শান্তি সংগ্রামের ফলশ্রুতি

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

৩রা জুলাই মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কালো দিন৷ ১৯৭৫ সালের এই দিনে ভারত সরকার আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘকে নিষিদ্ধ করেছিল৷ তার আগে ১৯৭১ সালের ২৯শে ডিসেম্বর কতকগুলি মিথ্যা মামলায় আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারকে (আধ্যাত্মিক জগতে যিনি শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী নামে পরিচিত) গ্রেপ্তার করে সি.বি.আই৷ সি.বি.আই বুঝেছিল তাঁর  বিরুদ্ধে আনিত এইসব মিথ্যামামলা আদালতে  টিকবে না৷ তাই ১৯৭৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর পটনা বাঁকিপুর সেন্ট্রাল জেলে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীকে তীব্র বিষ প্রয়োগ করা হয় হত্যার উদ্দেশ্যে৷ কিন্তু সি.বি.আই-এর সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়৷ ১৯৭৫ সালের ২৫শে জুন গণতন্ত্রের গলা টিপে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয় গোটা দেশে৷ ৩রা জুলাই আনন্দমার্গকে নিষিদ্ধ  করে শুরু হয়ে বিচারের প্রহসন৷ ১৯৭৭ সালে নির্বাচনে পরাজিত হয় ইন্দিরা গান্ধী, দেশ থেকে জরুরী অবস্থা উঠে যায়৷ ১৯৭৮ সালের ২রা আগষ্ট সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত করে সসম্মানে মুক্তি পান শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তি৷ ব্যর্থ হয় আনন্দমার্গের বিরুদ্ধে সব চক্রান্ত৷ কিন্তু  কেন আনন্দমার্গকে ধবংস করার চক্রান্ত

বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে ঘটে গেছে দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ , রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে গৃহযুদ্ধ, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ কালোবাজারী, দুর্নীতি গ্রাস করে ছিল গোটা বিশ্বকে৷ তবু মানবসভ্যতার ইতিহাসে বিংশ শতাব্দী একটি স্বর্ণজ্জ্বল অধ্যায় হিসাবে চিহ্ণিত থাকবে শুধুমাত্র একটি কারণে--- এই বিংশ শতাব্দীতে শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর আবির্ভাব ও আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠা হয়৷

আনন্দমার্গ একটি সামাজিক-আধ্যাত্মিক সংঘটন এর আধ্যাত্মিক দর্শন, সামাজিক-অর্থনৈতিকতত্ত্ব, নব্যমানবতাবাদের আদর্শ, সর্ব গ্লানিমুক্ত, সর্ব কলুষমুক্ত, সর্বশোষণমুক্ত এক নির্মল সমাজ ঘটনের যুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশনা দিয়েছে৷ যা দেখে কেঁপে  উঠেছে স্বৈরাচারী শাসক ও পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী শোষক৷ তারা বুঝেছিল আনন্দমার্গ প্রতিষ্ঠা পেলে তাদের সাধের শোষণের দূর্গ চুরমার হয়ে যাবে৷ তাই আনন্দমার্গকে ধবংস করার চক্রান্তে মেতে ওঠে অশুভ শক্তি৷ কিন্তু জেলের অভ্যন্তরে মার্গগুরু ও সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী, সন্ন্যাসিনী অনুগামীদের ও জেলের বাইরে লক্ষ লক্ষ অনুগামীদের সুদীর্ঘ সংগ্রাম পরাস্ত করে পাপশক্তিতে৷ আজ দুর্বার গতিতে আনন্দমার্গ এগিয়ে চলেছে বিশ্বের দেশে দেশে মানুষের ঘরে ঘরে৷

শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী বলেছেন ---

                              ‘‘মানুষ জাতের কল্যাণের ইতিহাস মানেই সংঘর্ষ ও ক্লেশ বরণের ইতিহাস৷ শান্তির ললিত বাণীও শান্তি ও নিরুদ্বেগের পরিবেশে প্রচারিত হতে পারে নি৷ দানবেরা শান্তি প্রচারকদের শান্তিতে কাজ করার সুযোগ দেয়নি৷ তাই আমি বলি, শান্তি সংগ্রামের ফলশ্রুতি৷’’