কানও শুণতে পায় (৪) অধীত (পাঠ্য বিষয় যা আয়ত্ত করা হয়েছে) বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ catch-word একটা ছন্দের মধ্যে সাজিয়ে নিয়ে মনে রাখা (৫) প্রাক্–প্রত্যুষে যখন বাহ্যিক পরিবেশ শান্ত থাকে তখন অবশ্যই পড়ার অভ্যাস তৈরী করা (৬) কয়েকটি আসন যেমন মৎস্যমুদ্রা, জ্ঞানাসন, শশঙ্গাসন অভ্যাস করা (আচার্য শেখাবেন) (৭) মাঝে মাঝে ব্রাহ্মী শাক, স্বল্প পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া (৮) গুরুধ্যান ৷

(শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের ‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’ থেকে)