বাঙলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টির চক্রান্ত নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতির প্রতিবাদ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

শিলচর ঃবাংলাদেশের কুমিল্লা শহরে দুর্গা পূজায় কথিত ‘কোরান শরীফ অবমাননা’র ঘটনার রেশ ধরে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে ও মন্দিরে হামলা-ভাংচুর ও হতাহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার  আর প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবী জানিয়েছে নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি, অসমের  কেন্দ্রীয় কমিটি৷ সংঘটনের পক্ষ থেকে সে দেশের বুদ্ধিজীবী, সচেতন নাগরিক, সমস্ত বিরোধী দল যেভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে  প্রতিবাদে সরব হয়েছেন এতে তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়৷ সি.আর.পি.সি.সি, অসমের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্র্তয় বলা হয় যে, ‘কুমিল্লা শহরের একটি পূজা মণ্ডপে রাতের আঁধারে  কারা কী উদ্দেশ্যে কোরান শরীফ রেখে গেছে, তা দ্রুততম সময়ে সে দেশের প্রশাসন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে পারত৷ কিন্তু ঘটনা পুলিশকে অবহিত করার পরও সাম্প্রদায়িক শক্তি সমবেত হয়ে বিভিন্ন মণ্ডপে ও মন্দিরে যে হামলা চালাতে পারল, তাতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়৷ এই ঘটনার পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে হামলা-ভাঙচূর প্রমাণ করে বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে৷ বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়ি ঘরে হামলা-ভাংচুর লুটপাট সংঘটিত হয়েছে৷ অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সরকারের দলীয় নেতাকর্মীদের ইন্ধনে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগ উঠলেও তাদের কোনো বিচার হয়নি৷

বিবৃতিতে এও বলা হয় যে, ‘‘বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার সহ সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার নির্মমভাবে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে৷ আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, তীব্র বেকার সমস্যা সহ জনজীবনে জ্বলন্ত সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থ সরকারগুলো জনগণের ক্ষোভকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিতভাবে দেশে দেশে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করছে৷ ভারতের বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু বিরোধী অবস্থান এদেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাব গড়ে তুলতে যেমন সাহায্য করছে ঠিক তেমনি বিভিন্ন দেশের মৌলবাদী শক্তিকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতেও সহায়তা করছে৷ ফলে উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে ও সংখ্যালঘুদের সম্প্রদায়ের জনগণ নারকীয় আক্রমণের শিকার হচ্ছেন৷

সি আর.পিসিসি অসমের পক্ষ থেকে এও বলা হয় যে এসকল মধ্যযুগীয় বর্বরতা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তার হোতা বিভিন্ন দেশের মৌলবাদীদের মদতপুষ্ট বর্তমান সরকারগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল মানুষ ও সংঘটনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন৷

সি আর পি সি সি, অসমের পক্ষ থেকে  বাংলাদেশের  কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় পূজামণ্ডপে ও মন্দিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেদেশের আওয়ামী লীগ সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোরালো দাবি জানানো হয়৷ পাশাপাশি ভারত সরকারকে আন্তর্জাতিক স্তরে চাপ তৈরি করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সে দেশের সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ ও সংখ্যালঘুদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান ও নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক অনুদান ও আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করতে দাবী জানানো হয় ও ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়৷ পাশাপাশি আমাদের দেশের মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো যাতে বাংলাদেশের ঘটনার সুযোগ নিয়ে উত্তেজনা ছড়াতে না পারে তা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোকে সুনিশ্চিত করতে সি আর পি সি সি, অসমের পক্ষ থেকে জোরালো দাবী জানানো হয়৷