গত ৬ই ডিসেম্বর অমিতা সেনগুপ্ত তাঁর স্বামী ও পুত্র সহ গাড়ীতে নিউ মার্কেটে গিয়েছিলেন৷ মেট্রোন ষ্ট্রীটে তাঁর গাড়ীটি পার্ক করে তাঁরা মার্কেটের মধ্যে যান৷ কিছুক্ষণ পর তাঁদের ড্রাইভার কাঁদতে কাঁদতে ফোন করে বলেন, তাঁকে মারধোর করা হচ্ছে৷ তাঁরা তাড়াতাড়ি গাড়ীর কাছে আসেন৷ এসে জানতে পারেন , ওখানকার একটি যুবক ছেলে ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে এখানে গাড়ীটি কতক্ষণ থাকবে৷ ড্রাইভার বলেন, আমি বলতে পারছি না, গাড়ীর মালিক মার্কেটের মধ্যে গিয়েছেন, মিনিট ৪/৫ এর মধ্যেই এসে যাবেন৷ তখন ছেলেটি ড্রাইভারকে মারধোর করে৷ সবচেয়ে বড় কথা তাকে বলা হয় এখানে বাঙালীদের ছিঁড়ে ফেলা হবে, কুচি কুচি করে কেটে দেওয়া হবে৷ চল,চল,চল, বাঙালী শালা ভাগ এখান থেকে৷ সে মদ খেয়েছিল৷ শুধু সে নয়, আশপাশের যে দু-চারজন হকার ছিল তারাও কিন্তু বার বার করে এই কথাটি বলতে থাকে ‘এই বাঙালী চল-চল-চল’৷
তখন ওই ভদ্রমহিলা ছেলেটিকে ধরে বলেন, ‘তুমি তো অনেক বড় ‘দাদা’ হয়ে গেছ, নাও এখন মার৷’’ আমরা ১০০ ডায়াল করে পুলিশকে ফোন করি৷ পুলিশ বলে, আমরা লোক পাঠাচ্ছি৷ তখন জন অবাঙালী ভদ্রলোক বলেন, আপনারা ওকে ছেড়ে দিন৷’ আমরা দেখছি ব্যাপারটা৷ ভদ্রমহিলা তখন বললেন, ‘‘আপনারা কে’’? এই কথোপকথন যখন হচ্ছে, তখন আমাদের ড্রাইভারকে আবার ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যায় ও সেখানে তাকে রীতিমত বড় চাপাটি মারতে শুরু করে৷ অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়৷ আমার ছেলেকেও গালিগালাজ করা হয়, আর বলা হয়, তোমার মা কত বড় নেত্রী আমরা দেখব৷ তলপেটে গুলি চালিয়ে দেব৷ এখানে বাঙালীরা এলে তাদের ফিরতে দেওয়া হবে না, তাদের কেটে কুচি কুচি করে ফেলা হবে৷ এই হ’ল ঘটনা৷
এখন পশ্চিমবাঙলার বাঙালীদের কাছে ভদ্রমহিলার বক্তব্য, ভাবুন আপনারা, কলকাতায় দাঁড়িয়ে তারা বলছে, এখানে বাঙালীদের কুচি কুচি করা হবে৷ আমি জানি না , আমরা কীভাবে রাস্তাঘাটে বেরুব, কীভাবে চলব৷
ধন্যবাদ,১০০ ডায়েলকে৷ পুলিশ এসেছিলেন৷ তাঁরা মধ্যস্থতা করেন৷ আর থানা-পুলিশও করতে চাইনি৷ কারণ আমার ডাক্তার দেখানোর কাজ ছিল৷ আমি একটু পিছু হটি৷
কিন্তু পশ্চিমবাঙলার রাজধানী কলকাতার বুকে বাঙালীদের এই অবস্থা! একটু ভাববার মত৷ সব অবাঙালীদের ওপর দোষ দেওয়া হচ্ছে না ৷ কিন্তু এই ধরণের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বাঙালীদের প্রতিবাদে মুখর হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি৷