চরম দারিদ্র্য, অন্নাভাব, বস্ত্রাভাব অশিক্ষার অন্ধকার, চিকিৎসার অভাব, বিপর্যস্ত সমাজ - প্রাউটই উত্তোরণের পথ

সংবাদদাতা
পত্রিকা প্রতিনিধি
সময়

অর্থনৈতিক দেউলিয়াপনা, সামাজিক অস্থিরতা, সাংস্কৃতিক অবক্ষয়, ধর্মীয় কুসংস্কারের আবর্তে পড়ে মানব সমাজ আজ দিশেহারা, বিপর্যস্ত৷ প্রকৃতির অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ এই পৃথিবী৷ বনজ, কৃষিজ, খনিজ, জলজ, ভেষজ---প্রকৃতির অফুরন্ত সম্পদে পরিপূর্ণ ভারতবর্ষ৷ শুধু ভারতবর্ষ কেন পৃথিবীর বহু অঞ্চলই মানুষের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় সবরকমের সম্পদেই ভরপুর৷ তবু কেন এই দারিদ্র্য? কেন এত অভাব অনটন? প্রকৃতির অঢেল আশীর্বাদে সম্পদের কোনও অভাব নেই৷ অভাব শুধু সদইচ্ছার, শুভবুদ্ধি, ও প্রাকৃতিক সম্পদের যথার্থ উপযোগ গ্রহণের জ্ঞানের অভাব৷ পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায়, কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় শোষণের জাল এমনভাবে বিস্তৃত যে এখানে শুভ ইচ্ছা, শুভবুদ্ধির কোনও মূল্য নেই৷ রাজনৈতিক নেতারা চাক বা না চাক দুর্নীতির জালে সে জড়াবেই৷ রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি বিষয়ে অসচেতন জনগণকে ইচ্ছার বিরুদ্ধেই রাজনীতির ঝাণ্ডা কাঁধে মিছিলে ছুটতে হবে৷

পুঁজিবাদের সর্বগ্রাসী ক্ষুধা, সম্পদের অপব্যবহার---অব্যবহার, দেশনেতাদের দুর্নীতি আজ দেশের অর্থনীতিকে দেউলিয়া অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছে৷ দারিদ্র্য জর্জরিত যুব সমাজকে বিপথে, কুপথে যেতে উৎসাহিত করতে চটুল রসের অশ্লীল, অসংসৃকতি পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শোষকের বড় হাতিয়ার৷ শিল্প, সংসৃকতি, অর্থনীতি, রাজনীতি শোষকের কালো হাতের স্পর্শে সমাজের সর্বস্তরেই আজ চরম অবক্ষয়৷

প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকে সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য, ভ্রান্ত জীবনধারা, ভ্রান্ত ধ্যান ধারণা, ভাবজড়তা, ব্যষ্টি জীবন ও সমষ্টি জীবনকে সামঞ্জস্যহীন করে দিয়েছে৷ তাই মানুষ শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই দেউলিয়া নয়, মানসিকতায়, সভ্যতা-সংসৃকতিতে বুদ্ধিতে, বোধিতে, মনীষায়---সব দিক থেকেই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে৷ তাই আজ সমাজে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে৷ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখতে সরকার নানা পরিকল্পনার কথা ফলাও করে প্রচার করছে৷ কিন্তু সবই ফাঁকা বুলি মাত্র৷ পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কি সরকার পক্ষ, কি বিরোধী পক্ষ সব দলই পুঁজিবাদীর হাতের পুতুল মাত্র৷ তাই বর্তমান সঙ্কট কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা দুর্যোগ নয়৷ এ হচ্ছে মানুষের তৈরী, আরও স্পষ্ট করে বললে শোষকের তৈরী করা কৃত্রিম সঙ্কট৷

এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার একটাই পথ---‘প্রাউট’৷ আধ্যাত্মিক নব্যমানবতাবাদ ভিত্তিক, সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্ব  প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব---প্রাউটের বাস্তবায়নই সমাজকে  বর্তমান সঙ্কট থেকে মুক্ত করতে পারে৷ প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকে আধ্যাত্মিক নব্যমানবতাবাদে প্রতিষ্ঠিত সদ্বিপ্র নেতৃত্ব ও ব্লকভিত্তিক বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সমাজকে এই বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে মুক্ত করা সম্ভব৷ এমনটাই মনে করেন প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ৷

‘সমাজের সার্বিক অবক্ষয় থেকে উত্তোরণের পথ---প্রাউট’ এই বার্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জেলা ও ব্লক স্তরের ব্যাপক প্রচার অভিযানে নেমেছে প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের নেতৃবৃন্দ৷ ইতোমনধ্যেই তারা হাওড়া, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে সেমিনার ও তত্ত্বসভা, ঘরোয়া সভার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করছেন৷ পার্শ্ববর্তী রাজ্য জেলা ও ব্লক স্তরেও চলছে প্রচার৷ ওই সব প্রচার অভিযানে থাকছেন প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের সেক্রেটারী জেনারেল আচার্য রবীশানন্দ অবধূত, সাংঘটনিক সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, আচার্য সত্যস্বরূপানন্দ অবধূত, আচার্য কৃষ্ণস্বরূপানন্দ অবধূত, আচার্য বিশ্বমিত্রানন্দ অবধূত ও আচার্য সর্বজ্ঞানানন্দ অবধূত প্রমুখ নেতৃবৃন্দ৷