সময়োচিত কিছু কথা

লেখক
বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়

শুভ বিজয়ার প্রীতি, শুভেচ্ছা ও নমস্কার জানাই সকলকে৷ দুর্গা ও লক্ষ্মী পুজো ভালোয় ভালোয় শেষ হল৷ বাঙলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই৷ হাইকোর্টের নির্দেশ,চিকিৎসকদের পরামর্শ ও প্রশাসনের চেষ্টায় প্যাণ্ডেল মুখী মানুষের স্রোত এবার ছিল অনেক কম৷ পুজোয় এত কম সংখ্যক  লোক বাইরে বেরিয়েছে যা অন্ততঃ এর আগে কখনও দেখা যায় নি৷ অনেকে অনেক কারণ বলতেই পারেন, কিন্তু আমি এটাকে বলব বাঙলার মানুষ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন৷ এক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত বাঙালীই সচেতন ভাবেই পুজোয় ভিড় এড়িয়ে গেছেন৷ যারা বেরিয়েছিলেন তাদের জন্য সংক্রমণের গ্রাফ কতটা উধর্বমুখী হবে তা অচিরেই বোঝা যাবে৷ তবে এখনও পর্যন্ত তেমন উদ্বেগের খবর নেই বলে স্বাস্থ্য কর্র্তদের অভিমত৷

শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে বাঙলার মানুষ যে সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন, ঠিক এইভাবেই বাঙলা থেকে দার্জিলিংকে পৃথক করে গোর্খাল্যাণ্ড রাজ্য ঘটনের যে দাবী দীর্ঘদিন ধরে বারে বারে তোলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও এমনই সম্মিলিত প্রতিবাদ কাম্য৷ এ দাবি যারা তুলছে আশা করব বাঙলার কোনো রাজনৈতিক শক্তি তাকে গোপনে বা প্রকাশ্যে সমর্থন জানাবে না৷ গোর্খাল্যাণ্ডের দাবী যারা তুলছে সেই দাবী আদৌ যুক্তিযুক্ত কিনা তা পূর্বতন বা বর্তমান কোনো কেন্দ্রীয় সরকারই তলিয়ে দেখেন নি৷ ১৯৫০ সালের ভারত নেপাল চুক্তির পর্যালোচনা, গোর্খাদের পরিচিতি, দার্জিলিং জেলার আদি বাসিন্দা কারা এ সম্বন্ধে জানার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কমিশন ঘটন করুক৷ যে কমিশনে আইন বিশেষজ্ঞ ছাড়াও ইতিহাসবিদ, নৃতত্ত্ববিদ প্রমুখ  রাখতে হবে৷ আর এই কমিশনের দায়িত্ব হবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংস্থা, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত সংগ্রহ করা৷ এ প্রসঙ্গে  উল্লেখ্য প্রাউট আদর্শে বিশ্বাসী ‘‘আমরা বাঙালী’’ সংস্থা একমাত্র প্রথম থেকেই গোর্খা পার্বত্য পর্ষদ বা গোর্খাল্যাণ্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর বিরোধীতা করে আসছে৷ এব্যাপারে ঘটিত কমিশনের দায়িত্ব যেমন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য শোনা, তেমনি বিভিন্ন রাজনৈতিক  দলের পাশাপাশি আমরা বাঙালী সংস্থার মতামত ও শোনা৷ এর মধ্যে  দিয়ে হয়তো সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে৷

বাঙলা ভাগের যে গোপন খেলা বহুদিন ধরে চলে আসছে সেই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে কম্যুনিষ্ট চীনের মদতে বৃহত্তর নেপাল ঘটনের প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ বাঙালী বুদ্ধিজীবী গণ এব্যাপারে কেন নীরব  থাকছেন তা বোধগম্য নয়৷ এ অবস্থায় দলমত নির্বিশেষে বাঙালীকে সজাগ থাকতে হবে যাতে বাঙলা ভাগের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়, সেই সঙ্গে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষিত হয়৷