অসমে এন.আর.সি’কে কেন্দ্র করে যে কীভাবে বাঙালীদের মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে, কীভাবে বাঙালীদের ওপর চরম নির্যাতন নেমে এসেছে, তার দুটি নজির সম্প্রতি সামনে এসেছে৷
দুটিই ডিটেনসন ক্যাম্প থেকে অসুস্থ অবস্থায় হাতে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে রাখার ঘটনা৷ তাঁদের একজনকার নাম কৃষ্ণ সরকার৷ প্রৌঢ়৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ডি-ভোটার বলে নোটিশ পাঠায় ও তার ভিত্তিতে ২৯শে অক্টোবর তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে ডিটেনসন ক্যাম্পে পাঠায়৷ আদালত থেকে ডিটেনসন ক্যাম্পে পাঠানোর সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মির্র্জর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর গোয়ালপাড়া সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ সেখানে হৃদ্রোগী কৃষ্ণবাবুকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়৷
দ্বিতীয় ঘটনা হ’ল বঙাইগাঁওয়ের বাসিন্দা রতনচন্দ্র বিশ্বাস৷ তাঁর ঠাকুরদাদা বিরাজ বিশ্বাসের নাম ১৯৬৬ সালের বোটার তালিকায় ছিল৷ তাঁর ছেলে বিরাজচন্দ্র বিশ্বাস দেশের আইন মোতাবেক এফিডেবিট করেই ‘শীল’ ‘পদবী’ বদলিয়েছেন৷ অবশ্য তার এফিডেবিটের কাগজপত্র পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু বিরাজচন্দ্র বিশ্বাসের নামে গেরুয়াবাড়ীতে জমি কেনার দলিল আছে৷
এটাই আইনতঃ ভারতীয়ত্ব প্রমাণে যথেষ্ট৷ তাঁর ছেলে রতন বিশ্বাসকে বিদেশী ঘোষণা করে’ ডিটেনসন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেয়৷ তিনি অসুস্থ হলে তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে রাখা হয়৷ ভয়ঙ্কর জঙ্গী ছাড়া অন্য কোনো বন্দীকে এভাবে হাতকড়া পরানোর নিয়মও নেই৷ কিন্তু এক্ষেত্রে এক নিরীহ নির্র্দেষ প্রৌঢ় বাঙালীকে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে রাখা চরম মানবধিকার হরণের সামিল৷